Follow palashbiswaskl on Twitter

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity Number2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti Basu is dead

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti Devi were living

Monday, November 24, 2014

Nasreen Taslima:মানুষ শুধু লোভী হয়নি, হিংস্রও হয়েছে অনেক। এই সেদিনও নবীজির ভক্তরা বলতেন, ‘আল্লাহর পেয়ারা নবী মানুষকে ভালোবাসতেন, কাউকে ঘৃণা করতেন না, কারও অনিষ্ট করতেন না। বিধর্মীদের মারার কথা কখনও তিনি বলেননি। তিনি বরং বলেছেন, তোমার ধর্ম তোমার কাছে, আমার ধর্ম আমার কাছে।‘


তসলিমা নাসরিন

ইন্দোনেশিয়ায় মিস মুসলিমা সুন্দরী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুখের সাজগোজ মিস ওয়ার্ল্ড বা মিস ইউনিভির্সের মেয়েরা যেমন করে, ঠিক সেরকমই করে মিস মুসলিমা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী মেয়েরা। পার্থক্য শুধু একটিই, এই মিস মুসলিমা প্রতিযোগিতাটি সংকীর্ণ মানসিকতার। মিস ওয়ার্ল্ড বা মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় মেয়েরা যে কোনও দেশের, যে কোনও ধর্মের, যে কোনও বিশ্বাসের হতে পারে, কিন্তু মিস মুসলিমা প্রতিযোগিতার মেয়েদের শুধু মুসলিম ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে, শুধু তাই নয়, তাদের হিজাবি হতে হবে। শরীর তো ঢাকতেই হবে, মাথাও ঢাকতে হবে। হিজাব পরা মেয়েদের মধ্যে সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা! হিজাব পরার উদ্দেশ্যই কিন্তু, ইসলামের মতে, কোনওভাবে কোনও ফাঁক ফোকর দিয়ে শরীরের কোনও সৌন্দর্য যেন দেখা না যায়। কোরান হাদিসে মেয়েদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করার কথা খুব জোর দিয়ে বলা হয়েছে। এ কারণেই মুসলিম মৌলবাদীরা চিরকালই সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে চেঁচিয়েছে। কিন্তু নিজেদের মুসলিমা সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিরোধিতা কি মৌলবাদীরা করেছে আদৌ? আমি অন্তত শুনিনি। যে মুসলিমারা নানা রঙে মুখ চোখ রাঙিয়ে জগতের সমস্ত পুরুষের সামনে নির্লজ্জের মতো নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করছে, তারা নিশ্চিতই আল্লাহতায়ালার তো বটেই, পয়গম্বর মুহম্মদেরও অবাধ্য হচ্ছে। এই সেদিন নতুন এক আইন জারি হলো সৌদি আরবে, আইনটি এরকম: সুন্দর চোখের মেয়েদের এখন থেকে আর চোখ খুলে বাইরে চলাফেরা করা চলবে না, তাদের চোখগুলোকে অবশ্য অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে। প্রশ্ন জাগতে পারে সুন্দর চোখ কেন ঢেকে রাখতে হবে। আমরা তো অসুন্দরকে আড়াল করে সুন্দরকেই প্রকাশ করি। উত্তরও সৌদি আরবের আইন দিয়ে দিয়েছে: সুন্দর চোখ দেখলে পুরুষের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পুরুষ যেহেতু নিজেদের যৌন উত্তেজনা সংযত করার পদ্ধতি সম্পর্কে খুব একটা ওয়াকিবহাল নয়, অগত্যা মেয়েদেরই চুল চোখ মুখ থেকে শুরু করে পায়ের নখ অবধি আড়াল করে রাখতে হয়, যেন পুরুষেরা ওসব দেখে কোনও কেলেংকারি ঘটিয়ে ফেলতে না পারে। মিস মুসলিমা সুন্দরী প্রতিযোগীদের চক্ষু কিন্তু খোলা। কোমর, বুক, নিতম্বের ঢেউগুলোও স্পষ্ট। এতে পুরুষের যৌন উত্তেজনা কী পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে, এবং কীরকম ধর্ষণেচ্ছা পুরুষদের অস্থির করবে তা যে কারও পক্ষেই অনুমান করা সম্ভব।

মুসলিমা সুন্দরীদের দেখে আমার ধারণা হচ্ছে পৃথিবীতে আনন্দময় যা কিছু আছে, কোনও কিছু থেকে মুসলিম ধর্মগোষ্ঠী বঞ্চিত হতে চায় না। কয়েক বছর আগে ইওরোপে বসবাসকারী কিছু মুসলিম যখন ইওরোপের অমুসলিমদের গালি দিচ্ছিলো আর আরবের মুসলিমদের সুখ্যাতি করছিলো, জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'অমুসলিমদের দেশে তোমরা কেন থাকছো? ইচ্ছে করলেই তো চলে যেতে পারো আরবদেশে, ইসলামের দেশে,পবিত্র দেশে!' ওরা শুনলো, কিন্তু আরবদেশে পাড়ি দেওয়ার কোনও ইচ্ছে প্রকাশ করলো না। আরব দেশকে যতই পবিত্র বলে মনে করুক, ওই দেশে বাস করার ইচ্ছে খুব বেশি মুসলিমের নেই। আটজন বাংলাদেশি মুসলিম ছেলের মুণ্ডু কী করে সৌদি সরকার এক এক কোপে উড়িয়ে দিয়েছে সেদিন, ইউটিউব ঘাঁটলেই যে কেউ দেখতে পারে। আসলে, বিধর্মীদের দেশে যে মানবাধিকার মুসলিমরা ভোগ করতে পারে, তার ছিঁটেফোঁটাও পারে না মুসলিমদের কোনও দেশে, বা আরবদেশে। ইওরোপ আর আমেরিকার গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে অগণতান্ত্রিক শরিয়া আইনের প্রচার করে মুসলিমরা।

আজ টুইটার, ফেইসবুকে মুসলিম মৌলবাদীরা তাদের ধর্মের অবাধ প্রচার করে চলেছে। আজ মুসলিম সন্ত্রাসীরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বিশ্ব জুড়ে তাদের সন্ত্রাস চালানোর জন্য। ধর্মান্ধ মুসলিমদের হাতে হাতে বিধর্মীদের আবিস্কৃত মোবাইল প্রযুক্তি। বিধর্মী বা অধার্মিকরা আবিস্কার করছে নতুন নতুন প্রযুক্তি, তাদের আবিস্কৃত সেইসব প্রযুক্তির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে মুসলিমরা। এসবের কোনও সুযোগ সুবিধে গ্রহণে আপত্তি নেই মোমিন মুসলমানের। আবার একই সঙ্গে বিধর্মী বা অধার্মিককে ঘৃণা করা, অপবাদ দেওয়া, গালি দেওয়া, 'আল্লাহু আকবর' বলে জবাই করাতেও তাদের আপত্তি নেই। বিজ্ঞানের ভালো দিক আর ধর্মের মন্দ দিককে এভাবে গোগ্রাসে গ্রহণ করতে আর কোনও ধর্মগোষ্ঠীকে দেখিনি।

মানুষ শুধু লোভী হয়নি, হিংস্রও হয়েছে অনেক। এই সেদিনও নবীজির ভক্তরা বলতেন, 'আল্লাহর পেয়ারা নবী মানুষকে ভালোবাসতেন, কাউকে ঘৃণা করতেন না, কারও অনিষ্ট করতেন না। বিধর্মীদের মারার কথা কখনও তিনি বলেননি। তিনি বরং বলেছেন, তোমার ধর্ম তোমার কাছে, আমার ধর্ম আমার কাছে।'

আর এখন, নবীজির ভক্তরা বুক ফুলিয়ে বলছেন, ' মুহম্মদ রাসুলুল্লাহ মানুষ মেরেছেন, আমরাও মানুষ মারবো। যারাই তাঁর বিরুদ্ধে কটুক্তি করেছে, কাউকে রেহাই দেননি আল্লাহর নবী। আমরাও সব নাস্তিকদের টুকরো টুকরো করে কাটবো।'

ধর্মটা মানুষকে সহিষ্ণু করার বদলে যদি অসহিষ্ণু করে, বর্বর করে, তবে ধর্মের কতটা প্রয়োজন আছে সমাজে! রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে কিছুদিন আগে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে বাংলাদেশের মুসলিমরা। অধ্যাপকের দোষ, তিনি তাঁর ক্লাসের মেয়েদের বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা যেন বোরখা পরে না আসে, কারণ বোরখা পরলে মুখ দেখা যায় না, চেনা যায় না বোরখা পরা মানুষটা আসলে কে, ছাত্রী নাকি ছাত্রীর ছদ্মবেশে অন্য কেউ! কোনও ডাকাত নাকি কোনো খুনী! আমার সোনার বাংলার সোনার ছেলেরা মেয়েদের মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি ঢেকে রাখতে চায় কালো কাপড়ে। বোরখাটা আরবের পোশাক। মুসলিম হতে হলে কি আরবের সংস্কৃতিকে নিজের সংস্কৃতি বলে মেনে নিতেই হয়, নাকি নিজের অনারবীয় সংস্কৃতিকে মেনেই মুসলিম হওয়া যায়, এ আমার অনেকদিনের একটি প্রশ্ন।

আমার মা প্রচণ্ড ধার্মিক ছিল। তার বহুকালের স্বপ্ন ছিল আরবদেশে যাওয়ার। আরবদেশে মা গিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ফিরে আসার পর আমি লক্ষ করেছি, আরবদেশ নিয়ে, মা'র প্রিয় নবীজির দেশ নিয়ে, মা'র খুব উচ্ছাস নেই। সম্ভবত তার কল্পনার আরবদেশের সঙ্গে সত্যিকারের আরবদেশের ততটা মিল মা পায়নি। মা' র ভেতর থেকে আরবপ্রেম চলে গিয়েছিল, যতদিন বেঁচেছিল বাঙালি হয়েই বেঁচেছিল মা। মানুষের প্রতি মায়া মমতা ভালোবাসাই মা'কে মহান করেছিল। ওভাবেই মা তার নিজের ধর্ম নিজে পালন করেছে।

মুসলিমা সুন্দরী প্রতিযোগিতায় রকমারী হিজাব দেখে মনে হচ্ছিল হিজাব এখন আর ধর্মের অংশ নয়। রং বেরঙের দৃষ্টি আকর্ষণকারী হিজাব বিক্রি হচ্ছে মেয়েদের জন্য। হিজাবীরা নানাভাবে নিজেদের সৌন্দর্য বাইরের পৃথিবীকে দেখাতে ব্যস্ত। ব্যস্ত বলেই তাদের জন্য আজ ক্যাটওয়াকের আয়োজন করতে হচ্ছে। মুসলিমারা দলে দলে যৌন জিহাদে যোগ দিয়েছে। অপরিচিত অচেনা অনাত্মীয় পুরুষদের যৌনসুখ দেওয়ার জন্য তারা বন্ধুর পথ পেরিয়ে সুদূর ইরাক আর সিরিয়ার মরুভূমিতে গিয়েছে। কোনও নির্লজ্জ বিধর্মী স্লাটের পক্ষেও এ কল্পনা করা অসম্ভব। ঘোমটার তলায় খেমটা নাচের কথা অনেক শুনেছি। এবারই সচক্ষে দেখলাম। মুসলিম সন্ত্রাসীরা যেমন আল্লাহর নামে মানুষ জবাই করতে পারে, মুসলিমারাও তেমন আল্লাহকে খুশি করতে যে কোনও সন্ত্রাসীর সঙ্গে শুতে পারে। ভালো যে আমার মা বেঁচে নেই। আমার মা যদি বেঁচে থাকতো এবং এসব দেখতো, জানি না ইসলাম ধর্ম নিয়ে মা'র যা বিশ্বাস ছিল, সব ধ্বসে পড়তো কি না।

No comments: