Prabir Ghosh has been exposing Tantra Mantra Yantra Business as the President of Juktibadi Andolan in Bengal.He writes on Yoga RSS Branded and traces the history of Yoga.Very good reading!
Palash Biswas
যোগ ও কুলকুণ্ডলিনী
প্রবীর ঘোষ
(সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘ ২১ জুনকে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে। আজ রবিবার প্রথম আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা ভারত সরকারের উদ্যোগে গোটা দেশে দিনটিকে বিশেষ ভাবে পালন করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা, ধর্মীয় সংস্থাও দিনটিকে পালন করেছে। কিন্তু, এই 'যোগ' বিষয়টি কী? কী ভাবেই বা উৎপত্তি হল এই যোগের? তা জানাতেই কলম ধরেছেন প্রবীর ঘোষ। )
'যোগ' হল তন্ত্র সাধনার এক রহস্যময় পথ। যোগী পতঞ্জলি যোগের প্রণেতা। ঋষি বেদব্যাস এই যোগের ভাষ্যকার। এইসব যোগীরা অনাদিনাথ বা শিবকেই যোগ বিদ্যায় উপদেশ দানকারী বলে উল্লেখ করেছেন। শিবই চুরাশি রকমের আসনের শিক্ষা দিয়েছিলেন। শ্রীমদ্ভাগবতের একাদশ স্কন্ধে শ্রীভগবান যোগসাধনের গুণগান গেয়েছেন। গীতায় যোগ মাহাত্ম্য আছে। অতএব, হিন্দু-'উপাসনা' ধর্মে বিশ্বাসীদের কাছে প্রশ্নাতীত পরম সত্য হল 'যোগ'।
মানবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার সংযোগের উপায়ের নাম যোগ। এইজন্য কুলকুণ্ডলিনী জাগ্রত করার কথা বলা হয়েছে যোগে।
যোগ মতে 'কুণ্ডলিনী' শক্তিকে জাগ্রত করতে যোগীকে 'ষট্চক্র' ভেদ করতে হয়। যোগ বা তন্ত্রশাস্ত্র বিশ্বাস করে, প্রতিটি মানব দেহে ছটি চক্র আছে। চক্র ছটির অবস্থান গুহ্যে, লিঙ্গমূলে, নাভিতে, হৃদয়ে, কণ্ঠে ও ভ্রুদ্বয়ের মাঝখানে। ছ'টি চক্রের নাম গুহ্যে মূলাধারচক্র থেকে পর্যায়ক্রমে স্বাধিষ্ঠান, মণিপুর, অনাহত, বিশুদ্ধ ও জ্ঞানচক্র। মস্তিষ্কে আছে সহস্রদল পদ্ম। যোগের বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে মূলাধারচক্রকে একের পর এক ছটি চক্র ভেদ করে কুণ্ডলিনী শক্তিকে মস্তিষ্কে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মাথার খুলির নীচে রয়েছে সহস্রদল পদ্ম কুঁড়ি। কুঁড়ির ওপর ফণা মেলে থাকে সাপ। যার লেজ রয়েছে গুহ্যে। যোগ প্রক্রিয়ার সাহায্যে, বা বলতে পারি তন্ত্র প্রক্রিয়ার সাহায্যে ফণাটি সরিয়ে দিতে সক্ষম হলেই মস্তিষ্কে হাজারটা রঙিন পাপড়ি মেলে ফুটে উঠবে পদ্ম। এই যে সাপ বা মহাশঙ্খিনীশক্তি, ইনিই মহামায়া, মহাশক্তি। পদ্মের কর্ণিকা বা বীজকোষে রয়েছেন ব্রহ্মস্বরূপ শিব।
ষট্চক্র ভেদ করে সাপের ফণা সরিয়ে মস্তিষ্কের সহস্রদল পদ্মকে ফুটিয়ে তুলতে পারলেই নাকি ঘটবে ব্রহ্মদর্শন, মিলবে চির আনন্দ, মিলবে মোক্ষ।
প্রাক্-আর্য বা প্রাক্-বৈদিক যুগে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো ছিল, তা বোঝা যায়। বৈদিক যুগে প্রথম দিকে যোগের প্রতি বিরূপতা থাকলেও পরবর্তীকালে যোগসাধনা বা যোগদর্শন বৈদিক শাস্ত্রে গৃহীত হয়। পতঞ্জলির 'যোগসূত্র' ষড়দর্শনের অন্যতম দর্শন হিসেবে গণ্য হয়। পতঞ্জলি তাঁর সূত্রে যোগ শক্তির মহিমা কীর্তন করেছেন। পতঞ্জলির মতে, যোগ সিদ্ধিতে বা যোগ বিভূতিতে নাকি পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর ভাষা-জ্ঞান লাভ হয়, নিজেকে অদৃশ্য করা যায়, খিদে ও তৃষ্ণা নিবারণ করা, আকাশে ভ্রমণ করা যায়। অন্যের দেহে প্রবিষ্ট হওয়া যায়। ঈষ্ট দেবতার সঙ্গে মিলিত হওয়া যায়। হিন্দু তন্ত্রশাস্ত্রই হোক অথবা বৌদ্ধ তন্ত্রশাস্ত্রই হোক- এরা প্রত্যেকেই যোগ সাধনায় মানবদেহের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছে।
যোগ দর্শনটাই দাঁড়িয়ে আছে ভুল 'অ্যানাটমি' জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে। এই ভুল শারীর বিদ্যে দিয়ে রোগ সারাবার চেষ্টা করলে তার পরিণতি কী হবে ভেবে শঙ্কিত হয়েছি।
প্রচারের যুগে তরমুজের শ্যাম্পু থেকে কুমড়োর বিউটি সোপ সব'ই হৈ-হৈ করে চলে বিজ্ঞাপনে হুলস্থুল ফেলে দিতে পারলে। একই নিয়মে বিজ্ঞাপনে বাজার মাত করেছে নতুন প্রোডাক্ট 'রামদেবের যোগ'।
অষ্টাঙ্গ সিদ্ধ হলে ত্রিলোক ভ্রমণ করা যায়। অর্থাৎ স্বর্গ-মর্ত-পাতাল, বাবা রামদেব যে ভাবে অষ্টাঙ্গ যোগ গাদা-গুচ্ছের টিভি চ্যানেলে শেখাচ্ছেন, তাতে প্লেন কোম্পানিগুলো লালবাতি জ্বাললো বলে।
রামদেব 'NDTV ইন্ডিয়া'র মোকাবিলা অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, তিনি খেচরী মুদ্রা জানেন। অর্থাৎ তার কোনও দিনই মৃত্যু ঘটবে না। চলন্ত ট্রেনের সামনে ছুঁড়ে দিলে টুকরো টুকরো হয়ে গেলেও আবার টুকরোগুলো জোড়া লেগে যাবে। এ যেন ইংরেজি সাইন্স ফিকশন সিনেমা।
(লেখক ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি)
www.srai.org/যোগ-ও-কুলকুণ্ডলিনী/
http://www.bengali.kolkata24x7.com/international-yoga-day.h…
No comments:
Post a Comment