Follow palashbiswaskl on Twitter

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity Number2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti Basu is dead

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti Devi were living

Monday, February 4, 2013

জাতিব্যবস্থার বাস্তব তাঁরা মেনে নিয়েছেন এবং ক্ষমতায়ণের তত্বও তাঁরা মানছেন।গত লোকসভা নির্বাচনে মায়াবতীকে সামনে রেখে তাঁরা পরিবর্তনের সংকেতও দিয়েছিলেন, কিন্তু ভোটে হেরে সেই বিপ্লবের অকাল গর্ভপাত হয়ে গেল।আশিস নন্দীর জয়পুর মন্তব্যের বিরুদ্ধে সিপিএম এর সাহিত্যিক মন্চ জনবাদী লেখক সংঘ কিন্তু সবার আগে পত্রপাঠ বক্তব্য দিয়েছিল। কিন্তু দু দিন যেতে না যেতে শ্রেণী স্বার্থে তাঁদে�

জাতিব্যবস্থার বাস্তব তাঁরা মেনে নিয়েছেন এবং ক্ষমতায়ণের তত্বও তাঁরা মানছেন।গত লোকসভা নির্বাচনে মায়াবতীকে সামনে রেখে তাঁরা পরিবর্তনের সংকেতও দিয়েছিলেন, কিন্তু ভোটে হেরে সেই বিপ্লবের অকাল গর্ভপাত হয়ে গেল।আশিস নন্দীর জয়পুর মন্তব্যের বিরুদ্ধে সিপিএম এর সাহিত্যিক মন্চ জনবাদী লেখক  সংঘ কিন্তু সবার আগে পত্রপাঠ বক্তব্য দিয়েছিল। কিন্তু দু দিন যেতে না যেতে শ্রেণী স্বার্থে তাঁদের সেই বক্তব্য রাতারাতি বদলে গেল।এখন তাঁরা আশিস নন্দীর বাক্ স্বাধীনতার পক্ষে। আমরাো ত পক্ষে। আমরা ত দাবি করছি, তাঁর বক্তব্যের নিরিখে যে বাংলায় গত একশো বছরে ওবিসি, এসসি ও এসটির কোনো ক্ষমতায়ন হয়নি, এই জন্য বাংলায় দুর্নীতি এত কম।সারা দেশ সারা বিশ্বের লোক এতদিন জানত বামপন্থীদেরই কৃতিত্ব যে তারা দীর্ঘ পয়ত্রিশ বছরে ক্ষমতায় থাকা সত্বেও দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন না।কমরেড মাণিক সরকার সারা দেশে সবচেয়ে দরিদ্র মুখ্যমন্ত্রী।এখন জানা গেল মতাদর্সের কোনো কৃতিত্বই নেই, যাবতীয় কৃতিত্ব বহুজন বহিস্কারের, ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক কর্তৃত্বের, ব্যবস্থার।কিন্তু বাংলার বিপ্লবী বামপন্থীরা এই প্রসঙ্গে রা কাড়ছেন না।মা মাটি সরকারের প্রধান মতুয়া দিদিও কম যান না।তিনি হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মতবাদে দীক্ষিত হয়েই বাংলার মতুয়া দলিত ভোট জিতে আজ মুখ্যমন্ত্রী।তিনি আবার অকুতোভয়।উচিত কথা বলতে ছাড়েন না।তিনিও ত কোনো কথা বলছেন না। বাম জমানার সরকারী অর্থশাস্ত্রী অমর্ত্য সেন লিট মিটে সলমান রুশদি প্রসঙ্গে খামোশ থাকলেন সেটা নিয়ে বড় খবর, তিনি ত আবার আম বাঙ্গালির মত স্থানীয় রাজনীতির উলু খাগড়া নন, তাছাড়া দলিত  আদিবাসিদের ক্ষমতায়ন নিয়ে সর্বদাই সরব।কেউ তাঁকে আশীষ নন্দী নিয়ে একটি প্রশ্নও করলেন না।তিনি নিজে থেকেই বার বার ক্ষমতায়নের কথা বলতে অভ্যস্ত, তাহলে?

২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে আর্থিক ঘাটতি ৪.৮ শতাংশ বেঁধে রাখতে চান অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ প্রথম রাতেই বেড়াল মারতে তাই বাজেট ঘোষণায় পরিকল্পিত প্রকল্প খাতে বরাদ্দ ছাঁটতে পারেন অর্থমন্ত্রী৷ তবে, চলতি অর্থবর্ষে কোন প্রকল্পে বরাদ্দের কত টাকা ব্যয় করা হয়েছে তার হিসাব খতিয়ে দেখে তবেই আগামী অর্থবর্ষে কোনও প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে বলে অর্থমন্ত্রক সূত্রের খবর৷ 

পলাশ বিশ্বাস

যত কান্ড, বইমালা লিট মিটে

সলমান রুশদি ও তসলিমা নাসরিন নিয়ে সারা বাংলা তোলপাড়

জগতবিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানীর বহুজনবিরোধী মন্তব্য নিয়ে সেখানে কিন্তু কোনো আলোচনাই হল না

বাংলার বিদ্বতজনেরা দেশের খবর রাখেন না।আম জনতা ত সিপিএম তৃণমুল স্থানীয় সন্ত্রাস রাজনীতির মুড়ি মুড়কি চিবিয়ে জীবন যাপন করতে অভ্যস্ত

টিভি চ্যানেলে দিনরাত রগরগে বিতর্ক সভা

কখনো জ্যোতি প্রিয় মল্লিক লাইভ ত কখনো আবার মদনমিত্র লাইভ।আরাবুলরা আছেন।আছেন শুভেন্দু অধিকারিরা

আরোও আছেন বিদ্বতজনেরা , প্রতিটি বিতর্কে তাঁদের জমজমাট বাইট

চ্যানেলে চ্যানেলে সবজান্তা বক্তারা, বাংলা জমে দই

তবু বইমেলা প্রসঙ্গে সলমান তসলিমাদের প্রসঙ্গ ওঠে।সুবিধাজনক প্রসঙ্গ

আনন্দবাজারে ইতিমধ্যে কান্চা ইলাইয়ার বক্তব্য প্রকাশিত হয়ে গেছে

 এখন ত কেউ বলতে পারেন না যে নন্দী কি বলেছেন জানিনা

তবু কোনও মন্তব্য নেই কেন?

মনে রাখা দরকার, বিগত লোকসভা নির্বাচনে বামপন্থীরা মায়াবতীকে ভাবী প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত করে মাঠে নেমে গো হারা হেরেছেন

মন্ডল কমিশন নিয়ে তাংরাই ছিলেন সবচেয়ে সোচ্চার

বিমানবসুরা বর্ণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে অভ্যস্ত

বামপন্থীদের এক মন্ত্রী. যদিও তিনি ত্রিপুরার মন্ত্রী, দলিত কবি আছেন বেশ সর্বভারতীয় স্তরের, আমাদের অতি প্রিয় অনিল সরকার। 

গত কয়েক সিপিএম  কংগ্রেস ধরে শুনে আসছি, কমরেড প্রকাশ কারত, কমরেড বৃন্দা কারত, কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি, কমরেড বিমান বসু, কমরেড অনিল সরকার ভারতবর্ষের সমাজবাস্তবের নিরিখে শ্রেণী সংঘর্ষের যুক্তিতে আর খারিজ করছেন না

জাতিব্যবস্থার বাস্তব তাঁরা মেনে নিয়েছেন এবং ক্ষমতায়ণের তত্বও তাঁরা মানছেন

গত লোকসভা নির্বাচনে মায়াবতীকে সামনে রেখে তাঁরা পরিবর্তনের সংকেতও দিয়েছিলেন, কিন্তু ভোটে হেরে সেই বিপ্লবের অকাল গর্ভপাত হয়ে গেল

আশিস নন্দীর জয়পুর মন্তব্যের বিরুদ্ধে সিপিএম এর সাহিত্যিক মন্চ জনবাদী লেখক  সংঘ কিন্তু সবার আগে পত্রপাঠ বক্তব্য দিয়েছিল। কিন্তু দু দিন যেতে না যেতে শ্রেণী স্বার্থে তাঁদের সেই বক্তব্য রাতারাতি বদলে গেল।এখন তাঁরা আশিস নন্দীর বাক্ স্বাধীনতার পক্ষে। 

আমরাো ত পক্ষে। আমরা ত দাবি করছি, তাঁর বক্তব্যের নিরিখে যে বাংলায় গত একশো বছরে ওবিসি, এসসি ও এসটির কোনো ক্ষমতায়ন হয়নি, এই জন্য বাংলায় দুর্নীতি এত কম, এই প্রসঙ্গে তদন্ত চাইছি।বিতর্ক চাইছি 

 সারা দেশ সারা বিশ্বের লোক এতদিন জানত বামপন্থীদেরই কৃতিত্ব যে তারা দীর্ঘ পয়ত্রিশ বছরে ক্ষমতায় থাকা সত্বেও দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন না

কমরেড মাণিক সরকার সারা দেশে সবচেয়ে দরিদ্র মুখ্যমন্ত্রী

এখন জানা গেল মতাদর্সের কোনো কৃতিত্বই নেই, যাবতীয় কৃতিত্ব বহুজন বহিস্কারের, ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক কর্তৃত্বের, ব্যবস্থার

কিন্তু বাংলার বিপ্লবী বামপন্থীরা এই প্রসঙ্গে রা কাড়ছেন না

মা মাটি সরকারের প্রধান মতুয়া দিদিও কম যান না।তিনি হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মতবাদে দীক্ষিত হয়েই বাংলার মতুয়া দলিত ভোট জিতে আজ মুখ্যমন্ত্রী

তিনি আবার অকুতোভয়।উচিত কথা বলতে ছাড়েন না

তিনিও ত কোনো কথা বলছেন না

 বাম জমানার সরকারী অর্থশাস্ত্রী অমর্ত্য সেন লিট মিটে সলমান রুশদি প্রসঙ্গে খামোশ থাকলেন সেটা নিয়ে বড় খবর, তিনি ত আবার আম বাঙ্গালির মত স্থানীয় রাজনীতির উলু খাগড়া নন, তাছাড়া দলিত  আদিবাসিদের ক্ষমতায়ন নিয়ে সর্বদাই সরব।কেউ তাঁকে আশীষ নন্দী নিয়ে একটি প্রশ্নও করলেন না

তিনি নিজে থেকেই বার বার ক্ষমতায়নের কথা বলতে অভ্যস্ত, তাহলে?

২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে আর্থিক ঘাটতি ৪.৮ শতাংশ বেঁধে রাখতে চান অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ প্রথম রাতেই বেড়াল মারতে তাই বাজেট ঘোষণায় পরিকল্পিত প্রকল্প খাতে বরাদ্দ ছাঁটতে পারেন অর্থমন্ত্রী৷ তবে, চলতি অর্থবর্ষে কোন প্রকল্পে বরাদ্দের কত টাকা ব্যয় করা হয়েছে তার হিসাব খতিয়ে দেখে তবেই আগামী অর্থবর্ষে কোনও প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে বলে অর্থমন্ত্রক সূত্রের খবর৷ 

চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক ঘাটতি ৫.৩ শতাংশ থেকে বাড়বে না বলে প্রতিশ্রীতি দিয়েছেন চিদম্বরম৷ সে কারণে বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে বিভিন্ন মন্ত্রকের খরচের উপর কোপ ফেলেছেন অর্থমন্ত্রী৷ অর্থমন্ত্রকের কড়া নির্দেশ, গোটা অর্থবর্ষের মোট বরাদ্দের মাত্র ৩৩ শতাংশ জানুয়ারি-মার্চে করতে পারবে বিভিন্ন মন্ত্রক৷ এবং শুধু মার্চ মাসে ব্যয় যেন মোট বরাদ্দের ১৫ শতাংশ না ছাড়ায়৷ 

অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম বলেছিলেন, এ বছর আর্থিক ঘাটতি যেমন করেই হোক জাতীয় উত্পাদনের ৫.৩ শতাংশে সীমিত রাখা হবে৷ ২০১৩-১৪ বর্ষে সেটা নামিয়ে আনা হবে ৪.৮ শতাংশ৷ ২০১৬-১৭ বর্ষে ঘাটতির পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে জিডিপি-র ৩ শতাংশ৷ সেই লক্ষ্যপূরণের জন্য আর্থিক সংহতিকরণের পাশাপাশি ব্যয়সঙ্কোচনের উপরও জোর দিয়েছেন চিদম্বরম৷ 

কন্ট্রোলার জেনারেল অফ অ্যাকাউন্টস (সিজিএ)-র হিসেব বলছে, পরিকল্পিত খাতে ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করেছে সরকার, যা ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে মোট বরাদ্দের মাত্র ৫৮.৬ শতাংশ৷ সেখানে পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাত লক্ষ কোটি টাকা, যা বাজেট বরাদ্দের ৭২ শতাংশ৷ পরিকল্পিত খাতে খরচ কম হওয়ায় আগামী বছর বরাদ্দ অর্থের অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ 

সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে বিদেশিরা আগে কেবল টাকাই রাখতে পারতেন৷ এখন ব্যাঙ্কগুলি তাদের গ্রাহকদের বিশেষ অ্যাকাউন্ট এবং ক্যাশ ভল্টের সুবিধা দিচ্ছে যেখানে সোনা বা বিদেশি মুদ্রাও রাখা যাবে৷ সুইস ব্যাঙ্কগুলি এই বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা করছে যখন ভারতের মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরকার কালো টাকা এবং কর ফাঁকি আটকাতে তত্‍পর হচ্ছে৷ 

সুইস ব্যাঙ্কগুলির এই বিশেষ অ্যাকাউন্টের সুবিধা দেওয়ায় ধনীরা নিজের দেশের কর ফাঁকি দেওয়া অর্থ সোনায় বদলে গচ্ছিত রাখতে পারবেন সুইস ব্যাঙ্কের ভল্টে৷ ওই ভল্টে রাখা যাবে সুইস ফ্রাঁ-এর মতো বিদেশি মুদ্রাও৷ সম্প্রতি ১০০০ সুইস ফ্রাঁ নোটের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সুইত্জারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক৷ কালো টাকা নিয়ে বিতর্কের জেরে বেশ কয়েকটি দেশকে তাদের অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের সম্বন্ধে তথ্য দিতে বাধ্য হয়েছে বিভিন্ন 'সুইস ব্যাঙ্ক'৷ কিন্ত্ত ধনী অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের হারাতে চায় না সুইস ব্যাঙ্কগুলি৷ তাই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাদের ব্যাঙ্কিং তথ্য আদানপ্রদান নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে, তা থেকে গ্রাহকদের বাঁচাতে নতুন পন্থা নিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি৷ এই পদ্ধতিতে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের পরিচয় গোপন রাখার সমস্যা অনেক কম৷ 

পরিচয় গোপন রাখা প্রসঙ্গে সম্প্রতি ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকে সুইস ব্যাঙ্কের কর্তারা জানান যে ভারত সহ বিশ্বের অন্য দেশের ধনীদের সুবিধা দিতেই এই ধরনের অ্যাকাউন্ট৷ প্রথম শ্রেণির সুইস ব্যাঙ্কের এক কর্তার কথায়, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ব্যাঙ্ক তাদের সেফ ডিপোজিট বক্সের ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে৷ এই সব সেফ ডিপোজিট বক্সে সোনা, হিরে, পেন্টিং ও অন্য দামি সামগ্রী রাখতে পারেন অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা৷ 

ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের তথ্য আদানপ্রদান নিয়ে সুইত্জারল্যান্ডের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ চুক্তি সই করলেও নয়া পদ্ধতি যথেষ্ট 'নিরাপদ', কারণ সরকারের শিকারি দৃষ্টি খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না৷ চুক্তি অনুযায়ী ভারত সহ বিভিন্ন দেশ সঞ্চয়, জমা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চাইতে পারে সুইস ব্যাঙ্কগুলি থেকে৷ কিন্ত্ত, সেফ ডিপোজিট বক্স সংক্রান্ত তথ্য চুক্তির বাইরেই রয়েছে৷ ব্যক্তিগত স্তরে এ সব কথা বললেও কোনও ব্যাঙ্কের কোনও কর্তাই সরকারি ভাবে এই ধরনের অ্যাকাউন্টের চাহিদা নিয়ে মুখ খোলেননি৷ 

তবে, মনে করা হচ্ছে এই ধরনের বক্সের চাহিদা বেড়েই চলবে৷ একই সঙ্গে বাড়বে ১০০০ সুইস ফ্রাঁ ব্যাঙ্ক নোটের চাহিদাও৷ সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (এসএনবি) তথ্য অনুযায়ী, সুইত্জারল্যান্ডে মোট নোটের চাহিদার ৬১ শতাংশই ১০০০ সুইস ফ্রাঁ নোটের৷ এক সুইস ফ্রাঁ মোটামুটি ভাবে ভারতীয় ৫৯ টাকার সমতুল৷ ২০১১ সালের তুলনায় এই চাহিদা ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে৷ ১০০০ ফ্রাঁর নোট এখন ভারতের ৫৯ হাজার টাকার সমতুল হওয়ার অল্প সংখ্যক নোটের মাধ্যমেই বিপুল অর্থ গচ্ছিত রাখা যাবে যা ব্রিটিশ পাউন্ড (সর্বোচ্চ ৫০ পাউন্ডের নোট, ভারতীয় মুদ্রায় ৪২৫০ টাকা), মার্কিন ডলার (সর্বোচ্চ ১০০ ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় ৫৪০০ টাকা) ও ইউরোর (সর্বোচ্চ ৫০০ ইউরো, ভারতীয় মুদ্রায় ৩৬ হাজার টাকা) তুলনাতেও অনেক কম সংখ্যক নোট হবে৷ এখন বাজারে চালু ১০০০ ফ্রাঁর নোটের মোট মূল্য ভারতীয় টাকায় ২ লক্ষ কোটি (৩৫০০ কোটি সুইস ফ্রাঁ)৷ কালো টাকা সুইস ব্যাঙ্কে রাখা নিয়ে ভারতের রাজনীতি বারে বারে সরগরম হয়েছে৷ সুইত্জারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের ২১৮ কোটি সুইস ফ্রাঁ বা ১২,৮৫২ কোটি টাকা গচ্ছিত আছে, যা সে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার ০.১৪ শতাংশ৷ সুইত্জারল্যান্ডের বাইরে একই মডেলে তৈরি ব্যাঙ্কেও (লিখটেনস্টাইন, সিঙ্গাপুর ও বিভিন্ন দ্বীপরাষ্ট্রে এই ধরনের ব্যাঙ্ক রয়েছে) ভারতীয়দের কালো টাকা রয়েছে বলে অভিযোগ৷ 


এপ্রিল-ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের আর্থিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪.০৭ লক্ষ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৯ শতাংশ৷ ঘাটতি পূরণে আপাতত বিলগ্নিকরণকেই হাতিয়ার করেছে সরকার৷ চলতি অর্থবর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ৩০,০০০ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল সরকার৷ তবে, এখনও পর্যন্ত উঠেছে ১০,০০০ কোটি টাকা৷ 

সরকারের ভর্তুকির খরচ কমাতে ডিজেলের দামও বাড়িয়েছে৷ ভর্তুকি যুক্ত সিলিন্ডারকেও মহার্ঘ করার চেষ্টা হচ্ছে৷ তবে এরই মধ্যে নভেম্বরে সরকার অতিরিক্ত ৩২,১২০ কোটি টাকা খরচ করার অনুমোদন চায় লোকসভায়৷ তার মধ্যে ২০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয় এয়ার ইন্ডিয়ার পুনরুজ্জীবনে৷ বাকি টাকা দেওয়া হয়েছে জ্বালানি ভর্তুকি খাতে৷

ভারতের বাজার ধরতে মার্কিন মুলুকে 'লবি' করেছে ওয়ালমার্ট৷ এই ইস্যুতে ভারতীয় রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর এখনও জারি রয়েছে৷ সম্প্রতি, ওয়ালমার্টের লবিং নিয়ে তদন্তে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ তবে ওয়ালমার্ট বহাল তবিয়তে মার্কিন মুলুকে 'লবিং' চালিয়ে যাচ্ছে৷ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে লবিং খাতে মার্কিন প্রশাসনের কাছে প্রায় ৮ কোটি টাকা খরচ করেছে ওয়ালমার্ট৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী 'লবি' খাতে খরচ হওয়া অর্থের খতিয়ান দিতে গিয়ে এ কথা জানা গিয়েছে৷ 

গত ৯ ডিসেম্বর জানা গিয়েছিল ভারতের বাজারে ঢোকার সুযোগ করে দিতে গত চার বছর ধরে মার্কিন সেনেটকে তদবির করে এসেছে ওয়ালমার্ট৷ আর মার্কিন রাজনৈতিক মহলে এই 'লবি' করতে গিয়ে ১২৫ কোটি টাকা খরচও করেছে ওই সংস্থা৷ গত ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকেই মার্কিন সেনেটে ১০ কোটি টাকা দিয়েছে সংস্থাটি৷ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ ইস্যুতে ভারতের অবস্থানকে প্রভাবিত করার জন্য পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ওই টাকা পাঠিয়েছে ওয়ালমার্ট৷ সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের রিপোর্ট বলছে, ভারতে ওয়ালমার্টের ব্যবসার পথ সুগম করতে মার্কিন সেনেট, মার্কিন হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস, মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ও মার্কিন বিদেশ দপ্তরকে পয়সা দিয়েছে সংস্থাটি৷ 

মার্কিন প্রশাসনের সাম্প্রতিক রিপোট বলছে, ২০১২ সাল লবিং খাতে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা খরচ করেছে ওয়ালমার্ট৷ ভারতে খুচরোয় এফডিআই চালু করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়কে তাঁদের অনুকূলে আনতে মার্কিন কংগ্রেসের দ্বারস্থ হয়েছে ওয়ালমার্ট৷ গত চার বছর ধরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৮০ কোটি টাকা লবিংয়ের জন্য মার্কিন প্রশাসনকে দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম খুচরো ব্র্যান্ড৷ দেখা যাচ্ছে, প্রতি ত্রৈমাসিকে অন্তত ৫০টি বিষয়ে লবি করার জন্য মার্কিন সরকারকে কাজে লাগিয়েছে ওয়ালমার্ট৷ আর বরাবরই ভারতের বিনিয়োগ ও ভারতীয় বাজারে প্রবেশের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়েছে ওয়ালমার্ট৷ 

বছরের ৪৪ হাজার কোটি ডলারের টার্নওভার রাখা ওয়ালমার্টের পাখির চোখ ছিল ভারত৷ কারণ ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের খুচরো বাজার রয়েছে ভারতে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২০ সালের মধ্যে ভারতে খুচরো বাজারের মূল্য হবে এক লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার৷ সেখানে আন্তর্জাতিক ব্যবসা দরজা খোলার কোনও সুযোগ ছেড়ে দেবে কেন৷ এ বছর ১৪ সেপ্টেম্বর বহুব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাবে সিলমোহর দেয় ইউপিএ সরকার৷ যদিও ২০১১-র আগে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি পুঁজি প্রবেশ করানোর বিরোধিতা করেছে এসেছিল খোদ সরকারই৷ এক বছরের মধ্যে সরকারের অবস্থান বদলে গেল কেন? এর পিছনে মার্কিন সরকারের প্রভাব রয়েছে বলেই দাবি জানিয়ে এসেছেন বিরোধীরা৷ 

সলমন রুশদি, বা বিশ্বরূপম নিয়ে আলোচনার থেকে মুসলিমদের অন্যান্য গুরুতর সমস্যা সমাধানের দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত।  মন্তব্য করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন। বইমেলায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,  রুশদি কিংবা বিশ্বরূপম নিয়ে বেশি আলোচনা করলে মুসলিম সমাজের অন্যান্য গুরুতর সমস্যা আড়াল হয়ে যাবে।

সলমন রুশদির কলকাতায় আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। সমালোচনার ঝড় ওঠে সংস্কৃতি মহলে। রুশদিকে কলকাতায় আসতে না দেওয়ার ঘটনায় রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন চিত্র পরিচালক অপর্না সেনও। তবে, সলমান রুশদি বা বিশ্বরূপম ঘিরে সম্প্রতি তৈরি হওয়া বিতর্ক মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলি থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন। তাঁর আশঙ্কা, এনিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কে সংঘ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্নুয়নের দিকটা ঢাকা পড়ে যেতে পারে।
 

অভিনেতা রাহুল বোস  রুশদির কলকাতা সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞার কড়া নিন্দা করেছেন।  
দেখুন কী বললেন রাহুল বোস 

রবিবার কলকাতা বইমেলায় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন অর্মত্য সেন। ছিলেন শর্মিলা ঠাকুর।


মানব উন্নয়ন, নারী-পুরুষ সাম্যে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে
-----------অমর্ত্য সেন
বিশেষ প্রতিনিধি
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন বলেছেন, মানব উন্নয়নের প্রতিটি সূচকেই বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। মানব উন্নয়ন সূচকে লৈঙ্গিক সমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শনিবার ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই-এ জিএল মেহতা মেমোরিয়াল বক্তৃতায় অর্মত্য সেন একথা বলেন। অর্মত্য সেন আরো বলেন, কিছুুদিন আগেও বাংলাদেশ মানব উন্নয়ন সূচকে ভারতের পেছনে ছিল। অথচ অল্প সময়ে এ চিত্র পাল্টে গেছে। বাংলাদেশ এখন একমাত্র দেশ যেখানে স্কুলে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। বাংলাদেশের গড় আয়ু বেড়েছে। মৃত্যুহার কমেছে এবং কর্মক্ষেত্রসহ সর্বত্র নারীর অংশগ্রহণ বেশি। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও লৈঙ্গিক সমতার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মানব উন্নয়ন, বিশেষ করে লৈঙ্গিক সমতার বিষয়টি নিয়ে যেভাবে কাজ করা হচ্ছে তার কড়া সমালোচনা করেন অর্মত্য সেন। সম্প্রতি নয়াদিল্লীতে চলন্ত বাসে এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খোদ রাজধানীতে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে; কিন্তু পুরো ভারত বর্ষের গ্রামাঞ্চলে নিম্নবর্ণের দলিত নারীরা এমন অসম্মানজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। অর্মত্য সেন আরো বলেন, জনস্বাস্থ্য সেবা খাতে ভারত মোট জিডিপির এক দশমিক দুই শতাংশ বরাদ্দ দেয়। চীন দেয় দুই দশমিক সাত শতাংশ। আর ইউরোপীয় দেশগুলো দেয় সাত থেকে আট শতাংশ। বাজার অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিতে হবে; কিন্তু বাজার অর্থনীতিতে ডুবে গেলে চলবে না। অনেকের মধ্যেই ভুল ধারণা রয়েছে যে, চীন বাজার অর্থনীতিকে পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে। আসলে চীন জনস্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এর ফলশ্রুতিতে ভারতের অনেক উপরে আছে।

20 December 2012, Thursday
ভারতে অগ্রগতির মূল বাধা অশিক্ষা : অমর্ত্য সেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ শিক্ষার অভাব। প্রতীচি ট্রাস্টের এক সেমিনারে বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন। তার অভিযোগ স্বাধীনতা পরবর্তী দশকগুলিতে ভারতের শিক্ষার প্রসারে যথেষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

যে কোনও সমাজের অগ্রগতির মূলে রয়েছে শিক্ষা। শিক্ষার অভাবেই অন্যান্য দেশের তুলনায় ক্রমশ  পিছিয়ে পড়ছে ভারত। এমনই মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন। তার অভিযোগ, স্বাধীনতার পরবর্তী দশকগুলিতে প্রত্যাশিত হারে এদেশে শিক্ষার প্রসার ঘটেনি। বিষয়টি নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি। শিক্ষার প্রসারে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্মত্য সেন।

সমস্যা সমাধানে সাধারণ মানুষের সচেতন অংশগ্রহণেরও প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন অর্মত্য সেন। নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের পরামর্শ, শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে রাজনীতিবিদদের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত। 
(২১১২২০১২-ফাস্টনিউজ/এআরজে/১১.১৯)

কলকাতা: রান্নার গ্যাস, বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি-সহ বিভিন্ন ইস্যুতে বামেদের কেন্দ্র-বিরোধিতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অমর্ত্য সেন৷ রবিবার বইমেলায় লিটারেরি মিটে অমর্ত্যের বার্তা, যেসব ইস্যুকে হাতিয়ার করে বামেরা আন্দোলনে সরব হচ্ছে, তা পাল্টাতে হবে৷ বামেদের আন্দোলন-কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি নেতৃত্ব নিয়ে ভাবারও পরামর্শ দেন তিনি৷  
২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন পরমানু চক্তির বিরোধিতায় সরব হয় বামেরা৷ ইউপিএ ওয়ান সরকারের উপর থেকে তারা সমর্থনও প্রত্যাহার করে৷ পরমাণু চুক্তির বিরোধিতায় কেন্দ্রের উপর থেকে বামেদের সমর্থন প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলেও অভিমত অমর্ত্যর৷ 

বাম রাজনীতির কার্যত রাজধানী পশ্চিমবঙ্গ৷ ২০১১র বিধানসভা ভোটে এ রাজ্যে বামেদের চৌত্রিশ বছরের দূর্গে ধস নামে৷  সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেতাদের দূরত্ব তৈরি হওয়াকে ভোটে বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে বাম নেতৃত্বই৷ এদিন অমর্ত্য সেনও জনসংযোগ বাড়ানোর উপর জোর দিতে বলেন৷ পরামর্শ দেন নেতৃত্ব নিয়ে ভাবার৷ 
রান্নার গ্যাসের দামবৃদ্ধি, এফডিআই-সহ কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে, ২০ থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারি টানা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি৷ ধর্মঘটকে সমর্থন করছে সিপিএম৷ কিন্তু যে গরিবের স্বার্থরক্ষার কথা বলে বাম রাজনীতি, টানা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকে সেই প্রান্তিক মানুষের রুটি-রুজিরই ক্ষতি করা কেন, এ নিয়ে সিপিএমের অন্দরেই উঠেছে প্রশ্ন৷ এই পরিস্থিতিতে বামেদের আন্দোলনের ইস্যুগুলিকে বদলানো নিয়ে এদিন অমর্ত্য যে মন্তব্য করেছেন, তা যথেষ্ট তাত্‍‍পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ 


রুশদি বিতর্কে দুরকম কথা বললেন রাজ্য সরকারের দুই মন্ত্রী। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখার্জির বক্তব্য, রুশদির কলকাতায় না আসা নিয়ে, সরকারের বক্তব্য সুলতান আহমেদই বলে দিয়েছেন। অন্যদিকে, পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের দাবি, রুশদির কলকাতা সফর বাতিল হওয়া নিয়ে সরকারি স্তরে কোনও বক্তব্যই পেশ করা হয়নি। এর আগে রুশদির কলকাতা সফর বাতিল হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ। তখন তাঁর বক্তব্য ছিল, সলমন রুশদিকে কলকাতা না আসতে দিয়ে ভাল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

অন্যদিকে সলমন রুশদিকাণ্ডে রহস্য আরও বাড়ল। রুশদি আগেই জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কলকাতা সফরের আমন্ত্রণ পত্র এমনকি বিমানের টিকিটও রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে সেই টিকিটের ছবিও প্রকাশিত হয়। প্রশ্ন উঠেছে, এই বিমানের টিকিট রুশদির কাছে পৌঁছে দিল কে ? গিল্ডকর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, কিছু কিছু বিষয় রহস্যাবৃত থাকাই ভালো। 

বিস্ফোরক ট্যুইটে সফর বাতিলের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করেছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক। সরকার মুখে কুলুপ আঁটলেও, তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান।  রুশদি জানিয়েছিলেন তাঁর কাছে আমন্ত্রণ পত্রের ইমেল ও বিমানের  টিকিট  রয়েছে।  সংবাদমাধ্যমে ইতিমধ্যেই সেই টিকিটের ছবিও প্রকাশিতও হয়েছে। বিতর্কে দাঁড়ি টানতে সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন  গিল্ড কর্তৃপক্ষ। 

তাহলে, বিশিষ্ট সাহিত্যিকের কাছে বিমানের টিকিট পৌঁছে দিল কে?


স্পষ্ট কথা স্পষ্ট করে বলেননি গিল্ড কর্তা। উল্টে রুশদিকাণ্ডে আরও রহস্য বাড়িয়ে দিলেন।  


ই-মেলে রুশদির 'উড়ান টিকিট'


Monday, 04 February 2013

সলমন রুশদির কলকাতায় আসার উড়ানের টিকিট প্রকাশ্যে আনল দ্য টেলিগ্রাফ৷ বইমেলার উদ্যোক্তাদের তরফেই পাঠানো হয়েছিল টিকিট৷ যদিও, পুরনো অবস্থানেই অনড় বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ড৷ তাদের পাল্টা দাবি, ই-মেল থেকে প্রমাণ হয় না যে রুশদিকে লিটারেরি মিটে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷

রুশদিকাণ্ড নিয়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যেই প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য৷কলকাতা বইমেলায় প্রখ্যাত লেখক সলমন রুশদিকে আমন্ত্রণ জানানো এবং পরে তাঁকে আসতে না দেওয়া নিয়ে যে বিতর্ক চলছে তারইমধ্যে  'দ্য টেলিগ্রাফ' পত্রিকার হাতে এসেছে কলকাতা লিটারেরি মিটের আয়োজক সংস্থা গেমপ্ল্যানের ই-মেল থেকে নেওয়া সলমন রুশদির পাঠানো বিমান টিকিটের ই-মেল৷ সেই মেলে বলা হয়েছে, ৩০ জানুয়ারি মুম্বই থেকে কলকাতা আসার জন্য রুশদির নামে সকাল ৭.৩৫-এর একটি উড়ানের টিকিট কাটা হয়৷ ৩১ জানুয়ারি কলকাতা থেকে মুম্বই ফেরার টিকিটও কাটা হয়৷ দুটি উড়ানের টিকিটই কাটা হয় ২৫ জানুয়ারি৷ একদিকে যখন কলকাতা বইমেলার আয়োজক বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স গিল্ডের দাবি, লেখককে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি, তখন মিডনাইটস চিলড্রেনের ভারতীয় ডিস্ট্রিবিউটরকে পাঠানো গেমপ্ল্যানের মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ই-মেল-এ স্পষ্ট লেখা রয়েছে, লিটারেরি মিটের একটি সেশনের জন্য প্রয়োজন৷


'দ্য টেলিগ্রাফ' সূত্রে খবর, গেমপ্ল্যান এবং ওই ডিস্ট্রিবিউটরের মধ্যে আলোচনার পর লেখকের সম্ভাব্য কলকাতা সফরের একটি সূচিও ঠিক হয়েছিল৷ সেই সূচি অনুযায়ী-
৩০ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টায় রুশদির কলকাতায় নামার কথা ছিল৷ ১১.৩০টায় পৌঁছনর কথা হোটেলে৷ 
মধ্যহ্নভোজের পর দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা৷ 
সন্ধে ৬টায় লিটারেরি মিটের নিকটবর্তী হোটেলের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা৷ 
সন্ধে ৬.৪৫৷ রাহুল, দীপা, ডেভিডের সাংবাদিক বৈঠক৷ সলমন পৃথক অনুষ্ঠানে কিছু বই-এ স্বাক্ষর করবেন৷ 
সন্ধে সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠানস্থলে যাবেন রাহুল, দীপা ও ডেভিড৷ 
সন্ধে ৭.৪৫ এ অনুষ্ঠান শুরু৷ 
ঠিক ওই সময়েই দর্শকদের ঢোকার গেট দিয়ে ঢুকবেন সলমন রুশদি৷ 
রাত ৮.৪৫-তে ফিরবেন হোটেলে৷ 
পরের দিন সকাল ৭.১৫ নাগাদ বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল রুশদির৷

প্রথম থেকেই রুশদির দাবি, তাঁকে বইমেলার লিটারেরি মিটে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ সফর আটকানোর জন্য সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি টুইটারে লেখেন, আমার কলকাতায় আসা আটকাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ লিটারারি মিট উদ্যোক্তারা বলছেন, আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি৷ তাঁরা মিথ্যা কথা বলছেন৷ প্রমাণ হিসেবে আমার কাছে একাধিক ই-মেল এবং তাঁদের পাঠানো বিমানের টিকিট রয়েছে৷ কিন্তু, রুশদির এই দাবিকে মিথ্যে বলে খারিজ করে দেন গিল্ড কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়৷

বইমেলায় লিটারারি মিট শেষ গিয়েছে রবিবার৷ কিন্তু, রুশদি বিতর্ক এখনও পিছু ছাড়ছে না গিল্ডের৷ তবে অস্বস্তির মুখেও গিল্ড অবশ্য অনড় পুরনো অবস্থানেই৷ এমনকী, রুশদিকে পাঠানো ই-মেল প্রকাশ্যে আসার পরেও নিজের অবস্থানে অনড় গিল্ড৷ গিল্ডকর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ই-মেল থেকে প্রমাণ হয় না যে রুশদিকে লিটারেরি মিটে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ বইমেলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিদিবের সাফাই, সব রহস্যের সমাধান হয় না, রুশদিকাণ্ডে বারমুডা ট্র্যায়াঙ্গল রহস্যও উদাহরণ হিসেবে টেনে প্রসঙ্গ এড়াতে চেয়েছেন তিনি ৷ জবাব এড়াতে বিতর্কের জন্য সংবাদমাধ্যমকেও কটাক্ষ করেছেন গিল্ড কর্তা৷ 
রুশদিকাণ্ডে উত্তাল রাজ্য৷ তীব্র সমালোচনার মুখে রাজ্য সরকার৷ এই পরিস্থিতিতে রুশদিকে পাঠানো এই ইমেল বার্তা প্রকাশ্যে আসায়, সেই বিতর্কে ঘৃতাহুতি পড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59/33202


রুশদি-বিতর্কে এবার মুখ খুললেন সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী৷ রবিবার, কলকাতা বইমেলায় তাঁকে সংবর্ধনা দেয় প্রদেশ কংগ্রেস৷ সেখানেই মহাশ্বেতা জানান, রুশদিকে এই রাজ্যে না ঢুকতে দেওয়ার ঘটনায় তিনি দুঃখিত৷ বলেন, স্বচ্ছন্দেই শহরে আসতে পারতেন রুশদি৷ ক্ষুণ্ণ হত না নিরাপত্তা৷

রবিবারই সকালে কলকাতা হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতে এসে অভিনেতা রাহুল বসুও ফের সরব হন রুশদি-ইস্যুতে৷ তাঁর মন্তব্য, যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক৷ আসল সত্যিটা জানা যাবে না বলেও কটাক্ষ রাহুলের৷ তাঁর প্রশ্ন, ভারতে আসার ব্যাপারে লেখকের কোনও নিষেধ না থাকা সত্ত্বেও তিনি স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন না, তা সংবিধানে কোথায় বলা আছে?  
রুশদির লেখা বই মিডনাইটস চিলড্রেনের উপর তৈরি ছবির প্রচারে গত বুধবার একলাই শহরে আসেন রাহুল৷ তিনি ছবিটিতে জুলফিকারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন৷ সেদিনও রুশদি-বিতর্ককে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন রাহুল৷ এ ধরনের ঘটনা এড়াতে সরকারকে আরও যত্নবান হওয়ারও আবেদন জানান রাহুল৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/33189-2013-02-04-04-24-38


ফের নিশানায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এবার একুশে জুলাই কমিশনে গিয়ে ১৯৯৩ সালের ২১ শে জুলাই যুব কংগ্রেসের মিছিলের ওপর পুলিসের গুলি চালনার নির্দেশ তিনিই দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করলেন ক্রীড়া ও পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্র। অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ক্রীড়ামন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন। 
 
 ১৯৯৩ সালের ২১ শে জুলাই যুব কংগ্রেসের মিছিলের ওপর পুলিসের গুলিচালনার ঘটনার তদন্তে গঠিত হয়েছে একুশে জুলাই কমিশন। কমিশনের আজ সাক্ষ্য দেন ক্রীড়া পরবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার আগের দিন ২০ জুলাই তিনি লালবাজারে পুলিস কর্তাদের বৈঠক করেন। উপস্থিত ছিলেন পুলিস কমিশনার তুষার তালুকদার, দীনেশ বাজপেয়ি, গৌতমমোহন চক্রবর্তী, দেবেন বিশ্বাস। সেখানেই একথা চলাকালীন তিনি জানতে পারেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্দেশের কথা।

২১ জুলাই কমিশনকে মদন মিত্র যা জানিয়েছেন, তার মোদ্দা কথা হল পরিকল্পনামাফিক পুলিস গুলি চালিয়েছিল


ভাতার পরিবর্তে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে ইমামদের। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ইমামদেরই একাংশের। গতকাল উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটে তৃণমূলের পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে সরকারি ভাতাপ্রাপ্ত ইমামদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আর তারপরই সরব হয়েছেন ইমামদের একাংশ।

অনুরোধের মোড়কে রয়েছে আসলে ক্ষোভ। রবিবার বসিরহাটে তৃণমূলের পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জেলার কয়েকজন ইমামকে। এই আমন্ত্রণই বিতর্কের কারণ।         
  
ইমামভাতা চালুর কথা ঘোষণা করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই অভিযোগ উঠেছিল, মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক হাতে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সেই অভিযোগটাই করলেন বসিরহাটের আমিনিয়া মিশনের অধিকর্তা।    
 
অনেক ইমামই সরকারি ভাতা ঠিকমতো পাচ্ছেন না, এমন অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এবার উঠল ভাতার বিনিময়ে রাজনৈতিক আনুগত্য কিনতে চাওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তিরটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের দিকেই। 


এবার মা মাটি সরকারের মাটি উত্‍সব। রাজ্য সরকারের শূন্য কোষাগার নিয়ে যখন প্রতিদিনই কেন্দ্র ও পূর্বতন বাম সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, তখন মাটি উত্‍সবে খরচ হবে দশ কোটি টাকা। 

মূলত কৃষি দফতরের উদ্যোগে হবে এই উত্‍সব। সহযোগিতায় থাকছে আরও আটটি দফতর। পানাগড়ে নয় ফেব্রুয়ারি উত্‍সবের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন সব মন্ত্রীকে পরতে হবে মাটি রঙের পাঞ্জাবি। নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পড়বেন মাটি রঙের শাল। 

মাটির সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠ সংযোগ, গ্রামীণ জীবনযাত্রার নানা দিক তুলে ধরতে উত্‍সবে স্টল হবে একশোটি। এর মধ্যে বাহাত্তরটি স্টল হবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের। প্রতিটি জেলাকেও স্টল করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উত‍সব চলবে ষোলো ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। 

উত্‍সব সফল করতে ৯ জন মন্ত্রীকে নিয়ে তৈরি হয়েছে টাস্ক ফোর্স। আগামিকালই বেলা একটায় বসছে টাস্ক ফোর্সের মিটিং।


মহিলাদের ওপর অত্যাচার রুখতে বিচারপতি জে এস ভার্মা কমিটির করা কোনও সুপারিশকেই কেন্দ্রীয় সরকার বাতিল করবে না বলে জানিয়ে দিলেন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। সোমবার তিনি বলেন, "প্রত্যেককে আবেদন করব, গুরুত্ব সহকারে এই ধরনের ঘটনার তদন্ত করতে।" মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বর্তমানের আইনেরও পরিবর্তন করা দরকার বলে মনে করছেন তিনি। 

ধর্ষণ বিরোধী আইন কঠোর করা নিয়ে আরও কয়েক দফা আলচনা এখনও বাকি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ দিন চিদাম্বরম বলেন, "মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ও দোষীদের কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করতে বিলটির গঠনে সমস্ত স্তরে আলোচনা করা হবে।" 


কড়া আইন বলবৎ হওয়া পর্যন্ত কঠোর ভাবেই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে আশা করছে কেন্দ্র। আজ এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।


রাজধানীর রাজনীতিতে মোদীর পক্ষে-বিপক্ষে হাওয়া এখন চরমে। ২০১৪-র নির্বাচনে যুব সমর্থন যে একটা বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে। সম্ভবত সেটা আঁচ করেই আগামি বুধবার রাজধানীতে পা রাখতে চলেছেন গুজরাত মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দিল্লির শ্রীরাম কলেজের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন মোদী। লোকসভা নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনার পারদ যখন কার্যত চড়তে শুরু করেছে, তখন মোদীর ভাষণে ভাবি প্রধানমন্ত্রীর সুরই শোনা যাবে। এমনটাই আশা রাজনৈতিক মহলের। কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে আলাপচারিতায়ও মাতবেন তিনি। বিজেপির একাংশের মতে, দলের নেতারা চান, তরুণ সমাজের সঙ্গে বেশি করে মেশা প্রয়োজন মোদীর। সেই কারণের শ্রীরাম কলেজে আলোচনাচক্রের আয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। 

অন্যদিকে সংঘ পরিবারের কাছের ধর্মীয় সংগঠন বলে পরিচিত ভিএইচপি আগামী ৫ ও ৬ তারিখ এলাহাবাদে কুম্ভ মেলায় মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করবে। ৬ তারিখ কুম্ভ প্রদর্শনে যাওয়ার কথা বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংয়েরও। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে বিজেপি ও আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর ভিএইচপি-র তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান তাঁরা।

যদিও মোদীকে এখনই প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী ঘোষণা করার কথা অস্বীকার করেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। বিতর্ক উস্কে দিয়ে এনডিএ শরিক জেডি(ইউ) নেতারা জানিয়েছেন, "প্রধানমন্ত্রী পদের প্রতিন্দ্বিতা কে করবেন সেটা ঠিক করবে রাজনৈতিক দলগুলিই।" ধর্মীয় আখারায় তার সিদ্ধান্ত হয় না বলে মন্তব্য করেছেন জেডি(ইউ) নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি। 

প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর নাম নিয়ে যখন জেডি(ইউ)য়ের সঙ্গে বিবাদ তুঙ্গে, তখন নরেন্দ্র মোদীকেই ঢালাও সার্টিফিকেট দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং। রবিবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্য, মোদী অত্যন্ত যোগ্য। মোদীই সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তাহলে কি ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীই? বিজেপি সভাপতির অবশ্য দাবি, শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেই দলের সংসদীয় বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার পক্ষে সওয়াল করায়, বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে কটাক্ষ করেছে এনডিএ শরিক জেডি(ইউ)। সেই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল বিজেপি সভাপতির এই মন্তব্য।


এক মুহূর্তের স্তব্ধতা, তবে রুশদি নিয়ে
'বিশদে' গেলেন না অমর্ত্য
জাগরী বন্দ্যোপাধ্যায়
ইমেলায় লিট মিটের শেষ দিন। বক্তার আসনে 'তর্কশীল ভারতীয়ে'র লেখক। এ বারের লিট মিট ঘিরে সবচেয়ে তর্ক তোলা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই এক মুহূর্তের নীরবতা।
সলমন রুশদিকে লিট মিটে আসতে না দেওয়া নিয়ে লিট মিটেরই মঞ্চে দাঁড়িয়ে কী বলবেন অমর্ত্য সেন? 
রবিবারের ভরদুপুর হলে কী হবে, সভাগৃহে উপছে পড়া ভিড়। অর্মত্য সেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় শর্মিলা ঠাকুর! জানতে চাইছেন, হোয়াট মুভস ইন্ডিয়া, হোয়াট স্টপস ইট! 
মুহূর্তটাও মোক্ষম। রুশদি-বিতর্ক তো আছেই। তা বাদে দিল্লি গণধর্ষণ এবং নাগরিক বিক্ষোভ গোটা দেশকেই আন্দোলিত করেছে, করছে। অমর্ত্য সেন এবং শর্মিলা ঠাকুর, দু'জনেই একাধিক বার মুখ খুলেছেন এই সময়-পর্বে। দু'দিন আগে লিট মিট-এর আসরেই ধর্ষণে প্রাণদণ্ডের বিরোধিতা করেছেন শর্মিলা। সুতরাং এ দিনের আলোচনায় বিষয়গুলো যে আসবে, সেটা এক প্রকার প্রত্যাশিতই ছিল। 
শর্মিলা শুরু করলেন যুবসমাজের ভূমিকার কথা তুলে। ভারতের গড় বয়স এখন কুড়ি, যুবসমাজ সংখ্যাগুরু। অণ্ণা হজারে থেকে দিল্লি ধর্ষণ, নাগরিক বিদ্রোহে তাদের উপস্থিতি এখন সরব। "তারা রাস্তায় নামছে, এটা ঠিক। কিন্তু কী বলছে? কী চাইছে? অনেক সময়ই একটা ভাসা-ভাসা দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করছে না কি?" এই সূত্রেই শর্মিলার জিজ্ঞাসা, সমাজের বাকি স্তরের মানুষের ভালমন্দ নিয়ে তারা কতটা ভাবে? অমর্ত্যদের প্রজন্মের তুলনায় আজকের যুবসমাজ কি বেশি আত্মকেন্দ্রিক?
অমর্ত্য অবশ্য এর জন্য আলাদা করে যুবসমাজকে দোষ দিলেন না। বললেন, গত দু'দশকে উদারীকরণের ফলে একটা বড় অংশের কাছে অর্থনৈতিক সুযোগসুবিধার ক্ষেত্রটা অনেকটা বিস্তৃত হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের উচ্চাকাঙ্খাও বেড়েছে। "উচ্চাকাঙ্খী হওয়ার মধ্যে আমি দোষের কিছু দেখি না। আসল কথাটা হচ্ছে, সুযোগসুবিধার জায়গাটা কত জনের কাছে বিস্তৃত করে দেওয়া গেল।" কিন্তু এই প্রশ্নটাই কি আদৌ মধ্যবিত্তকে ভাবায়? শর্মিলা প্রশ্ন করলেন, "তারা তো সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও গ্যাসের ভর্তুকি ছাঁটাই আর বিদ্যুৎ মাসুল বাড়া নিয়ে প্রতিবাদে গলা ফাটায়!"
লিট মিট-এর শেষ দিনে এ দেশের নোবেলজয়ীদের নিয়ে এমটা সংস্থার তৈরি একটি ক্যালেন্ডার
উদ্বোধন করলেন অমর্ত্য সেন। ছিলেন শর্মিলা ঠাকুরও। কর্ণধার উজ্জ্বল উপাধ্যায় চাইছিলেন, নিজের
ছবিওয়ালা পাতাটি ধরে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তুলুন অমর্ত্য। বিড়ম্বিত মুখে, লাজুক হেসে "না না!" বলে
কোনও মতে এড়িয়ে গেলেন। পাশে একটি স্ট্যান্ডে খুলে রাখা ছিল ওই পাতাটি। "ওখানে একটা
সই করে দিন!" এই অনুরোধটা কিন্তু রাখতেই হল তাঁকে। —নিজস্ব চিত্র
উত্তরে পুরোপুরি সহমত পোষণ করলেন অমর্ত্য। "ভর্তুকি টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে মধ্যবিত্ত কেন যে এত মরিয়া! মাসে পাঁচশো টাকা বেশি খরচ করার সামর্থ্য তো তাদের আছে!" কিন্তু দেশের বৃহত্তর জনতা এর চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থায় আছে, তাদের গ্যাসও নেই। বহু ক্ষেত্রে বিদ্যুৎও নেই। সেই অংশের উন্নয়ন নিয়ে মধ্যবিত্তের মাথাব্যথাও নেই। বামপন্থীরাও এ ক্ষেত্রে প্রার্থিত ভূমিকা নেননি বলেই মনে করেন অমর্ত্য। পরমাণু চুক্তি বা গ্যাসের দাম নিয়ে বিরোধিতা 
করতে তাঁরা যতটা তৎপরতা দেখিয়েছেন, শৌচাগারের অভাবের ব্যাপারে দেখাননি। অমর্ত্য এ ব্যাপারে সরকারের ভূমিকা নিয়েও কড়া কথাই বললেন। খাদ্য সুরক্ষা বিল আনার ব্যাপারে সরকার রাজকোষে অনটনের দোহাই দেয়, কিন্তু সম্পন্ন অংশের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ে যা করণীয়, তা করে না।
শর্মিলার প্রশ্ন, কথায় কথায় বেসরকারিকরণের পক্ষে সওয়াল করা হয় আজকাল। সেটাই কি সব সমস্যার সমাধান? অমর্ত্যের জবাব, "বেসরকারিকরণে এমনিতে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু কোন ক্ষেত্রে, কী ভাবে বেসরকারিকরণ?" একটা অংশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বেসরকারি পরিষেবার রমরমা হচ্ছে। অন্য দিকে সামগ্রিক ভাবে দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। খোলা জায়গায় শৌচকার্য সারার নিরিখে ভারত এখনও এক নম্বর! অমর্ত্যের মতে, "অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নিয়ে এখানে একটা চূড়ান্ত অস্বচ্ছ ধারণা কাজ করছে।" চিনের অর্থনৈতিক বাড়বৃদ্ধির কথা বলা হয়। চিন কিন্তু স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। সামাজিক জীবনযাত্রার মানের সূচকে শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশও ভারতকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার অনেক বেশি। সেটা দেশের সার্বিক উন্নয়নে একটা বড় ভূমিকা নিয়েছে। 
শর্মিলা রাজনীতিকদের মধ্যে বৃহত্তর চিন্তনের অভাবের কথা তুলছিলেন, নাগরিক জীবনে নৈতিক দায়বদ্ধতার অনুপস্থিতির কথা বলছিলেন। মানসিকতার বদল হবে কীসে? অমর্ত্য সেন বললেন, নৈতিকতা রোজকার জীবনযাপনের অঙ্গ। নৈতিকতা যুক্তিবোধেরও অঙ্গ। সেটা উপলব্ধি করলে অনেকটা কাজ হয়। অজ্ঞানতাই গোড়ায় গলদ। সেটা কাটাতেই হবে। 
এ বার দর্শকাসন থেকে প্রথম প্রশ্নটাই এল, "আপনি তর্কশীল ভারতীয়ের কথা বলেছেন। সলমন রুশদি-কমলহাসনকে নিয়ে যা হচ্ছে, তা নিয়ে কী বলবেন?" 
আসর এক মিনিটের জন্য স্তব্ধ। হোয়াট মুভস ইট-এর পরে হোয়াট স্টপস ইট-এর পালা যেন! উদ্যোক্তারা মুখে অস্বস্তির রেখা চাপছেন। অমর্ত্য সেন বললেন, আমি তিনটে কথা বলব—
এক, এই নিয়ে বিশদ কিছু বলতে চাইছি না, কারণ তা হলে আর অন্য কিছুই ছাপা হবে না।
দুই, ধর্ম বিষয়ে কাউকে আঘাত না দেওয়াটা ভারতের গঠনমূলক তর্ক-পরম্পরার মধ্যে রয়েছে।... পশ্চিমবঙ্গেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেকটা বঞ্চিত অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের খারাপ থাকার সত্যিকার কারণগুলো থেকে নজর ঘোরাতে ভাবাবেগে আঘাত আনার প্রসঙ্গগুলো বড় করে দেখানো হয়।
তিন, আমি কিন্তু শুধু এই কথাগুলোই বলিনি আজ। আরও অনেক কিছু বলেছি। 
http://www.anandabazar.com/4cal3.html

আলোর বিপরীতে স্বামী বিবেকানন্দ

শর্মিলা মাইতি

রিভিউ: দ্য লাইট, স্বামী বিবেকানন্দ
রেটিং: *

স্বামী বিবেকানন্দের দেড়শতম জন্মশতবর্ষে নানা ষোড়শোপচারের সঙ্গে, অবশ্যই প্রয়োজন ছিল একটি পূর্ণদৈর্ঘের চলচ্চিত্রের। অনেক কিছুই তো হল, ছবিটাই বা বাকি থাকে কেন! তবে এমন নয় যে, স্বামীজিকে নিয়ে আমরা এই প্রথম আড়মোড়া ভেঙে উঠলাম। প্রত্যেক মধ্যবিত্ত বাড়ির স্টাডিরুমে এঁর ছবি অবশ্যই টাঙানো থাকে বাণীসমেত, যতই দরজার পেছনে ফিল্ম বা স্পোর্টসস্টারেরা শোভা পাক। প্রতিটি ছাত্র কোনও-না-কোনও বয়সে একবার স্বামীজি হওয়ার স্বপ্ন দেখে। বাংলা ও সর্বভারতীয় চলচ্চিত্র জগতেও একাধিক ছবি তৈরি হয়েছে স্বামীজিকে নিয়ে। অনেকে হয়তো জানেন না, প্রথম স্বামী বিবেকানন্দের ওপর ছবি প্রোডিউস করেছিলেন প্রয়াত অভিনেত্রী ভারতী দেবী। ১৯৩৪ সালের বাজারে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে। কিন্তু সে-ছবিতে শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের সম্পর্ক দেখে দর্শকের একাংশ বলেছিল, `ওই বুড়োটা ছোঁড়াটাকে নিয়ে এত টানাটানি করছে কেন বল দেখি?` যাই হোক, ছয়ের দশকে মানুষের কাছে এই সম্পর্ক একটা স্বর্গীয় স্বীকৃতি পায়, যা তখনও ছিল না।

১৯৬৪ সালে নির্মিত মধু বসুর ছবি বীরেশ্বর বিবেকানন্দ তামাম বাঙালির মন ছুঁয়েছিল। অভিনেতা অমরেশ দাসের সঙ্গে স্বামীজির আদল নিয়ে হয়ত আজকের দর্শক কিঞ্চিত্ উষ্মাপ্রকাশ করতেই পারেন। কিন্তু অভিনয়ের গভীরতা প্রশ্নাতীত। যে ছবি ২০১৩ সালে মুক্তি পাচ্ছে, সে ছবির কাছে প্রত্যাশার কোনও শেষ থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। পরিচালক টুটু সিনহা যে নবাগতকে নিয়ে এলেন স্বামীজির ভূমিকায়, তার মুখের আদল অনেকটাই মেলে নরেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে। অবশ্য সামান্য লক্ষ্মীট্যারা। সেটাও ওভারলুক করা যায়। বাহবা অবশ্যই প্রাপ্য কাস্টিং ডিরেক্টরের। তাছাড়া, আরও কিছুদিন পিছিয়ে যদি পোস্টারের দিকে চোখ মেলি, সেটিও ধন্যবাদার্হ। প্রথম পোস্টারে শুধু একপাটি খড়ম। পুরাণ ও বাস্তবের আবাহন। রক্তমাংসের চরিত্র স্বামীজির ব্যক্তিত্ব দেবত্বে উন্নীত। তার পরের পোস্টারে স্বামীজির বেশে এক নতুন মুখ। প্রত্যাশাকে লালন করবার সেরা উপায়। সুন্দর বিজ্ঞাপন।

আসি মূল ছবিতে। মুখের আদল মিললেই যে স্বামীজির মতো চ্যালেঞ্জিং ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ চরিত্রে খাপে খাপ ঢুকে যাবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। দীপ ভট্টাচার্যের বডি ল্যাঙগোয়েজেই স্পষ্ট যে তিনি ক্যামেরার সামনে এখনও সড়গড় নন। মুখে মুখে প্রচারিত স্বামী বিবেকানন্দের বেশ কিছু কাহিনি জোড়া দিয়ে বানানো ছবির চিত্রনাট্য। প্রায় রিভাইজ না করেই নামানো হয়েছে। ছেলেবেলার বিলে গোলগাল গড়নের। জানালা দিয়ে শাড়ি-জামা-কাপড় দরিদ্রকে দান করার সেই বহুল প্রচলিত গল্প দিয়ে ছবি শুরু। কিশোর বয়সের বিবেকানন্দের চরিত্রে যাঁকে দেখি, তাঁর সঙ্গে বিবেকানন্দের চেহারার কোনও মিল নেই। অনায়াসে এই পর্ব থেকেই নবাগত দীপ ভট্টাচার্যকে ব্যবহার করা যেত। সে যাই হোক, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে বিষয়টি হতাশ করে তা হল, বিলে থেকে নরেন হওয়ার সময়টাকে অনাবশ্যক বেশি সময় নিয়ে দেখানো এবং আসল বিষয়, দ্য লাইট, মানে স্বামী বিবেকানন্দের আলো হয়ে ওঠার পর্বটি বড়ই ক্ষুদ্র। প্রায় একপাশে ঠেলে দেওয়া। মায়ের সঙ্গে, পরিবারের সঙ্গে নরেনের সম্পর্ক, বাবার মৃত্যুর পর হন্যে হয়ে চাকরির খোঁজ, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের শরণাপন্ন হওয়া, শ্রীরামকৃষ্ণের স্পর্শে বিশ্বরূপ দর্শন, এ সব কিছু নিশ্চয়ই বিবেকজীবনীর অন্যতম অংশ। বাদ দেওয়া যেত মাত্রাতিরিক্ত কিছু গানের সিকোয়েন্স। (এমনকি একটি বাঈজিনৃত্যও আছে যা না থাকলেও কোনও ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না)। 

শ্রীরামকৃষ্ণের ভূমিকায় প্রেমাঙ্কুর চক্রবর্তী অসাধারণ অভিনয় করেছেন। ভাবসমাধির সময়ে তাঁর কম্পমান শরীর, তুঙ্গ অভিব্যক্তি সত্যিই ছুঁয়ে যায় হৃদয়। বীরেশ্বর বিবেকানন্দ ছবিতে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়কেও ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন স্থানবিশেষে। এ প্রসঙ্গে জিভি আইয়ারের ছবি স্বামী বিবেকানন্দ-এ মিঠুন চক্রবর্তীর কথা বলা জরুরি। তারকার খোলস ছেড়ে শ্রীরামকৃষ্ণের চরিত্রচিত্রণ যে কী উচ্চতায় নিয়ে যেতে পেরেছিলেন তিনি, বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি তিনজন শ্রীরামকৃষ্ণকে রাখলে প্রেমাঙ্কুর মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে সমানে লড়তে পারতেন। বাধ সেধেছে অমনোযোগী স্ক্রিপ্ট। জিভি আইয়ারের সেই ছবিতে স্বামীজি হয়ে ওঠার চিত্রটি ছিল খুব সত্ এবং সাবলীল। অবশ্য তার পেছনে ঐতিহাসিক কারণও আছে। স্বামীজি যে-সময়ে দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের আদর্শে দীক্ষিত। তাঁর অসমাপ্ত কাজ সারা ভারতে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর। কাজেই দক্ষিণী পরিচালকের কাছে, স্বামীজির দৃপ্ত, ব্যক্তিত্বময় দিকটিই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। অভিনেতা সর্বদমন ব্যানার্জিকে আমরা যেভাবে আত্মবিশ্বাসী হয়ে স্বামীজির ভেতরে ঢুকে যেতে দেখেছি, তার পঞ্চাশ শতাংশও পেলাম না দীপ ভট্টাচার্যের কাছ থেকে। আবেগের ওভারটোনে হারিয়ে গেল নরেন থেকে স্বামীজি হয়ে ওঠার পর্ব। হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষার উচ্চারণে এখনও জড়তা রয়েছে দীপের। আমেরিকায় বিদেশিদের সঙ্গে ইংরেজি কথোপকথন এত ব্যাকরণভ্রান্তিতে ভারাক্রান্ত যে, বসে দেখার ইচ্ছেটাই চলে যায়। দক্ষিণের আইয়ার ব্রাহ্মণরা যখন নিজেদের মধ্যে কথা বলেন স্বামীজিকে শিকাগো যাওয়ার অনুরোধ করতে, তখন তাঁরা দক্ষিণী টানে হিন্দিতে কথা বলেন। আধুনিক দর্শকের কাছে পরিচালকের এই অমনোযোগিতা ধরা পড়বেই। তেমনিই ধরা পড়বে, `নমোবিষ্ণু` করে সাজানো শিকাগো ধর্মমহাসভার সেট। থার্মোকলের দেওয়াল, কাঁচা তেলরং আর স্বল্পমূল্যের ভেলভেটের পর্দা, সর্বোপরি এমন একটি আন্তর্জাতিক ধর্মসভায় মাত্র গুটিকয় শ্রোতার উপস্থিতি, কোনও মতেই দর্শকমননকে তুষ্ট করতে পারবে না। কারণ, ইতিমধ্যে দর্শক অনেক ভাল সেট এবং টেকনোলজির ব্যবহার দেখে ফেলেছে। বাংলা ছবিতেই। স্ক্রিনটাইমে স্বামীজি মাত্র দু মিনিট বক্তৃতা দেন। সামনে ক্যামেরা বসিয়ে নিতান্ত দায়সারাভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যটি সেরে ফেলা হয়েছে। তেমনই হতাশ করে শিকাগো শহরে তুষারকণার বদলে পেঁজা তুলো উড়তে থাকার দৃশ্য। নাঃ, নিরাশা প্রায় তলানি ছুঁয়ে যায়।
হতাশ করার উপকরণ অসংখ্য। একটি দুটি উল্লেখ করে সংক্ষেপে সারছি। পরিচালক টুটু সিনহা কম বাজেটে কাজ করেছেন, সেটা কোনও কাজের কথা নয় এ যুগের নিরিখে। এমন একটি ছবি যেখানে, আমেরিকায় শুটিং অথবা বিশ্বাসযোগ্য সেট দরকার ছিল, সেখানে এতটা আপস করা মানে একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও সম্ভাবনাময় বিষয়কে খুন করা। কদিন আগেই লাইফ অফ পাই ছবিতে শ্রীকৃষ্ণের বিশ্বদর্শনের একটি স্মরণযোগ্য থ্রি-ডি নমুনা দেখেছি। এখনও ঘোর কাটেনি। মানছি, টু-ডি তে সেই এফেক্ট আনা অসম্ভব। তবু শ্রীরামকৃষ্ণ যখন নরেন্দ্রনাথকে ঈশ্বর-অনুভব করাচ্ছেন, সেই ঝাপসা তৃতীয় মানের ভিএফএক্স আরও একবার মন খারাপ করে দেয়। মনে হয় আমরা প্রায় তিরিশ বছর পিছিয়ে গেলাম! তবে এ ছবি কিছুটা নম্বর পাবে গবেষণার কাজের জন্য। স্বামীজির সঙ্গে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের দেখা হওয়া, কিংবা জাহাজে জামশেদজি টাটার সঙ্গে কথোপকথন সেই রিসার্চ ওয়র্কেরই অঙ্গ। (দুঃখের বিষয়, জামশেদজি ও স্বামীজির এই দৃশ্যটিও দায়সারাভাবে ক্রোমায় শুট করা)। ভগিনী নিবেদিতার সঙ্গে সম্পর্কের গতিপ্রকৃতিতেও ওই রিসার্চ টিমের হাত আছে। না-হলেও-হয় এমনই একটি সারদা মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন গার্গী রায়চৌধুরী। বিশ্বজিত্ চক্রবর্তী বাদে বাকি কলাকুশলীরা নাটকের গ্রুপের। সবশেষে একটিই কথা, আরও আরও অনেক গুণ বেশি প্রস্তুতি ও অনুশীলন প্রয়োজন ছিল। সততা আর নিষ্ঠার অভাব পরতে পরতে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

http://zeenews.india.com/bengali/entertainment/film-review-the-light-swami-vivekananda_11175.html

No comments: