Follow palashbiswaskl on Twitter

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity Number2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti Basu is dead

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti Devi were living

Saturday, May 3, 2014

নরেন্দ্র মোদী 16 মে থেকে ভারতবর্ষ থেকে 1947 এর পর আসা বাঙালদের বাক্স প্যঁটরা সমেত তাড়িয়ে দেবেন,সিপিএম কেন চুপ,তাঁরাও কি মোদীর সঙ্গে বাঙাল খেদাও অভিযানে,যেমন নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন প্রণয়ণে কংগ্রেস ও বামপন্থীরা বিজেপি সঙ্গে ছিলেন? বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশী? ভারতভাগের বলি সারা ভারতে পুনর্বাসিত বাঙালিরা বাংলাদেশী? সিপিএম কবে মুখ খুলবে? ভোটের পর?

নরেন্দ্র মোদী 16 মে থেকে ভারতবর্ষ থেকে 1947 এর পর আসা বাঙালদের বাক্স প্যঁটরা সমেত তাড়িয়ে দেবেন,সিপিএম কেন চুপ,তাঁরাও কি মোদীর সঙ্গে বাঙাল খেদাও অভিযানে,যেমন নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন প্রণয়ণে কংগ্রেস ও বামপন্থীরা বিজেপি সঙ্গে ছিলেন? বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশী?  ভারতভাগের বলি সারা ভারতে পুনর্বাসিত বাঙালিরা বাংলাদেশী?  সিপিএম কবে মুখ খুলবে?  ভোটের পর?


পলাশ বিশ্বাস

নরেন্দ্র মোদী 16 মে থেকে ভারতবর্ষ থেকে 1947 এর পর আসা বাঙালদের বাক্স প্যঁটরা সমেত তাড়িয়ে দেবেন,সিপিএম কেন চুপ,তাঁরাও কি মোদীর সঙ্গে বাঙাল খেদাও অভিযানে,যেমন নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন প্রণয়ণে কংগ্রেস ও বামপন্থীরা বিজেপি সঙ্গে ছিলেন? বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশী?  ভারতভাগের বলি সারা ভারতে পুনর্বাসিত বাঙালিরা বাংলাদেশী?  সিপিএম কবে মুখ খুলবে?  ভোটের পর?



মজার কথা হল আসামে মোদী হিন্দুদের ভারতে থাকা খাওয়ার আশ্বাস ভাতার ভাষায় দিয়েছেন এবং হিন্দু উদ্বাস্তুরা ভেবে নিয়েছেন মোদী মসলিম অনুপ্রবেশকারিদের তাড়াবেন!


দলে দলে উদ্বাস্তুরা পদ্মফুলে ভোট দিচ্ছেন সারা দেশে বাহালি বিদ্বেষী সঙঘ পরিবারের হিন্দু উদ্বাস্তু বিতাড়ন অভিযানের ইতিহাস ভুলে!

ষাটের আসামে বাঙাল খেদাও!

ত্রিপুরায় বাহালিদের বিরুদ্ধে আদিবাসিদের উস্কানি!

উত্তর প্রদেশে উত্তরাখন্ডে 1950 সালের বাঙালি পুনর্বাসিত উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব হরণ!

উড়ীষ্যায় হিন্দূ উদ্বাস্তু বিতাড়ন!

দফায় দফায় আসামে প্রতিনিয়ত দাঙা,আশির দশকে সঙঘ মদতে সহিংস আন্দোলন!

মুম্বাই ও সারা মহারাষ্ট্রে বিজেপি দোসর শিবসেনার বাঙালিবিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা!

দিল্লীতে ও সারা দেশে বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি!

সিপিএণ বামদল কংগ্রেস তৃণমুল সমর্থনে নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন!

আধার করপোরেট প্রকল্প!

তারপরও মোদী বলেছেন,বিশ্বাস করবেন?

শ্রীরামপুরের মোদীর সাম্প্রদায়িক বাঙালি বর্ণবিদ্বেষী বক্তব্যের বিরুদ্ধে সিপিএস এখনো একটি কথা বলেনি,কেন?

নরেন্দ্র মোদীকে সিপিএম বাংলার মাটিতে আক্রমণ করছে না কেন?

সিপিএম কি বাঙালদের বাংলা থেকে বিদায করার নমো অভিযানের সঙ্গী?

শ্রীরামপুরে গড়ে সমস্ত বাঙালকে বাক্স প্যাটরা বেঁধে বাংলাদেশ পাঠানোর ফতোয়া জারি করার আগে আসামে ভোটপ্রার্থী মোদী কিন্তু অন্যসুরে কথা বলেছেনঃ

এই প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করুন

Sun, 23 Feb, 2014 04:45:34 PM

হিন্দু বাংলাদেশী আধিবাসীদের ভারতে

থাকা খাওয়ার আশ্বাস নরেন্দ্র মোদীর

নতুন বার্তা ডেস্ক

রামনগর: বাংলাদেশী হিন্দু অধিবাসীদের এদেশে পাকা বাসস্থান দেয়ার আশ্বাস নরেন্দ্র মোদীর। ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশী উদবাস্তু ক্যাম্প সরিয়ে দেয়ারও আশ্বাসও দিয়েছেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।


আসামের রামনগরে শনিবার মোদী একটি প্রকাশ্য জনসভায় বলেন, "আমরা ক্ষমতায় এলেই বাংলাদেশী হিন্দু অধিবাসীদের ক্যাম্পগুলি সরিয়ে তাদের জন্য পাকা ঠিকানার ব্যবস্থা করা হবে।"


মোদী আরো বলেন, "অন্য দেশে নির্যাতনের শিকার হওয়া হিন্দুদের প্রতি আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে।" ভারতই তাদের ঠিকানা বলে মন্তব্য করেন মোদী। পাশাপাশি তার আরো অভিযোগ, বর্তমান সরকার তাদের সমস্যা আরো বাড়িয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আসাম বাংলাদেশীদের সবটা দেখবে, তেমনটা চাইছেন না মোদী। তিনি চান গোটা দেশ বাংলাদেশীদের থাকা খাওয়ার ভার নেবে।


পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু অধিবাসীদের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপায়ি। বাজপায়িয়ের মতো বাংলাদেশী অধিবাসীদের মন ছুঁতে চাইলেন মোদীও। তবে শুধু বাংলাদেশী হিন্দুদের কথা বলে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী মানসিকতাকে আরও উস্কে দিলেন বলে মোদীর সমালোচনা করেছে রাজনৈতিক মহল। – ওয়েবসাইট

শ্রীরামপুরের মোদীর সাম্প্রদায়িক বাঙালি বর্ণবিদ্বেষী বক্তব্যের বিরুদ্ধে সিপিএস এখনো একটি কথা বলেনি,কেন?

নরেন্দ্র মোদীকে সিপিএম বাংলার মাটিতে আক্রমণ করছে না কেন?

সিপিএম কি বাঙালদের বাংলা থেকে বিদায করার নমো অভিযানের সঙ্গী?

অথচ অন্যদিকে

বাংলাদেশীদের বিতাড়নের যে হুমকি দিয়েছেন তার প্লাটা জবাব দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয় নবান্নে সাংবাদিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে কালো দিন টেনে আনা হচ্ছে। কাউকে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভাবা হচ্ছে। যিনি দেশের ইতিহাস জানেন না, ভূগোল জানেন না! তিনি বলছেন, বাংলাদেশীদের বাক্সপেটরা নিয়ে ফিরে যেতে হবে। এমন অধিকার ওকে কে দিয়েছে? প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ঝগড়া করা সমীচীন কিনা সেই প্রশ্ন তুলে মমতা বলেছেন,  ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি, নেহরু-লিয়াকত চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সাল পর্যন্ত যারা এদেশে এসেছেন, তারা সবাই ভারতীয় নাগরিক। তারপরও কেউ বিপদে পড়ে এলে তাদের ঠেলে ফিরিয়ে দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটা নিয়ম আছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কোচবিহারেও অনেক বাংলাদেশী আছেন। তাতে কি হয়েছে! আসামের গোলমালের পরে অনেকে এ রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে। এটাই মানবিকতার ধর্ম। গত রোববারই কলকাতার পার্শ¦বর্তী শ্রীরামপুরে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে এসে মোদী বলেন, মমতাজি ভোটব্যাংকের দিকে তাকিয়ে এই রাজ্যে রাজনীতি শুরু করেছেন। বিহার, ওড়িশা থেকে এই রাজ্যে গরিব মানুষ কাজে এলে ওঁর রাগ হয়। তাদের পর মনে হয়। হেনস্থা হন তারা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে কেউ এলে উনি তাদের 'আদর' করে এই রাজ্যে রেখে  দেন। ১৯৪৭ সালের পরে যারা ভারতে এসেছেন, তারা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন! ১৬ই মে'র পরে তাদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে। মোদীর সমালোচনা করতে গিয়ে তাকে 'হরিদাস' সম্বোধন করে মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ভিন্ন ভাষাভাষী এবং ধর্মীয় সংগঠনের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে সংঘর্ষ বাঁধাতে চাইছেন মোদী। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, বাংলায় জাতপাতের রাজনীতি আনার চেষ্টা করবেন না! রাজনীতি করছেন করুন, কিন্তু এই ধরনের কথাবার্তা কেন? কোন ইতিহাস জানে না! তবে মোদীর বক্তব্যে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাক আছে। আমাদের এই অবস্থান বহু দিনের। শরণার্থীদের জন্য কিছুই বলেননি মোদী। তিনি বলেছেন, অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে। সম্প্রতি আসামে গিয়ে মোদী এ ব্যাপারে আরও স্পষ্ট করে তার মত জানিয়েছিলেন বলেও রাহুলবাবু উল্লেখ করেছেন। বিজেপি'র অভিযোগ, মোদীর কথাকে হাতিয়ার করে পূর্ববঙ্গের মানুষজনের ভাবাবেগ উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু মোদী আদৌ ওপার বাংলা থেকে সব মানুষকে এক করে কিছু বলেননি বলে তাদের দাবি।

নরেন্দ্র মোদীর হুমকির পরিণতি দেখুনঃ


Mohammad Mahdi Hassan

43 mins

Lets join the Indian Union !

ভারতের আসাম রাজ্যের কোকরাঝাড় ও বকশা জেলায় গত ২ দিনে উগ্রপন্থীদের সহিংস হামলায় ৩২ মুসলিম নিহত হয়েছেন। সহিংসতায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বকশা জেলায় মানস জাতীয় উদ্যানের কাছে বেকি নদীর তীর ঘেঁষা মুসলিম সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ৭০টি বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে উগ্রপন্থীরা।

Daily Manab Zamin | উগ্রপন্থীদের হামলায় নিহত ৩২, সংখ্যালঘুদের ৭০টি বাড়ি ছাই

ভারতের আসাম রাজ্যের কোকরাঝাড় ও বকশা জেলায় গত ২ দিনে উগ্রপন্থীদের সহিংস হামলায় ৩২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতায় গুরুতর আহত হয়েছে আরও ১৪ জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বকসা জেলায় মানস জাতীয় উদ্যানের কাছে বেকি নদীর তীর ঘেঁষা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ৭০…

MZAMIN.COM|BY JOINT COLLABORATION OF MANAB ZAMIN IT TEAM AND ZTECH COMMUNICATION(WWW.ZTECHBD.COM)

Like ·  · Share



1-2

ঋণ মকুব নয়, শিল্পায়নই আসল সমাধান

দেশে বিজেপি এখন জাতীয় বিকল্প। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেও প্রধান বিকল্প হয়ে দাঁড়াচ্ছে তারা। লোকসভা নির্বাচন অনেকটা প্র্যাকটিস ম্যাচ। এর পর আছে কলকাতা পুর নির্বাচন। তার পর বিধানসভা ভোট। এই দুই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ জয় করার পথে দাবার ঘুটি সাজাতে ব্যস্ত দল। যদিও এত দিন ধরে বিজেপি-র কাছে পশ্চিমবঙ্গের তেমন কোনও গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু সেই অবস্থা ক্রমেই পাল্টাচ্ছে। আমদাবাদে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বসে জয়ন্ত ঘোষালকে দেওয়া এক সবিস্তার সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বিজেপি-র সেই বদলে যাওয়া কৌশল ব্যাখ্যা করেছেন দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী।

http://www.anandabazar.com/


vote-logo

বাংলাদেশি নিয়ে আক্রমণে মমতা, নরম সুরে বিজেপি

নিজস্ব প্রতিবেদন

ভোট যত বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে, শরণার্থী ও অনুপ্রবেশ নিয়ে ক্রমশ সুর নরম করছে বিজেপি। উল্টো দিকে, বিজেপি মানুষে-মানুষে বিভাজনের চেষ্টা করছে বলে সুর চড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দিন কয়েক আগেই শ্রীরামপুরের সভায় নরেন্দ্র মোদী বলে গিয়েছিলেন, "১৯৪৭ সালের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন। ১৬ মে-র পরে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে।" শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে এক জনসভায় বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ কিন্তু বললেন, "কারও উপরে অত্যাচার হবে না। কিন্তু যাঁরা বিনা ভিসা-পাসপোর্টে এখানে এসেছেন, তাঁদের ওখানে (বাংলাদেশ) ফিরে যাওয়াই উচিত। আমরা তাঁদের চিহ্নিত করব।"

বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ থেকে চলে আসা শরণার্থী এবং অনুপ্রবেশকারীদের সে দেশে ফেরত পাঠানোর নীতি নিয়ে চিরকালই চলেছে বিজেপি। এনডিএ জমানায় দিল্লি-মুম্বইয়ে এ রকম কিছু লোককে পাকড়াও করাও হয়েছিল। যদিও এর মধ্যে প্রচ্ছন্ন ভাবে সাম্প্রদায়িক ভাগাভাগি রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলগুলির। এ দিন খড়্গপুরে মমতা বলেন, "কেউ কেউ চান, বাংলায় বাংলায়, হিন্দু-মুসলিমে ভাগাভাগি হয়ে যাক। আমি জানি, আপনারা বঙ্গভঙ্গ চান না।" মেদিনীপুরে তিনি বলেন, "আমার কাছে নির্দিষ্ট খবর রয়েছে, দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। আমরা দাঙ্গা লাগাব না। দাঙ্গা লাগানো আমার উদ্দেশ্য নয়।"

আগামী ১২ মে রানাঘাট, বনগাঁ বা বসিরহাটের মতো সীমান্ত লাগোয়া কেন্দ্রগুলিতে ভোট। এ দিন কেশিয়াড়িতে রাজনাথ অবশ্য দাবি করেন, "হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভেদাভেদ করার পার্টি বিজেপি নয়। বিজেপি এই রাজনীতি করে না। আমরা মানুষকে সুবিচার দিই। মুসলমানরা ভারতের যে রাজ্যেই থাকুন না কেন, সুরক্ষিত থাকবেন।" কিন্তু পাশাপাশি তিনি এ-ও জানাতে ভোলেননি, যে হিন্দুরা বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদেরই বিজেপি শরণার্থীর চোখে দেখে। রাজনাথের কথায়, "হিন্দুরা যাঁরা এসেছেন, তাঁরা শরণার্থীই। অত্যাচারের জন্যই তাঁরা এ দেশে চলে আসতে বাধ্য হন।" বারাসতে এক কর্মিসভায় বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অনন্তকুমারও বলেন, "বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরণার্থীরা আমাদের ভাই। জিগর কা টুকরা। তাঁদের আমরা নাগরিক সম্মান দেব। কিন্তু যাঁরা এ দেশে উৎপাত করবে তাঁদের আমরা অসম, বাংলা এবং ভারতের বিভিন্ন কোনা থেকে খুঁজে ফের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেব।" বৃহস্পতিবারই পুরুলিয়ার রায়বাঘিনী ময়দানে মমতা বলেছিলেন, "দিল্লি-বোম্বেতে কাজ করলে ওরা (বিজেপি) আগে বাংলার ছেলেদের ট্রেনে তুলে পাঠিয়ে দিত। ভুলে গিয়েছেন? নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার আগেই বলছে বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে পাঠিয়ে দেব।" এ দিন বারাসতের বিজেপি প্রার্থী, জাদুকর পিসি সরকার অবশ্য দাবি করেছেন, বিজেপি আসলে শরণার্থী-প্রেমী। তাঁর কথায়, "মোদীজি যে শরণার্থীদের ভালবাসেন তার বড় উদাহরণ আমি নিজেই। আমি বাংলাদেশে থেকে আসা শরণার্থী। উনি যে শরণার্থীদের কতটা ভালবাসেন তা আমাকে টিকিট দিয়েই প্রমাণ করে দিয়েছেন।"

বিজেপি সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়াচ্ছে বলে মমতা যখন সুর চড়াচ্ছেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রাদেশিকতার অভিযোগ এনেছে বিজেপি। শ্রীরামপুরে নরেন্দ্র মোদী কটাক্ষ করেছিলেন, "মমতাজি ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে রাজনীতি শুরু করেছেন। বিহার, ওড়িশা থেকে গরিব মানুষ এই রাজ্যে কাজে এলে ওঁর রাগ হয়। হেনস্থা হন তাঁরা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে কেউ এলে উনি তাঁদের 'আদর' করে এই রাজ্যে রেখে দেন।"

এ দিন খড়্গপুরে মমতা পাল্টা বলেন, "বলে কিনা বাঙালি-অবাঙালি ভাগ করে দাও। আমি কাউকে ভাগ করব না। সবাই আমার ভাই। ভাগ তারাই করে যাদের চোখ-মুখ-কান নেই।" তাঁর সংযোজন, "পেপার টাইগার আর রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মধ্যে পার্থক্য আছে। আমরা সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।"

http://www.anandabazar.com/state/%E0%A6%AC-%E0%A6%B2-%E0%A6%A6-%E0%A6%B6-%E0%A6%A8-%E0%A7%9F-%E0%A6%86%E0%A6%95-%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%A3-%E0%A6%AE%E0%A6%AE%E0%A6%A4-%E0%A6%A8%E0%A6%B0%E0%A6%AE-%E0%A6%B8-%E0%A6%B0-%E0%A6%AC-%E0%A6%9C-%E0%A6%AA-1.27276

vote-logo

তল্পি বাঁধতে বলা 'মোদীবাবু'র হাওয়াই ভাবনা বিরোধীদের

রাহুল রায়

টুঙ্গি 'বিওপি'।

আকাশভাঙা রোদ্দুরে ডাইনে-বাঁয়ে এলিয়ে পড়ে আছে বর্ডার রোড। রাস্তার গলা পিচে ব্যাঁকাত্যাড়া ছায়া ফেলে দেশ আগলাচ্ছে কাঁটাতারের বেড়া।

সারি সারি শিরীষের ছায়ায় বিএসএফের তন্দ্রাচ্ছন্ন আউটপোস্ট। উর্দির অনুশাসনে কি সীমান্তের লক্ষ্মণরেখা অটুট রাখা যায়!

এ পারের শামুখখোল ঝাঁক বেঁধে উড়ে যায় ও পারের শালুক-পদ্মের বিস্তীর্ণ জলায়। কাঁটাতারের সীমানা ভেঙে ও পারের কৌতূহল উড়ে আসে এ পারে "আপনাগো দ্যাশে কি এই বার পদ্ম ফুলের সরকার অইবো নাহি?"

জেলা কুষ্ঠিয়া, বাংলাদেশ। গ্রামের নাম উথলি। কাঁটাতারের ওপার থেকে আলম শেখের আর্তি "যে-ই আসুক, দ্যাখবেন কর্তা আমাগো সম্পক্কটা য্যানো ঠিকঠাক থাহে!"

হু হু লু বইছে। বাংলাদেশ সীমান্ত ছুঁয়ে বহিরগাছি, বগুলা, দর্শনার রাস্তায় গাছে গাছে বৈশাখের দুপুরে পতপত করে উড়ছে ফ্লেক্স হাস্যমুখ নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী।

পুঁটিমারি সীমান্তের কাছে স্তব্ধ আমবাগান। পুরনো শতরঞ্জির দু'প্রান্তে পাটের দড়ি বেঁধে গ্রামীণ হ্যামক। দোলনায় বসে পাঁচ মাসের মেয়েকে বুকে জড়িয়ে মণিমালা বিশ্বাস প্রশ্ন করেন, "আচ্ছা এই মোদীবাবু লোকটা কেমন গো, ভাল?"

নিস্তব্ধ দুপুরে ডুবে থাকা টুঙ্গির সেই গ্রাম থেকে প্রশ্নটা কুড়িয়ে নিয়ে এসেছিলাম। ভীমপুরের সুপ্রভাত বিশ্বাস এ বার 'মোদীবাবু'র দলেরই প্রার্থী। বলছেন, "তা মোদীবাবু কেমন মানুষ কী করে বোঝাই বলুন তো! এটুকু বলতে পারি, ওঁর জন্য আমাদের কাজ অনেকটা সহজ হয়ে গিয়েছে।"

ভাজনঘাট, নোনাগঞ্জ, মাজদিয়া মোদীবাবুকে কোনও দিন চাক্ষুষ করেনি। সীমান্তের এই হদ্দ জনপদগুলির উপরে তাঁর 'ভারত পরিক্রমা'র চপার অচিরে ছায়া ফেলবে, এমন সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তবু সীমান্তের গাঁ-গঞ্জে হোর্ডিং, ফ্লেক্স কিংবা প্রশস্ত কাটআউটে দিব্যি ঘরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।

বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর এই আটপৌরে জনপ্রীতিতেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন তিনি। অশোক চক্রবর্তী।

দেশ ভাগের যন্ত্রণা নিয়ে ১৯৫০ সালে রেলের জমিতে গড়ে ওঠা কুপার্স ক্যাম্পের বাস্তুহারা কলোনিতে তাঁর দরমার দেওয়াল আর টালির চালার বাড়িটা সদ্য পাকাপোক্ত করেছেন অশোকবাবু। সীমান্ত উজিয়ে আসা উদ্বাস্তু জনতার পাট্টার দাবিতে কুপার্সের মাটি কামড়ে দিনের পর দিন অনশন করেছেন এই সিপিএম নেতা। খোলা বারান্দায় বসে স্বগতোক্তির মতো তিনি আউড়ে চলেন, "চুপিসারে সীমান্ত পেরিয়ে এই কুপার্সের মাঠে ক্যাম্প গড়েছিলাম। রাতভর বৃষ্টিতে গাছতলায় ভিজতাম, স্বপ্ন দেখতাম একটু আশ্রয়ের। সেই কুর্পাসের ঘরে ঘরে এখন দুপুরে কান পেতে শুনুন, টিভিতে চলছে, 'সাস ভি কভি বহু থি'।"

দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে কুর্পাসের 'মন'টাও কি বদলে গিয়েছে?

শরণার্থী তকমা ঘোচেনি। বাস্তুহারারা তবু যেন শরণ নিয়েছেন বিজেপিরই। কোন বিজেপি? প্রচারে যারা বারবারই অনুপ্রবেশকারীদের তল্পি গোছানোর হুমকি দিয়েছে। এমনকী খোদ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীও। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে যে, বিজেপির হুমকির লক্ষ্য কি শুধুই অনুপ্রবেশকারীরা, নাকি সমস্ত উদ্বাস্তু? তার পরেও মোদীবাবু?

ঘর-গেরস্থালি ছেড়ে আসা বাস্তুহারারা কখনওই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের বাইরে অন্য কোনও পরিচয়পত্র পাননি। সীমান্তের মানুষজনের সেই ক্ষোভকেই এ বার 'টাকার জোরে' কিনছে 'কর্পোরেট বিজেপি' সমস্বরে এমনই অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। অশোকবাবুর আক্ষেপ, "শুধু কংগ্রেস-তৃণমূল নয়, এ বার তো আমাদের কর্মীদেরও টাকা দিয়ে কিনতে চাইছে বিজেপি। অনেকে ফাঁদে পা-ও দিচ্ছে। টাকার জোর কি কম কথা? আসলে কুপার্সের এই প্রজন্মের কাছে বামেদের সেই আন্দোলন এখন রূপকথার গল্প।"

বীরনগরের তস্য গলির মধ্যে অবশ্য কোনও 'রূপকথা' নেই। বরং আপাদমস্তক সাংসারিক টানাপোড়েন। মায়ের সঙ্গে রোড-শো-এ সামিল হবে সে-ও। বায়না জুড়েছে সিপিএম প্রার্থীর সাড়ে ছ'বছরের ছেলে।

মা, আমি রোড-শো'তে যাব।

--না বাবা রোদ লেগে যাবে।

না, আমি যা-বো-ও-ও!

—অমন করে না, জানো আমাদের গাড়ি ভেঙে দিতে পারে। তখন কী হবে? হলুদ স্যান্ডো গেঞ্জি। টুকটুকে লাল হাফ-প্যান্ট। হাওয়াই চটি। বাঁশের কঞ্চির মাথায় লাল পতাকাটা আছড়ে ফেলে পা দাপিয়ে নাছোড়বান্দা বালকের দাবি, "যাই না মা, কিচ্ছু হবে না।" 'ভাঙচুরের' চিত্রনাট্যে একেবারেই সায় নেই তার।

আড়ংঘাটা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা, স্নেহের আড়ালে তাঁর নিতান্তই পুঁচকে-পুত্রের সামনে যতই 'সন্ত্রাসের' ছায়াছবি তুলে ধরুন, তিনি নিজেও বিলক্ষণ জানেন, 'কিচ্ছু হবে না'। তবু, ছেলে ভোলাতে কিছু কিছু গাওনা গেয়ে রাখতে হয়। অর্চনা বিশ্বাস, সিপিএম প্রার্থী, তা জানেন। সংসার সামলে দিল্লি যাওয়ার জন্য কোমর বাঁধা অর্চনা ধরিয়ে দেন, "তিন বছর আগে, বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলাম। তখন তো ছেলে সবে সাড়ে তিন। তার ছোটটা হাঁটি হাঁটি পা-পা। আমার তো সাজানো বাগান নয় ভাই, সংসার সামলেই সব করতে হয়।"

বাগানটা অঙ্কের হিসেবে বাস্তবিকই সাজানো যাঁর, রানাঘাট বাস স্ট্যান্ডে চোখ ধাঁধানো রোড-শো শুরুর আগে তিনি অবশ্য বলছেন, "এমনটা তো আগে দেখিনি, একটু অস্বস্তি তো হচ্ছেই।" সে কী, কেন?

তাপস মণ্ডল। মোহনপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং রানাঘাট কেন্দ্রে শাসক দলের প্রার্থী বলছেন, "রাজনীতির প্রতি আগ্রহ ছিলই। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠন করেছি। তবে লোকসভায় লড়াইয়ের সঙ্গে ক্যাম্পাস-রাজনীতির তফাত তো আছেই।"

সাতটা বিধানসভার ছ'টাই তৃণমূলের দখলে। দল বদল করে শান্তিপুরের কংগ্রেস বিধায়ক অজয় দে শাসক দলে ভেড়ায় সেখানে অবশ্য পুনর্নির্বাচন। দলীয় কর্মীরা প্রত্যয়ী, "আরে বাবা ওটা তো নিয়মরক্ষার নির্বাচন। এই বাজারে তৃণমূল ছাড়া আর কেউ জিততে পারে?" কংগ্রেস বোর্ড গড়লেও গত কয়েক মাসে বীরনগর, কুপার্স এবং শান্তিপুরের পুরপ্রধানরা ভোল পাল্টে সদলবল নাও ভিড়িয়েছেন ঘাসফুলের ঘাটে। পঞ্চায়েত সমিতিতেও ফুটেছে একচ্ছত্র ঘাসফুল। তা হলে অস্বস্তি কীসের?

তেরঙা অজস্র বেলুন, খান পনেরো মিনিডর ট্রাক, হলুদ ধুতি-গেঞ্জি পরা দুদ্দাড় আদিবাসী নাচ সামনে রেখে ঝলমলে হুডখোলা জিপে উঠেই চশমার কাচ মুছছেন তাপসবাবু। দলীয় কর্মী খেই ধরিয়ে দেন, "দাদা জোড়হাত...।" ঠোঁটে একটা হাসি ঝুলিয়ে বুকের কাছে হাত জড়ো করেন তাপস মণ্ডল। পিছনে, সিন্থেসাইজার সুর ধরে, "ভয় নেই মা, আমরা প্রতিবাদ করতে জানি...।"

আর 'তিনি'? গ্রাম-গঞ্জ, আবাদি মাঠ, কচুরিপানায় আচ্ছন্ন জলাজমি, তারকাঁটায় আড়াআড়ি ছিন্ন সীমান্ত ছুঁয়ে থাকা রানাঘাট কেন্দ্রের সঙ্গে যিনি ওতপ্রোত ভাবে রয়েছেন, নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর সিংহ বলছেন, "সীমান্তের এই জেলায় দলটাকে বুক দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছি ভাই। কিছু তো ফেরত পাবই! আমি ছেলেদের বলেছি, ভয় নেই। রাস্তায় নেমে কাজ কর, প্রার্থী প্রতাপকান্তি রায়ের পাশে থাক। আমি আছি।"

জাতীয় সড়কের কোলেই তাঁর দোতলা ঠিকানায় কোণের ঘরে জানলার পাশে বসে আছেন শঙ্কর। নাগাড়ে বেজে চলেছে মোবাইল। বলছেন, "ক্ষমতায় থাকা মানেই কি শক্তি প্রয়োগ করতে হবে? মারধর করতে হবে? সারাদিন ফোন আসছে, ছেলেরা মার খাচ্ছে তবু মাঠ ছাড়ছে না।" তাঁর অনুমান, শান্তিপুরের মতোই বীরনগর কিংবা কুপার্সেও পুরপ্রধানদের 'ডিগবাজি' ভাল চোখে দেখেননি স্থানীয় মানুষ। নির্বাচনে তাঁরা 'কড়া' উত্তর দেবেন। আর বিজেপি? কিছুক্ষণ চুপ করে থাকেন শঙ্কর। তারপর বলেন, "বলতে খারাপ লাগলেও, বাস্তব এটাই, সীমান্ত এলাকায় বিজেপি'র একটা হাওয়াটা বইছে।"

সে হাওয়ায় কাঁটাতার উজিয়ে পাখিরা দেশ বদল করে।

সীমান্তের রং-ও কি বদলে যায়?


http://www.anandabazar.com/district/nodiamurshidabbad/%E0%A6%A4%E0%A6%B2-%E0%A6%AA-%E0%A6%AC-%E0%A6%A7%E0%A6%A4-%E0%A6%AC%E0%A6%B2-%E0%A6%AE-%E0%A6%A6-%E0%A6%AC-%E0%A6%AC-%E0%A6%B0-%E0%A6%B9-%E0%A6%93%E0%A7%9F-%E0%A6%87-%E0%A6%AD-%E0%A6%AC%E0%A6%A8-%E0%A6%AC-%E0%A6%B0-%E0%A6%A7-%E0%A6%A6-%E0%A6%B0-1.27245


ঋণ মকুব নয়, শিল্পায়নই আসল সমাধান

জয়ন্ত ঘোষাল

আমদাবাদ , ৩ মে, ২০১৪,

আমদাবাদ , ৩ মে, ২০১৪, ০৩:৩৩:১০

e e e print

1-2

দেশে বিজেপি এখন জাতীয় বিকল্প। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেও প্রধান বিকল্প হয়ে দাঁড়াচ্ছে তারা। লোকসভা নির্বাচন অনেকটা প্র্যাকটিস ম্যাচ। এর পর আছে কলকাতা পুর নির্বাচন। তার পর বিধানসভা ভোট। এই দুই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ জয় করার পথে দাবার ঘুটি সাজাতে ব্যস্ত দল। (যে কারণে নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই তিন বার এসেছেন রাজ্যে। আসবেন আরও দু'দফা) যদিও এত দিন ধরে বিজেপি-র কাছে পশ্চিমবঙ্গের তেমন কোনও গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু সেই অবস্থা ক্রমেই পাল্টাচ্ছে।

আমদাবাদে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বসে আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া এক সবিস্তার সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বিজেপি-র সেই বদলে যাওয়া কৌশল ব্যাখ্যা করেছেন দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। আশা করছেন, পশ্চিমবঙ্গে 'মিরাক্ল' হবে। এবং তৃণমূলের নৌকা ডুববে।

তবে এত সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ এবং তৃণমূলকে আলাদা করে দেখতে আগ্রহী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে আর্থিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা তিনি করবেন। রাজ্যের ঋণ মকুব করবেন কি না, সেটা সরাসরি বলতে এখনও নারাজ। তবে জট ছাড়াতে 'সব রকম' সাহায্য করবেন। নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য, ঋণ মকুব নয়, শিল্পায়নই রাজ্যের আর্থিক সমস্যার আসল সমাধান। মোদী বলেছেন, টাটাদের ছোট গাড়ির কারখানা পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে গুজরাতে আসায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি খুশি হয়েছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রী হলে সিঙ্গুরের সঙ্কট মোচনে কেন্দ্র মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে পারে, এমন ভাবনা তাঁর রয়েছে।

বামেদের জন্যই রাজ্যের বারোটা বেজেছে, এমনটাই মোদী মনে করেন। তারা এত দিন ধরে খালি বলে এসেছে, 'নেহি চলেগা, নেহি চলেগা'। পশ্চিমবঙ্গে তাই কিছুই চলে না। দেশের পূর্বাংশ দুর্বল, আর পশ্চিমাংশ সবল। দেশ শক্তিশালী হবে কী করে— প্রশ্ন মোদীর। তাঁর সমাধান, "উন্নয়নের জন্য চাই শিল্পায়ন। বড় শিল্প, ভারী শিল্প। তার থেকেই চাকরি হবে। এবং সেটাই পশ্চিমবঙ্গের নকশা পাল্টে দিতে পারে।" কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর সাবধানবাণী: "শিল্পায়ন মানে কৃষকদের উপরে স্টিম রোলার চালানো নয়। শিল্প এবং কৃষির মধ্যে গোলমাল বাধিয়েছিল সিপিএম। আসলে একটি আর একটির পরিপূরক, বলেছেন মোদী।

হরিদাস পাল কে বলুন তো!

জয়ন্ত ঘোষাল: মোদ্দা কথা নিয়ে আরম্ভ করি। চিটফান্ড?

নরেন্দ্র মোদী: (অট্টহাস্য) নাথিং পার্সোনাল। মমতা সম্পর্কে কোনও ব্যক্তিগত বিরূপতা নেই। কিন্তু সারদার দুর্নীতি নিয়ে আজ ঘরে ঘরে প্রশ্ন। মাত্র তিন বছর ক্ষমতায় থাকার পর কেন এত অভিযোগ? মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এ সব প্রশ্নের জবাব তো দিতেই হবে। তা না করে উনি রেগে যাচ্ছেন। প্রশ্ন তোলা, বিশেষত ভোটের সময় প্রতিপক্ষ তো প্রশ্ন তুলবেই। এটা তো স্বাভাবিক। বলা হয়েছিল আমি নাকি আদানিকে সুযোগ সুবিধা দিয়েছি। এই অভিযোগ শুনে আমি কি কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ পাঠাব? আমি তা করিনি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি অভিযোগের জবাব দিয়েছি। দুধ কা দুধ, পানি কা পানি। এখন মানুষ জেনে গিয়েছে, সত্য কী।

ছবির দাম। কতটা দুধ, কতটা পানি?

মানে...

ছবি বিক্রি নিয়ে কি আপনি ভুল তথ্য দিয়েছেন?

হতেই পারেন মমতা এক জন বড় শিল্পী। কিন্তু মানুষেরও তো জানতে চাওয়ার অধিকার আছে। অত টাকা দিয়ে ওই ছবি কে কিনলেন? সেটাই শুধু জানতে চেয়েছিলাম। জবাব কিন্তু আজও পাইনি। এক কোটি না পাঁচ কোটি— কত টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেটা তো উনিই বলতে পারবেন। তা কোন ছবি কত টাকায় এবং কারা কিনলেন তা জানতে চাওয়ার কোনও অধিকার থাকবে না? উনি রেগে যাচ্ছেন, কিন্তু জবাব দিচ্ছেন না।

রাহুল সিংহ শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন...

দাবি যথার্থ। সত্য উন্মোচিত হোক।

আগে কিন্তু আপনিই মমতার প্রশংসা করতেন। বলেছিলেন, মায়াবতী-মুলায়ম সিবিআই নিয়ে আপস করেন। মমতা করেন না। বলেছিলেন, রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে তিনি সংগ্রামী।

এ কথা তো আজও বলছি। রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে মমতা যে ভাবে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করেছেন সেটা অভিনন্দনযোগ্য। দেখুন কোনও এক ব্যক্তির মূল্যায়ন যখন করবেন, তখন হয় তিনি ভাল, নয় তিনি খারাপ— এ ভাবে করেন কেন? কালো ও সাদার মধ্যে ধূসর রং থাকে।

দুষ্টু লোকেরা বলে, আপনি ভেবেছিলেন মমতা এনডিএ-তে যোগ দেবেন। এখন বুঝেছেন তিনি আসবেন না। তাই অবস্থান পরিবর্তন।

না, তা নয়। আমি কোনও দিনই আশা করিনি যে উনি এনডিএ-তে যোগ দেবেন। আর ভোটের সময় বিজেপি তার নিজের জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে চাইবে, এটাই তো স্বাভাবিক। তাই ভোটের আগে শাসক দলের বিরুদ্ধে মুখে কুলুপ এঁটে থাকব, এটা কি যুদ্ধের কৌশল হতে পারে?

মমতা-বিরোধিতা করায় কি সিপিএমের লাভ হবে না? বিজেপি ভোট পাবে, কিন্তু আসন পাবে না।

৩৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে সিপিএম রাজ্যকে রসাতলে পাঠিয়েছে। কংগ্রেস অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছে। সারা দেশে বিজেপি এখন জাতীয় বিকল্প। পশ্চিমবঙ্গেও প্রধান বিকল্প হয়ে দাঁড়াচ্ছে বিজেপি। বিজেপি তার নিজের লক্ষ্যে এগোবে, সেটাই কি স্বাভাবিক নয়? দু'বছর পর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আছে কলকাতা পুর নির্বাচন। আর তো ক'টা দিন। দেখবেন পশ্চিমবঙ্গেও 'মিরাক্ল' হবে। পশ্চিমবঙ্গে  তৃণমূলের  নৌকাও  এ বার ডুবছে।

আপনাকে ওঁরা 'ঘাতক' বলেছেন।

এ প্রশ্নের জবাব আর কী দেব? এটা একটা মাইন্ডসেট। কিছু লোক মনে করে, এ সব বলে বোধহয় কোনও একটি সম্প্রদায়ের ভোট পেতে সুবিধা হয়। আমি তো সেই ২০০২ সাল থেকে এই অপবাদ শুনে আসছি।   আর গুজরাতের সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরাও আমাকে ভোট দিচ্ছেন।

উন্নয়ন...

হ্যাঁ। আসলে উন্নয়নের প্রশ্নে জবাব দিতে না পেরে, দুর্নীতির প্রশ্নকে লুকোতে এটা হল সহজতম রাস্তা। যখন আক্রমণ হল আত্মরক্ষার উপায়, তখন তার কোনও জবাব নেই।

কিন্তু...

আগে আপনি একটা কথা বলুন। এই হরিদাস পাল ব্যাপারটা কী?

হরিদাস পাল?

দেখলাম আমাকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, হরিদাস। কেউ বললেন, হরিদাস পাল। হরিদাস তো একটা লোকের নাম।

এটা আসলে একটা কল্পিত নাম। যে কোনও লোকেরই নাম হতে পারে।

তা হলে হরিদাস পালের মতো আমিও একটা সাধারণ মানুষ।

হরিদাস পাল মানে উনি বলতে চেয়েছেন, এক নামগোত্রহীন ব্যক্তি। অর্থাৎ সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। কংগ্রেস দলের মতো সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক।

(হেসে) আমি কিন্তু মমতাকে কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। এখনও করছি না। উন্নয়নের প্রশ্নে সহযোগিতার হাত বাড়াব। বামেরা শুধু বলে এসেছেন, 'নেহি চলেগা', 'নেহি চলেগা'। ফলে রাজ্যের বারোটা বেজেছে। এক সময় কলকাতা ছিল রাজধানী। ঊনবিংশ শতকে রেনেসাঁসের উৎস। রাজধানী এখন দিল্লিতে। কলকাতা থেকে পুঁজি বিদায় নিয়েছে। অতীতে বামেরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়েছে। বঞ্চনার    ধুয়ো তুলেছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীও। আমরা কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে  সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।

ঋণ মকুব করে দেবেন?

আগে আমাকে ভাল করে বুঝতে হবে। এটুকু আপাতত বলতে পারি, জট ছাড়াতে আমি সব রকম সাহায্য করব। তবে ঋণ মকুব সমাধান, না শিল্পায়নই আসল সমাধান— এ সব নিয়ে রাজ্য ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অনেক কথা বলতে হবে। গাড়ির কারখানা সিঙ্গুর থেকে গুজরাতে আসায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন ভাবছি সিঙ্গুরের সঙ্কট মোচনে কেন্দ্র মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে।

ওড়িশা...

দক্ষিণ কোরিয়া চাইলেও ওড়িশার পস্কোর জট ছাড়ানো যাচ্ছে না। রাজ্যের প্রকল্প হলেও শিল্পায়ন এবং উন্নয়নের স্বার্থে মনমোহন সিংহের উচিত ছিল, সমাধানের জন্য সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া। এটি তাঁরা করেননি।

আপনার কোনও সুনির্দিষ্ট প্ল্যান?

নিশ্চয়ই। যেমন হিমালয়ের রাজ্যগুলির জন্য একটি পরিকল্পনার কথা ভাবা হচ্ছে, তেমনই পূর্বাঞ্চলের অবহেলিত রাজ্যগুলির জন্যও বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। দেখুন, মানুষের যদি ডান হাত শক্তিশালী অথচ বাঁ হাতটি দুর্বল হয়, তা হলে তিনি এক জন সমর্থ মানুষ হতে পারেন না। দেশটিও সে রকম। পূর্বাঞ্চল দুর্বল, পশ্চিমাঞ্চল সবল। ভারত শক্তিশালী হবে কী করে? উন্নয়নের জন্য চাই শিল্পায়ন। বড় শিল্প, ভারী শিল্প, তার থেকেই চাকরি হবে। এবং সেটাই রাজ্যের নকশা বদলে দিতে পারে। ভর্তুকি পুরনো সঙ্কট মোচন করতে পারে। সমস্যার সমাধান হতে পারে একমাত্র উৎপাদনের মাধ্যমে। তবে শিল্পায়ন মানে কৃষকদের উপর স্টিম রোলার চালানো নয়। শিল্প এবং কৃষির মধ্যে গোলমাল বাধিয়েছিল সিপিএম। পশ্চিমবঙ্গ এখনও তার ভয় থেকে মুক্ত হতে পারেনি। আসলে একটি আর একটির পরিপূরক।

অন্য প্রসঙ্গ। দলের দাবি এবং সরকারের দাবি— এর মধ্যে সামঞ্জস্য আসবে কী করে?

দলতন্ত্র অনেক সময় মেধাতন্ত্রকে শেষ করে দেয়। বিজেপি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। সরকার পরিচালনায় সেই দলের ভূমিকা থাকবে। কিন্তু দলতন্ত্র থাকবে না। দেশ চালাবে সংবিধান।

শুধু তৃণমূল নয়, আপনার দলেও তো অনেকে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। গেরুয়া অনুব্রত মণ্ডল কি নেই?

আমি কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। যাঁরা উল্টোপাল্টা কথা বলছেন, যদি তা অবাঞ্ছিত হয়, তবে আমি সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ভুল স্বীকার করতে বলেছি। নির্বাচন কমিশন যা নির্দেশ দিয়েছে, সেটা সব সময় মান্য করা হয়েছে। এমনকী অমিত শাহও কমিশনের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।

অনুপ্রবেশকারীদের হুমকি দিয়েছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চান না?

বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু পৃথিবীর কোনও সভ্য দেশ অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাঙ্ক বানায় না। দীর্ঘদিনের কংগ্রেস শাসনে এটি হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী শুধু রাজ্য নয়, দেশের অর্থনীতিকে বিপন্ন করে। অনুপ্রবেশকে মেনে নেওয়ার পূর্ব শর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতে হবে কেন? বাংলাদেশের আর্থিক উন্নয়নে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক, সব দিক থেকে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। তা বলে অনুপ্রবেশকারীদের, যাঁরা বিদেশি নাগরিক তাঁদের রেশন কার্ড দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সেটি হতে দেওয়া চলবে না।

পাকিস্তান?

পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। প্রতিটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গেই ভারত সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু সুসম্পর্কের ভিত্তি বাস্তবকে অস্বীকার করে আত্মসমর্পণ নয়। বাজপেয়ী সরকারের লাহৌর বাস কূটনীতির ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু দাউদ ইব্রাহিমকে নিয়েও প্রশ্ন তুলতে হবে।

http://www.anandabazar.com/national/%E0%A6%8B%E0%A6%A3-%E0%A6%AE%E0%A6%95-%E0%A6%AC-%E0%A6%A8%E0%A7%9F-%E0%A6%B6-%E0%A6%B2-%E0%A6%AA-%E0%A7%9F%E0%A6%A8%E0%A6%87-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%B2-%E0%A6%B8%E0%A6%AE-%E0%A6%A7-%E0%A6%A8-1.27300


No comments: