Follow palashbiswaskl on Twitter

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity Number2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti Basu is dead

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti Devi were living

Monday, August 26, 2013

জেলে বসেই হুইস্কি-সোডা, মুরগি-মটন

জেলে বসেই হুইস্কি-সোডা, মুরগি-মটন

অমিত চক্রবর্তী

রেস্ত থাকলে জেলের ভাতেও ঘি পড়ে!

'ধুর'৷ অর্থাত্‍, শাঁসালো পার্টি৷ আর এদের ঘিরেই রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে রীতিমতো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলছে সমান্তরাল বাণিজ্য-শৃঙ্খল৷ যেখানে অংশীদার সবাই, মুনাফার ভাগও জোটে সকলের বরাতে৷

বিরিয়ানি চাই? কিং সাইজ সিগারেট? বা, নামী ব্র্যান্ডের হুইস্কি? গাঁজা, হেরোইন? সব মিলবে জেলের কুঠুরিতে৷ সৌজন্যে 'ইনচার্জ' আর 'রাইটার'৷ দুই থেকে তিন মাসের জন্য নিলামে এ দু'টি পদ বিলি হয় জেলের সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে৷ 'ইনচার্জ' বা 'রাইটার' পদ দু'টি সরকারি ভাবে স্বীকৃত৷ যে সব সাজাপ্রাপ্ত বন্দির রেকর্ড ভালো, তাদেরই এই পদ পাওয়ার কথা৷ অথচ, আইনের তোয়াক্কা না-করে, নিলাম ডেকে তা দেদার বিলি হচ্ছে৷ বাইরে যারা তোলাবাজি, অপহরণ বা খুনে সিদ্ধহস্ত, হাজতে সেই দাগিরাই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দখল করছে পদ দু'টি৷ নেপথ্যে, মোটা টাকার রফা আর পেশিশক্তির আস্ফালন৷ এই পুরো ব্যবস্থায় জড়িত জেলের আধিকারিক থেকে শুরু করে গেটের সেপাই পর্যন্ত৷

নিলাম ঘিরে এত উত্‍সাহ কেন? নিলামে ওঠা টাকা যেমন অফিসার থেকে আরদালিরা ভাগ করে নেন, তেমনই যারা নিলামে ইনচার্জ বা রাইটার হচ্ছে, তারাও দু'-তিন মাসের 'শাসনকালে' মোটা মুনাফা তুলে নেয়৷ আর এ ক্ষেত্রেই 'ধুর'দের গুরুত্ব বাড়ে৷ যার আওতায় যত বেশি 'ধুর', তার লক্ষ্মীলাভ তত বেশি৷

মাহেশ্বরী বা ভুজিয়াওয়ালারা শ্রীঘরে ঢুকলে ইনচার্জ, রাইটারদের পোয়াবারো৷ এমন 'ধুরে'র প্রত্যাশী হয়েই তো নিলাম ডাকার ঝুঁকি নেওয়া! হিটারে আলাদা রান্না করে তাঁদের সপ্তাহে দু'দিন মাছ, তিন দিন মাংস বা পনির মশালা সার্ভ করতে তত্‍পর ইনচার্জরা৷ প্রায় বিশ বছর আগে 'জেল' যখন 'সংশোধনাগার' হয়েছিল, তখন সরকারি ভাবে ইনচার্জদের দায়িত্বে ছিল বন্দিদের খাবারের দেখভাল, অসুস্থ হলে চিকিত্‍সার ব্যবস্থার মতো কাজ৷ আর রাইটারের মূল দায়িত্ব ছিল বন্দিদের হয়ে চিঠি লেখা, দিনের শেষে বন্দি-সংখ্যা মেলানো৷ এখনও অবশ্য তাঁরা মেলান, তবে অন্য হিসেব৷ এক বন্দির আইনজীবীর কথায়, 'ওদের পয়সা দিলে, জেলে মোবাইল ব্যবহার তো কোন ছার, ল্যাপটপ পর্যন্ত আনিয়ে দেবে সেলে৷' একদিকে 'রহিস' আর অন্য দিকে 'ছাপোষা' বন্দিদের নিয়ে রমরমিয়ে চলছে বাণিজ্য-শৃঙ্খল৷
মুদ্রার অবশ্য উল্টো পিঠও আছে৷ 'পেটি কেসে'র আসামি, যাদের মেরে ফেললেও 'পকেট কাটিং' (অর্থাত্‍ আয়) হবে না, তারা হয়ে যায় 'ভল্যান্টিয়ার'৷ ইনচার্জ আর রাইটারের কথামতো ফাই-ফরমাশ খাটা, 'ধুর'দের রান্না করা, কাপড় কাচা বরাদ্দ তাদের জন্য৷ আবার 'ধুর'রা বাড়াবাড়ি করলে, তাদের জন্য বরাদ্দ শৌচাগার পরিষ্কার, ঝাড়ু দেওয়ার মতো কাজ৷ প্রয়োজনে চড়-চাপাটি তো আছেই৷

ইনচার্জ বা রাইটার পদের নিলাম এবং 'ধুর'দের থেকে প্রাপ্ত টাকার বখরা কর্তারা কে কত পাবেন, তা নির্ধারিত হয় জেলের 'স্টেটাস' বুঝে৷ বড় জেল, বেশি বখরা কর্তাদের৷ যেমন, আলিপুর বা প্রেসিডেন্সি জেলে এখন প্রতিটি 'ফাইলে'র (জেলের একটি ফাইলে ৭০ থেকে ১৫০জন বিচারাধীন বন্দিকে রাখা হয়) জন্য তিন মাসের নিলামের রেট চলছে ২৫-৩০ হাজার টাকা৷ আগেভাগেই 'ধুর' রয়েছে, এমন ফাইলের নিলাম-দর অবশ্যই একটু চড়া৷ নিলাম ডাকার টাকা ভাগ করে দেবে ইনচার্জ ও রাইটার৷ নিলামে প্রাপ্ত টাকার ভাগ জোটে কর্তা থেকে জমাদার, সকলের বরাতে৷ নিলামের পর ফাইলে তেমন বড় কোনও 'ধুর' এলে, তার জন্য উপরি তো আছেই৷ আবার 'ধুর' হাতানোর জন্য চলে কর্তাদের তদ্বির, প্রয়োজনে সেলামি দেওয়ার রেওয়াজও আছে৷ রাজ্যের বড় জেলগুলিতে ২০-২২টি করে 'ফাইল' আছে৷ প্রতিটির জন্য ইনচার্জ এবং রাইটার পদের আলাদা নিলাম হয়৷ অর্থাত্‍, স্রেফ নিলাম থেকেই কর্তাদের পকেট কতটা ভারী হচ্ছে, অনুমান করা কঠিন নয়৷
বন্দিদের টাকা জেলে ঢোকানোর ক্ষেত্রে রয়েছে অলিখিত চুক্তি৷ বড়সড় 'ধুর'কে চমকে-ধমকে দু'-তিন পেটি (লাখ) 'কাটিংয়ে'র ব্যবস্থা হলে তা বাড়ির লোক নিয়ে আসতে পারেন৷ সে ক্ষেত্রে সেপাইকে শ'তিনেক টাকা দিয়ে নিতে হবে 'গেট-পাস'৷ রয়েছে 'হোম ডেলিভারি'র ব্যবস্থাও৷ 'মাড়োয়ারি' (জেলে পয়সাওয়ালাদের এ নামেই পরিচয়) পার্টিদের পেটি আনতে জমাদার বা কোনও সেপাই গিয়ে বাড়ির কলিংবেল বাজাবেন৷ আগেভাগে অবশ্য তাঁদের যাওয়ার খবর চলে আসবে মোবাইল বেয়ে৷ সেই 'দূত' টাকার ব্যাগ জেলে এনে নিজের কমিশন (গড়ে ২০ শতাংশ) সরিয়ে রেখে বাকিটা পৌঁছে দেবেন ফাইলে৷

গ্যাঁটের কড়ি খসিয়ে নিলাম হেঁকে পাওয়া পদ! তাই দায়িত্ব নেওয়ার পর ইনচার্জ এবং রাইটারদের প্রথম কাজই হয় 'ধুর' খোঁজা৷ 'ধুর' না-পেলে পুরোটাই লোকসান৷ তাই কখনও জেলকর্তাদের চাপ দিয়ে, কখনও মিষ্টি কথায় নতুন 'ধুর'দের নিজেদের ফাইলে টানতে কসুর করে না ইনচার্জ বা রাইটাররা৷ মাস তিনেকে নিলামের খরচ তো উঠে আসেই, মুনাফা কখনও বিনিয়োগের দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যায়৷

কারা বিভাগের আইজি রণবীর কুমার অবশ্য বলছেন, 'সরকারি ভাবেই বিচারাধীন বন্দিদের সুবিধার জন্য ইনচার্জ এবং রাইটার পদ রয়েছে৷ কারা ওই পদের যোগ্য দাবিদার, তা দেখার কথা জেল সুপারদের৷ তবে ওই সব পদ নিয়ে কোনও বেআইনি কিছু হচ্ছে বলে অভিযোগ পাইনি৷' প্রশ্ন হচ্ছে, অভিযোগটা করবেন কে? এক আইনজীবীর মোক্ষম প্রশ্ন, 'আরে দাদা, ঘুষের আবার রসিদ হয় নাকি?'

No comments: