Follow palashbiswaskl on Twitter

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity Number2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti Basu is dead

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti Devi were living

Thursday, August 29, 2013

ধ্যান চাঁদ কিংবা রক্তাল্পতা হকি এখনও সেই তিমিরেই

ধ্যান চাঁদ কিংবা রক্তাল্পতা হকি এখনও সেই তিমিরেই





মজার ব্যাপার, ভারতে আমজনতার কথা বাদই দিন, এমনকী খেলার জগতেও অনেকে জানেন না, ধ্যান চাঁদকে জীবনের একেবারে গোড়ায় কী নিদারুণ অর্থকষ্টের সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয়েছিল৷ সবাই পরপর তিনটে অলিম্পিক সোনার কথা জানেন৷ এও জানেন, ধ্যান চাঁদই এখনও পর্যন্ত ভারতের সর্বোত্তম হকি-প্রতিভা৷ কিন্ত্ত সেই অবিশ্বাস্য অবদান সত্ত্বেও তিনি যে যোগ্য সাম্মানিকটুকু পাননি, সে খবরও জনতার অজানা৷ 



ধ্যান চাঁদের স্টিকের জাদু প্রথম সম্মোহন ছড়ায় ১৯২৬-এ, নিউজিল্যান্ড সফরে৷ ছিলেন সেনাবাহিনীর সামান্য সিপাই, পরে যাঁরা তাঁর সতীর্থ হবেন, তাঁদের অনেকেই মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মেছিলেন, ধ্যান চাঁদ জন্মাননি, এ হেন এক ব্যক্তির কাছে ভারতীয় দলে ডাক পাওয়া সহসা হাতে চাঁদ পাওয়ারই তুল্য৷ আত্মজীবনীতে প্রাঞ্জল, মজাদার একটি বর্ণনা দিয়েছেন ধ্যান চাঁদ: 'সফরের প্রস্ত্ততি নিলাম দ্রুত৷ সিপাইয়ের মাইনে আর কতই বা, মাসে কয়েকটি টাকা মাত্র, বাবা-মা-ও সচ্ছল ছিলেন না, ফলে যথাযথ সাজসরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার চিন্তা অর্থাভাবে ত্যাগ করতে হল দ্রুত৷ কমখরচে খেলার যতটা সাজপোশাক পারলাম, নিলাম৷ নিজের ব্যক্তিগত জামাকাপড় বলতে থাকল সেনার পোশাক৷ সেনাবাহিনীতে কাজ করে, বিশেষ করে নিচু তলার পদে, এই সফরের আগে আমরা ভাবতেই পারতাম না আমাদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে, বাড়িতে লোকজন আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন, নানা অনুষ্ঠানে বিপুল সাধুবাদ কুড়োচ্ছি আমরা৷ আমরা নায়ক হয়ে গেলাম, আর সবিনয়ে অন্তত এটুকু বলতে পারি, দারুণ ভাবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলাম, দাগ কাটতে পেরেছিলাম বিশ্বমঞ্চে৷' 



আমস্টার্ডাম-এ, ১৯২৮-এর অলিম্পিকে হকিতে প্রথম যোগ দেয় ভারত৷ তখনও পর্যন্ত পদক-টদক ইত্যাদির বিশেষ আশা ছিল না৷ রাঁচিতে প্রথম শ্রেণি প্রাপ্ত এবং পরে অক্সফোর্ড, ব্যালিয়ল কলেজের ছাত্র জয়পাল সিং পেলেন অধিনায়কের মুকুট৷ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বম্বে থেকে জাহাজে ভাসলেন তেরোজন খেলোয়াড়, তাদের মধ্যে ন'জন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান৷ তবে, যাত্রারম্ভের আগে একটা ছোট্ট সংকট ছিল৷ জানা গেল, তেরোজনের মধ্যে এগারো জন যাবেন কিন্ত্ত অর্থসংকটের জন্য দু'জনের যাওয়া অনিশ্চিত৷ তদানীন্তন নথি জানাচ্ছে, কম পড়েছিল পনেরো হাজার টাকা৷ সংকটের ছবিটা আরও স্পষ্ট হয় এই কারণে যে, ফেডারেশন-এর বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলার শওকত আলি এবং সেন্ট্রাল প্রভিন্সেস-এর আর এ নরিস দলের সঙ্গে যেতে না-ও পারেন৷ শেষটায় অবশ্য বাংলার ক্রীড়ামোদী জনতা এগিয়ে এলেন, রীতিমতো চাঁদা করে টাকা তোলা হল, ফলে ওই দু'জনের অলিম্পিক যাত্রা আর আটকাল না৷ 



৩০ মার্চ ১৯২৮- টিলবেরির জাহাজঘাটায় জয়পাল তাঁর দলকে দেখলেন৷ ততদিনে বেশ ক'বছর বিলেতবাসের অভিজ্ঞতাত তাঁর ঝুলিতে, ফলে যাঁরা ভারত থেকে হাজির হলেন তাঁদের 'নোংরা পোশাক এবং গ্রাম্য আচরণ'-এ জয়পাল মোটেই প্রসন্ন হলেন না৷ সাউথ কেনসিংটন-এ উঠল দল, জয়পাল তাঁদের বেশ কয়েক বার রিজেন্ট স্ট্রিট-এ বীরাস্বামীর সুখ্যাত রেস্তোরাঁয় ভোজও খাওয়ালেন৷ পরে লিখছেনও তিনি, 'খাওয়াতে গিয়ে গাঁটের কড়ি খরচ হয়েছিল ভালই৷ খাবারটা হায়দরাবাদি ছিল বটে, কিন্ত্ত সস্তা নয় মোটেই৷' 



এ দিকে, বিলেতে পা দিয়েই জয়পালকে খেলোয়াড়েরা 'স্কিপার' বলে ডাকতে শুরু করেছেন, যদিও তখনও পর্যন্ত কিন্ত্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে অধিনায়কের দায়িত্বভার তিনি গ্রহণ করেননি৷ অনুশীলনের গোড়ার দিকেই অবশ্য শওকত আলি এবং ধ্যান চাঁদ তাঁর নজর কাড়লেন৷ জয়পাল লিখছেন, ধ্যান চাঁদ 'বেশ সাদাসিধে, বিনীত৷ একটাই প্যান্ট ছিল ওর৷ দেখেটেখে আমি ওকে রিজেন্ট স্ট্রিট-এর অস্টিন রিড-এ নিয়ে গেলাম৷ সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতেই দোকানজুড়ে অজস্র ট্রাউজার৷ ধ্যান চাঁদ আমাকে খুব বিনীত ভাবে জিজ্ঞেস করল, আমি এগুলোকে ওপরে রোদ্দুরে নিয়ে গিয়ে দেখব?' এর পর আর কী বলব? পরে শওকতকে গল্পটা বললাম৷ ও হেসে বলল, আচ্ছা, একটা ল্যান্স নায়েকের থেকে এর বেশি কী আশা করেন বলুন তো?' 



সেই ল্যান্সনায়েক অবশ্য আশাতিরিক্ত দক্ষতা দেখিয়েছিলেন খেলায়৷ সে বার আমস্টারডামে ভারতের ঊনত্রিশটি গোলের মধ্যে চোদ্দটি তিনিই করেছিলেন৷ ভারতের স্বর্ণপদক জয়ের মূল কারিগর তিনিই এবং পরের আরও দু'টি অলিম্পিকেও সেই সোনার ফর্ম-ই বজায় রেখেছিলেন তিনি৷ সেই স্মৃতি এখনও অম্লান৷ ২০১২ অলিম্পিকের সময় লন্ডনে একটি টিউব স্টেশনের নামকরণ করা হয়েছিল ধ্যান চাঁদেরই নামে৷ বিদেশ তাঁকে মনে রাখলেও স্বদেশ কতটা মনে রেখেছে সে প্রশ্ন আজ উঠতে বাধ্য৷ 



যদিও তাঁর জন্মদিনটি এ দেশে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করা হয় কিন্ত্ত প্রয়াণের প্রায় সাড়ে তিন দশক পরে ধ্যান চাঁদকে এখন ভারতরত্ন দিয়ে যদি ভাবি, তাঁর প্রতি যোগ্য সম্মানটি জানানো হল, তা নিছক ভ্রান্তিবিলাস ছাড়া কিছু নয়৷ যদি রানি রামপালদের মতো নবীন প্রতিভাদের বিকাশের জন্য উপযুক্ত বন্দোবস্ত করা হয়, তাঁদের আর্থিক সংকটের সমাধান করা হয়, সেটাই ধ্যান চাঁদকে স্মরণ করার যোগ্যতম পন্থা হয়ে উঠবে৷ 

এই রচনার সঙ্গে ব্যবহূত ছবিগুলি বোরিয়া মজুমদারের সৌজন্যে প্রাপ্ত

No comments: