Follow palashbiswaskl on Twitter

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity Number2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti Basu is dead

Dr.BR Ambedkar

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti Devi were living

Wednesday, May 15, 2013

কার্যত থমকে রয়েছে সারদা কাণ্ডের তদন্ত!আজও জেরা হল না সুদীপ্ত-দেবযানীর!নেই পর্যাপ্ত সশস্ত্র পুলিস, কোর্টের রায় এখন মাথাব্যথা স্বরাষ্ট্র দফতরের!সাধন পান্ডের বিস্ফোরক মন্তব্যে সারদা জটে আরও জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী!সারদা কাণ্ডে রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ!রাজনৈতিক চাপে বন্ধ কাগজের নৌকোর প্রদর্শন?পঞ্চায়েত: কাল বৈঠক, 'মতভেদ' রাজ্য, কমিশনে!কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন নয়, প্রশ্নের মুখে রাজ্য!সারদা মামলা গেল নয়া বেঞ্চে!ধনেখালি: হাইকোর্টের নির্দেশ, সিবিআই তদন্ত!দাবি মেনে মোর্চার সঙ্গে সন্ধি মমতার!রাজপথ রণক্ষেত্র, আইন-অমান্যেএ বার গুরুতর জখম পুলিশ-কর্মী!

কার্যত থমকে রয়েছে সারদা কাণ্ডের তদন্ত!আজও জেরা হল না সুদীপ্ত-দেবযানীর!নেই পর্যাপ্ত সশস্ত্র পুলিস, কোর্টের রায় এখন মাথাব্যথা স্বরাষ্ট্র দফতরের!সাধন পান্ডের বিস্ফোরক মন্তব্যে সারদা জটে আরও জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী!সারদা কাণ্ডে রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ!রাজনৈতিক চাপে বন্ধ কাগজের নৌকোর প্রদর্শন?পঞ্চায়েত: কাল বৈঠক, 'মতভেদ' রাজ্য, কমিশনে!কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন নয়, প্রশ্নের মুখে রাজ্য!সারদা মামলা গেল নয়া বেঞ্চে!ধনেখালি: হাইকোর্টের নির্দেশ, সিবিআই তদন্ত!দাবি মেনে মোর্চার সঙ্গে সন্ধি মমতার!রাজপথ রণক্ষেত্র, আইন-অমান্যেএ বার গুরুতর জখম পুলিশ-কর্মী!

আইপিএল থেকে এবারের মতো বিদায় নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স৷ বুধবার রাঁচিতে মরণ-বাঁচন ম্যাচে নাইটরা পুণে ওয়ারিয়র্সের কাছে হারল ৭ রানে৷ এবং ফর্মে ফিরেও এই ম্যাচে খলনায়ক সেই ইউসুফ পাঠান৷

সারদা কাণ্ডে শুনানি নিয়ে অনিশ্চয়তা
সারদা কাণ্ডে করা জনস্বার্থ মামলার শুনানি নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র জানিয়েছেন, তাঁর পক্ষে আর এই মামলার শুনানি চালানো সম্ভব নয়। কারণ তিনি আগামী কাল কলকাতার বাইরে যাচ্ছেন। আর শুক্রবারও তাঁর এজলাসে বসার কোনও নিশ্চয়তা নেই। শুক্রবার কাজ শেষ হওয়ার পর আগামী এক মাসের জন্য গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে। এ কথা শোনার পর আইনজীবি সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির কাছে আর্জি জানান তিনি যেন নতুন কোনও ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি করে দেন যার অন্যতম বিচারপতি হবেন জয়মাল্য বাগচী। তবে সে ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা তিনি দেননি।
প্রসঙ্গত, আইনজীবি সুব্রত মুখোপাধ্যায় আজ প্রধান বিচারপতির এজলাসে যান একটি অভিযোগ জানাতে। মাননীয় কলকাতা হাইকোর্ট আগেই এক নির্দেশে এ কথা বলেন, যত ক্ষণ এই মামলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হচ্ছে, তত দিন সারদার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি 'ফ্রিজ' করে দেওয়া হোক। কিন্তু গত কাল সারদার ৬টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিচালনার দায়িত্ব পায় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। এটি আদের জারি করা নির্দেশের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। তখনই এই কথা বলেন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র। এই ঘটনায় সারদা কাণ্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি নিয়ে বড় সড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হল। কারণ মাত্র ২ দিন সময়ে মামলার সমস্ত বিষয় শুনে রায় দেওয়া কার্যত অসম্ভব বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

বিজেপির মামলা গেল ডিভিশন বেঞ্চে
রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে যে রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একটি মামলা করে বিজেপি। সিঙ্গল বেঞ্চ সেই অভিযোগ শুনতে না চাওয়ায় ডিভিশন বেঞ্চে অ্যাপিল করে তারা। পরে ডিভিশন বেঞ্চ সেই অ্যাপিল গ্রহণ করে। আজই মামলা নথিভুক্ত করা হয়। তালিকা অনুযায়ী এই মামলার শুনানি হবে।
http://www.anandabazar.com/15sironam.html


একতরফা  না সহমত, নয়া বিতর্ক তা নিয়েই
এই সময়: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বৈরথ নতুন মাত্রা পেয়ে গেল মঙ্গলবার৷ ভোটের দিনক্ষণ সহ সমস্ত ইস্যুতেই এ দিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, দু'পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই তারা নির্দেশ জারি করছে৷ রায়ের অব্যবহিত পরে কমিশনের আইনজীবী লক্ষ্মীচাঁদ বিহানি আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এই রায়কে স্বাগতও জানান৷ কিন্ত্ত পরে কমিশনের প্রধান কৌঁসুলি সমরাদিত্য পাল কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন, 'আমি রায়ে সন্ত্তষ্ট নই৷ আমার কাছে কোনও সম্মতি চাওয়া হয়নি৷ আমি কোনও সম্মতি দিইনি৷ রায়ের লিখিত বয়ানে যদি এ কথা বলা হয়, তবে তা দুর্ভাগ্যজনক৷' প্রকারান্তে এর অর্থ, বিচারপতিকেই কাঠগড়ায় তুলে দিলেন সমরাদিত্যবাবু৷ হাইকোর্টের প্রবীন আইনজীবীরা বলছেন, সমরাদিত্যবাবু আদালতের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা নজিরবিহীন না হলেও বিরল৷ শুধু সমরাদিত্যবাবুই নন, আদালতে সমঝোতা নিয়ে আলোচনার হয়েছে শুনে অনেকেই বিষ্মিত, কারণ এজলাসে উপস্থিত থাকলেও তা তাদের কানে আসেনি৷ সন্ধ্যায় হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে রায়ের কপি দেওয়ার পরই বিষয়টি তাদের নজরে আসে৷

রাতে সমরাদিত্যবাবুর বাড়িতে বৈঠক সেরে বেরিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডেও জানিয়ে দেন, 'আমরা কোনও সম্মতি দিইনি৷ আমাদের আইনজীবীরাও কোনও সম্মতি দেননি৷' এই রায়ের বিরুদ্ধে কি সুপ্রিম কোর্টে যাবেন? মীরাদেবীর জবাব, 'আমরা আপাতত রায় পরীক্ষা করছি৷ সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি৷ তবে রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনায় বসতে চেয়েছে৷ আমরা আলোচনায় বসব৷' কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত আইনের ৪২ নম্বর ধারাকে কমিশন আদালতে যে চ্যালেঞ্জ করেছিল তা থেকে তারা সরবে না৷ এর সঙ্গে কমিশনের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে৷ যা খর্ব করছে সংবিধানের ২৪৩ (কে) ধারাকেও৷

অন্যদিকে, রায়ে খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, 'আমরা তাড়াতাড়ি পঞ্চায়েত ভোট চেয়েছিলাম৷ এখন আদালতের রায়ের পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভোটের দিন স্থির করব৷' এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধীদেরও একহাত নেন৷ তিনি বলেন, 'শীতকালে ভোট করতে সরকার আন্তরিক হলেও গোটা প্রক্রিয়াটা বন্ধ করতে ষড়যন্ত্র করেছিল বিরোধীরা৷ তা না হলে অনেক আগেই ভোট হতে পারতো৷ আমরা গত সেপ্টেম্বর থেকেই চেষ্টা করছিলাম৷ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ১০-১৫ বার বৈঠক করেছিলাম৷ এখন বর্ষা হবে,ঝড় হবে কালবৈশাখি হবে৷ ভোটও হবে৷' মুখ্যমন্ত্রী যখন এই প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন তখন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দন্তর উত্সবের মেজাজ৷ লাড্ডু বিলি হয়৷

ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসার উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷ মঙ্গলবারই সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দার্জিলিঙ সফররত রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় ফোনে মীরা পান্ডের সঙ্গে কথা বলেন৷ পরে এক প্রশ্নের উত্তরে মীরাদেবী এই ফোনের কথা স্বীকার করে বলেন, 'ওনারা তো এখানে নেই৷ সকলেই দার্জিলিঙে৷ না ফিরলে বৈঠক কীভাবে হবে? ফোনে কথা হয়েছে৷'

এ দিন আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, জুন-জুলাইয়ের মধ্যে তিন দফায় পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে৷ তবে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভোট করতেই হবে৷ ভোটের দিন এবং জেলাবিন্যাস নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে তিন দিনের মধ্যে সরকার নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে৷ পঞ্চায়েত ভোটের জন্য কমিশন বারে বারে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েনের দাবি করলেও, আদালত অবশ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে সরাসরি কোনও নির্দেশ দেয়নি৷ আদালত জানিয়েছে, 'রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ভোটে মোতায়েনের জন্য রাজ্য পুলিশের সংখ্যা অপর্যান্ত হলে তা পূরণের জন্য সরকার কেন্দ্র বা অন্য রাজ্য থেকে সশস্ত্র বাহিনী আনাবে৷' এমনকী, কমিশনের বুথ পিছু দুই সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েনের দাবিও আদালত সম্পূর্ণ ভাবে মেনে নেয়নি৷ আদালত তার নির্দেশে জানায়, 'অতি স্পর্শকাতর এলাকায় বুথ পিছু দুই সশস্ত্র পুলিশ এবং দু'জন কনস্টেবল দেবে রাজ্য সরকার৷ স্পর্শকাতর এলাকায় বুথ পিছু দু'জন সশস্ত্র পুলিশ দেওয়া হবে৷' কম স্পর্শকাতর এলাকায় ভোটকেন্দ্র পিছু একজন সশস্ত্র পুলিশ এবং একজন কনস্টেবল এবং স্বাভাবিক এলাকায় ভোটকেন্দ্র পিছু একজন সশস্ত্র পুলিশ দেওয়া হবে বলে আদালত জানিয়েছে৷

ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দু'পক্ষের সহমতের ভিত্তিতেই এই বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এ ব্যাপারে সন্ধ্যায় সমরাদিত্যবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, 'যদি সহমতই হয়ে থাকে, তাহলে সোমবার এক ঘন্টা ও মঙ্গলবার এক ঘন্টা শুধু বুথ ভিত্তিক নিরাপত্তা নিয়ে এত কথা হল কেন?' তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করে মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সমরাদিত্যবাবু যদি এ কথা বলেন, তাহলে আমি স্তম্ভিত৷ ওনার পরামর্শ মতোই তো আদালত নিরাপত্তার বিষয়টিতে কিছু পরিবর্তন করল৷'

কমিশনের দাবি ছিল, মনোনয়নের সময় থেকেই ৩০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে৷ কিন্ত্ত, সেই দাবিও আদালত এ দিন খারিজ করে দিয়ে বলেছে, ভোটের সময় টহলদারি, স্ট্রং রুমের সুরক্ষা সহ অন্যান্য পুলিশি ও নিরাপত্তা বন্দোবস্ত ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুযায়ী হবে৷ প্রসঙ্গত, ২০০৮-এ শুধুমাত্র রাজ্যের পুলিশ মোতায়েন করেই ভোট হয়েছিল৷ ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, ৪০০ জন পর্যবেক্ষকের মধ্যে যে ১৩৪ জনের নামের তালিকা কমিশনকে এখনও পাঠানো হয়নি, তা তিন দিনের মধ্যে সরকারকে পাঠাতে হবে৷ সহকারি সচিব এবং তার উপরের পদমর্যাদার অফিসারদের পর্যবেক্ষক করা যাবে৷

এ দিন আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চ‌ট্টোপাধ্যায় বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কমিশন সরকারকে চিঠি দেয়৷ অথচ, তার আগে কমিশন সংবেদনশীল এলাকার কোনও মানচিত্রই তৈরি করেনি৷ তিনি জানান, কমিশন সম্প্রতি বিভিন্ন জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, ১৫ মে-র মধ্যে সংবেদনশীল এলাকার তালিকা পাঠানোর জন্য৷ বিমলবাবুর প্রশ্ন, সংবেদনশীল এলাকার তালিকা তৈরির আগেই সেপ্টেম্বর মাসে কমিশন কী ভাবে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইল৷ প্রধান বিচারপতি তখন সমরাদিত্যবাবুর কাছে জানতে চান, কোন তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছিল, যেখানে কমিশন বলছে রাজ্যে পুলিশের সংখ্যা কত সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার আগে কিছু জানানো হয়নি৷ সমরাদিত্যবাবু জানান, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপাররা সম্ভাব্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছিল, তারই ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছিল৷ জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, সম্ভাব্য প্রয়োজনীয়তার কোনও অর্থ হয় না৷ তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা যেহেতু রাজ্যের এক্তিয়ার, তাই অবাধ, স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা তারই দায়িত্ব৷ তিনি এ ব্যাপারে কমিশন ও সরকারকে বৈঠকে বসার পরামর্শ দেন৷

আদালত কমিশনের কাছে জানতে চায় স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা কত৷ সমরাদিত্যবাবু জানান, ৫৭ হাজারের কিছু বুথের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বুথই অতি স্পর্শকাতর এবং স্পর্শকাতর৷ এরই প্রেক্ষিতে আদালত জানতে চায় স্বাভাবিক এলাকার বুথে নিরস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করে ভোট করতে কমিশন রাজি কি না৷ সমরাদিত্যর জবাব, 'না৷' এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ভোটকেন্দ্র এবং বুথের বাইরেও ভোটের সময় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করতে হয়৷ প্রধান বিচারপতির জবাব, সেই চাহিদা রাজ্য সরকার পূরণ করবে৷ ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোটে বুথের বাইরে প্রচুর হিংসাত্মক ঘটনা ঘটার কথা সমরাদিত্যবাবু উল্লেখ করলে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, বুথের বাইরের কোনও বিষয় আদালতের বিচার্য নয়৷

চিটফান্ড কাণ্ডে আত্মঘাতী আরও একজন। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পেরে নদিয়ার শান্তিপুরে আত্মঘাতী এক এজেন্ট । আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার নবদ্বীপে সারদা গোষ্ঠীর দফতরে তল্লাসি চালায় পুলিস। বারসত থেকে সম্প্রীতি প্রোজেক্টস নামে একটি ভুঁই ফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার কর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।  মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়।
 
আমানতকারীদের চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন রোজভ্যালি সংস্থার এক এজেন্ট। মঙ্গবার সকালে সুফল ধারা নামে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাড়ি শান্তিপুরের বাঘ আচড়া এলাকার মাঠপাড়ায়। সারদা কাণ্ডের পর আমানতকারীরা টাকা ফেরত চেয়ে ছিলেন সুফল ধারার কাছে। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে নিজের মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোনও বিক্রি করে দেন তিনি। তবে সব টাকা ফেরত দেওয়া হয়ে ওঠেনি।
 
 
আদালতের নির্দেশে নবদ্বীপের সারদা গোষ্ঠীর দফতরে তল্লাশি চালালো পুলিস। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নবদ্বীপ ও দুর্গাপুর নিউটাউনশিপ এলাকার পুলিস যৌথ অভিযান চালিয়ে  গ্রেফতার করে সারদার আধিকারিক মানস ভট্টাচার্যকে। বর্তমানে পুলিসি হেফাজতে থাকা মানস ভট্টাচার্যকে নিয়ে এদিন দফতরে তল্লাশি চালায় পুলিস। সংস্থার বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
 
 
সম্প্রীতি প্রোজেক্টস লিমিটেড নামে সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিসে অভিযোগ জানান বেশ কিছু আমানতকারী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় সংস্থার এমডি শেখ ওবাইদুল্লাকে। তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়েছে। পুলিস বিষয়টির তদন্ত করছে।


বেসরকারি লগ্নি সংস্থা সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে দায়ের  করা জনস্বার্থ মামলা গেল হাইকোর্টের নতুন ডিভিশন বেঞ্চে৷ কলকাতার বাইরে যাওয়ায় এই মামলার আগামীকালের শুনানিতে থাকতে পারছেন না প্রধান বিচারপতি অরুন মিশ্র৷ প্রধান বিচারপতি অরুণ কুমার মিশ্রের নির্দেশে শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে৷


আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, বুধবার তিনি প্রধান বিচারপতির এজলাসে একটি অভিযোগ জানাতে যান৷ কলকাতা হাইকোর্ট আগে এক নির্দেশে বলে, যতদিন সারদা মামলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হচ্ছে তত দিন সারদার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট 'ফ্রিজ' করে দিতে হবে৷ কিন্তু মঙ্গলবার, সারদার ৬টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দেয় বিধাননগর আদালত৷ এটি হাইকোর্টের জারি করা নির্দেশের পরিপন্থি বলে দাবি করেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের৷ তিনি জানিয়েছেন, এ কথা প্রধান বিচারপতিকে জানাতে গেলে তিনি বলেন বৃহস্পতিবার তিনি কলকাতায় থাকছেন না৷ তাই সারদা মামলার শুনানিতে থাকতে পারবেন না৷ শুক্রবারও তাঁর এজলাসে বসা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে৷ শুক্রবার কাজ শেষ হওয়ার পর হাইকোর্টে গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে৷ এ কথা শোনার পর আইনজীবি সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির কাছে আর্জি জানান তিনি যেন নতুন কোনও ডিভিশন বেঞ্চ তৈরি করে দেন যার অন্যতম বিচারপতি হবেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী৷ তবে সে ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা প্রধান বিচারপতি দেননি৷ 
এরপরই, অরুণ মিশ্রের নির্দেশে সারদা মামলার শুনানি নতুন ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়৷নতুন ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলে যাওয়ায় সারদা মামলার ফয়সলা হতে দেরি হতে পারে বলে আশঙ্কা আইনজীবী মহলের একাংশের৷ 
বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে বৃহস্পতিবারের জন্য বিচার্য বিষয়ের তালিকা আগে থেকেই ঠিক ছিল৷ নতুন করে সারদা মামলার শুনানি সেই বেঞ্চে দেওয়ায়, বৃহস্পতিবারই শুনানি হবে কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হল বলে মনে করছে আইনজীবী মহলের একাংশ৷  


চিটফান্ড নিয়ে নির্মিত সিনেমা `কাগজের নৌকোর` প্রদর্শন বন্ধ হয়ে গেল রাজ্যের সর্বত্র। রাজনৈতিক চাপের কারণেই ছবিটির প্রদর্শন বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ ছিবির পরিচালক পার্থসারথি জোয়ারদারের। তিনি জানিয়েছেন, "বিভিন্ন হলে প্রসর্শন বন্ধ।" 

এমনকী নন্দনেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, `কাগজের নৌকোর` প্রদর্শন। পরিচালকের অভিযোগ, "নন্দন-১ এ সব নিয়ম মেনে ছবি জমা দিয়েছিলাম। শুনেছি আজ পর্যন্ত প্রিভিউ কমিটি ছবিটি দেখেনি।" এইভাবে একটা ছবিকে খুন করা হল বলে মন্তব্য করেছেন পার্থ বাবু। 

এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা। নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, ``সাম্প্রতিককালেরর চিটফান্ড কাণ্ডের সঙ্গে এই ছবির প্রেক্ষাপট মিলে গিয়েছে। ফলে শাসক দল চাইছে না এক্ষুনি ছবিটা মুক্তি পাক।" 

রাজপথ রণক্ষেত্র, আইন-অমান্যেএ বার গুরুতর জখম পুলিশ-কর্মী
বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট মোড়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাত।---পিটিআই।
এই সময়: এপ্রিলের গোড়ায় চার বাম ছাত্র সংগঠনের ডাকা আইন-অমান্য কর্মসূচিতে মৃত্যু হয়েছিল এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্তের৷ পুলিশের মারেই সুদীপ্তর মৃত্যু হয়েছে অভিযোগে সরগরম হয় রাজ্য-রাজনীতি৷ মঙ্গলবার শহরে ফের আইন-অমান্যের কর্মসূচি ছিল ডিএসও-সহ এসইউসিআইয়ের কয়েকটি গণ-সংগঠনের৷ এ দিনের আইন-অমান্যে আন্দোলনকারীদের হাতেই গুরুতর জখম হলেন এক পুলিশকর্মী৷ আইন-অমান্যকারীদের আক্রমণে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন আদিত্য মুখোপাধ্যায় নামে শ্যামপুকুর থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর৷ দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমের ইনটেনসিভ ট্রমা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন বছর পঞ্চাশের আদিত্যবাবু৷ ওই এসআই-কে খুনের চেষ্টার অভিযোগে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ তিনি ছাড়াও আরও ৩-৪ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন বলে লালবাজারের দাবি৷ এখনও পর্যন্ত এ দিনের ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ ধরপাকড় চলবে বলেই পুলিশ সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে৷ আইন-অমান্য কর্মসূচির জেরে কলেজ স্ট্রিট-সহ মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা এ দিন বেশ কিছুক্ষণের জন্য কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে৷ দুর্ভোগের শিকার হতে হয় অগুনতি সাধারণ মানুষকে৷ 

যদিও এসইউসিআই নেতৃত্ব 'বর্বরতা'র অভিযোগ তুলেছেন সেই পুলিশের বিরুদ্ধেই৷ প্রতিবাদে আজ, বুধবার ফের পথে নামছে এসইউসিআই৷ কাল, বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে ডিএসও৷ মঙ্গলবারের আইন-অমান্য কর্মসূচির মাঝপথে ছাত্র-যুব-মহিলা সংগঠনের কর্মীদের উপর পুলিশ নির্বিচারে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ করেছেন এসইউসিআই নেতৃত্ব৷ কলকাতা পুলিশের বিশেষ অতিরিক্ত কমিশনার (সদর) জাভেদ শামিমের অবশ্য দাবি, 'আন্দোলনকারীরা প্রথমে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যারে জমায়েত হন৷ সেখান থেকে তাঁরা মিছিল করে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত যাবেন বলে জানিয়েছিলেন৷ তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছিল, কলেজ স্কোয়্যার থেকে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট হয়ে বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট-ফিয়ার্স লেনের সংযোগস্থল পর্যন্ত যেতে৷ সেই অনুরোধ প্রথমে মেনে নিয়েও আন্দোলনকারীরা পরে প্রতিশ্রুতিভঙ্গ করেন৷ মিছিলের গতিপথ বদলে পুলিশকে হেনস্থা করতে শুরু করেন তাঁরা৷' উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতেই লাঠি চালাতে হয় বলে ব্যাখ্যা লালবাজারের৷

এসইউসিআই (কমিউনিস্ট)-এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির অফিস সম্পাদক মানব বেরার তরফে দেওয়া প্রেস-বিবৃতিতে অবশ্য বলা হয়েছে, 'অবিলম্বে স্কুলে পাশ-ফেল চালু ও যৌনশিক্ষা বাতিল, নারী-নিগ্রহ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিটফান্ড জালিয়াতিতে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ-লক্ষ মানুষের ক্ষতিপূরণ ও মদতদাতা-সহ সমস্ত অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবিতেই ডিএসও-সহ এসইউসিআইয়ের কয়েকটি গণ-সংগঠন এ দিন আইন-অমান্যের ডাক দিয়েছিল৷ বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটের মোড়ে আন্দোলনকারীদের ঘিরে মারতে শুরু করে পুলিশ৷' হাজার পাঁচেক কর্মী এ দিনের কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিলেন দাবি করে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, 'আহত কর্মীরা রাস্তায় পড়ে গেলেও পুলিশ মারতে থাকে৷'

অন্য দিকে, লালবাজারের তরফে দাবি করা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের হাতে-থাকা সংগঠনের পতাকার লাঠি দিয়েই পুলিশকে আঘাত করা হয়৷ এ ভাবেই মারা হয় আদিত্যবাবুকে৷ সেই সঙ্গে কোনও ইট বা পাথর দিয়েও তাঁর মাথার পিছনে মারা হয়৷ গভীর ক্ষত নিয়ে ওই এসআইকে প্রথমে শ্যামপুকুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়৷ আঘাত গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ কলকাতার নার্সিংহোমে৷ এ দিন বিকেলে তাঁকে দেখতে নার্সিংহোমে যান পুলিশ কমিশনার সুরজিত্ কর পুরকায়স্থ৷ 

কার্যত থমকে রয়েছে সারদা কাণ্ডের তদন্ত। আগামীদিনে তদন্ত ভার কোন সংস্থার হাতে যাবে সে বিষয় নিয়েই কার্যত দোলাচলে বিধান নগর পুলিস কমিশনারের কর্তারা। গত তিন দিনের মত আজও সম্ভবত বিধান নগর কমিশনারের গোয়েন্দা জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে না সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে। আজই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপ থানার পুলিসের জেরা করার কথা ছিল তাদের। কিন্তু সুদীপ্ত সেনের আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে সেই জেরা আজ হচ্ছে না বলেই খবর।


গত দুদিনের মত মঙ্গলবারও পুলিসি জেরা হল না সুদীপ্ত-দেবযানীর। দিনভর সারদার সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ব্যস্ত রইলেন গল্পের বইয়ে। আর অসুস্থ বোধ করায় এসএসকেএমে একাধিক মেডিক্যাল টেস্ট হল সুদীপ্ত সেনের। 

তবে এদিনই সুদীপ্ত সেনের ছটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে আদালত। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে শুধুমাত্র টাকা জমা করা যাবে। আদালতের তরফে টাকা তোলার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। 

সোমবারই সারদা গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে বিধাননগর মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হন সুদীপ্ত সেনের আইনজীবী। মঙ্গলবার ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারক সারদার ছটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে শুধুমাত্র টাকা জমা দেওয়ার অনুমতি দেন। এরমধ্যে রয়েছে সেক্টর ফাইভে ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের শাখায় পাঁচটি এবং বেহালায় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া শাখার অ্যাকাউন্ট।

 মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ সুদীপ্ত সেনকে নিয়ে বেরোয় বিধাননগর পুলিসের একটি দল। সল্টলেকের এইচ এ একশো পনেরো নম্বর বাড়িতেই থাকতেন সুদীপ্ত সেন।  ওই বাড়ি থেকে  কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেন গোয়ন্দারা।  এরপর  সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সুদীপ্ত সেনকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। সেখানে তাঁকে পরীক্ষা করেন কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিত‍সকেরা। ইসিজি, ইউএসজি সহ অন্যান্য মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হয় তাঁর। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক হাসপাতালে ছিলেন সুদীপ্ত সেন। তবে পরীক্ষায় অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়েনি।

মঙ্গলবার বিকালে বিধাননগর কমিশনারেটে ডেকে পাঠানো হয় দেবযানীর বোনকে। সারদা পরিচালিত শিলিগুড়ির স্কুলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। সেবিষয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।


হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯৭ হাজারের বেশি সশস্ত্র পুলিস প্রয়োজন। যদিও, রাজ্যের পক্ষে মাত্র ৩৫ হাজার সশস্ত্র পুলিস ভোটের ডিউটিতে ব্যবহার করা সম্ভব হবে। তিন দফার ভোটে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করেও, এই পরিমাণ পুলিস দিয়ে ভোট করানো অসম্ভব বলে মনে করছে স্বরাষ্ট্র দফতর। ভিন রাজ্যের পুলিস এনেও এই ফারাক মেটানো যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। 
 
ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ মেনে ভোট করলে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯৭ হাজারের বেশি সশস্ত্র পুলিস প্রয়োজন। রাজ্যে পঞ্চায়েতে বুথের সংখ্যা ৫৭ হাজার ১৫টি। এই মুহূর্তে পঞ্চাশ শতাংশই অতি স্পর্শকাতর বুথ, যার সংখ্যা ২৮ হাজার ৫০০ ।

মোট বুথের ২০ শতাংশ স্পর্শকাতর। তার সংখ্যা ১১ হাজার ৪০০। স্বাভাবিক বুথ রয়েছে ৩০ শতাংশ। তার সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। 

কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, তিন ধরনের বুথে সশস্ত্র পুলিস প্রয়োজন হবে যথাক্রমে , 
 
১) অতি স্পর্শকাতর
২) স্পর্শকাতর
৩) স্বাভাবিক

সমস্যা হল রাজ্যে এই মুহূর্তে সশস্ত্র পুলিসের সংখ্যা ৫৫ হাজার ৩০ জন। স্বরাষ্ট্র দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, এর মধ্যে ৩০ শতাংশ পুলিসকর্মীকে রোজকার ডিউটিতে কাজে লাগাতে হয়। অর্থাত্‍ বিভিন্ন  সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক, থানার ডিউটি, ভিআইপিদের নিরাপত্তা এবং এলাকার আইন-শৃঙ্খলার কাজে বহাল রাখতে হয়। অর্থাত্‍ এই পরিমাণ রোজকার ডিউটিতে থাকবে। 

বাকি যা থাকবে তার চার শতাংশ অসুস্থতা, ব্যক্তিগত বা পারিবারিক প্রয়োজনে অনুপস্থিত থাকবেন, এটা ধরে নেওয়া হয়। 

রাজ্যে সশস্ত্র মহিলা পুলিস কর্মীর সংখ্যা ১৮২৬। সাধারণত এদের


 নির্বাচনী ডিউটিতে রাখা হয় না। 


কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসছে রাজ্য সরকার৷ প্রসঙ্গত, শুক্রবারের মধ্যে কমিশনের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যকে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে, ভোটের জেলা বিন্যাস, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, এসব জরুরি বিষয় স্থির করতেই এই বৈঠক৷ মহাকরণ সূত্রের খবর, বৈঠকে থাকবেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় ও পঞ্চায়েত সচিব সৌরভ দাস৷ পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে একাধিক প্রস্তাব তৈরি করে রেখেছে রাজ্য৷ তিনটি সম্ভাব্য দিনও নির্দিষ্ট করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সেইসব প্রস্তাব তুলে ধরা হবে৷ মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দার্জিলিং গিয়েছেন মুখ্যসচিব৷ মহাকরণ সূত্রে খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের বৈঠকের জন্য দ্রুত শহরে ফিরছেন তিনি৷ তবে বৈঠকের আগেই বেশ কয়েকটি প্রশ্নে দু'পক্ষের মতবিরোধের সম্ভাবনা সামনে চলে এসেছে বলে খবর৷ জানা গিয়েছে, ভোটের দিনক্ষণ, জেলা বিন্যাস, স্পর্শকাতর তালিকা স্থির করার ইস্যুতেই মতের অমিল হচ্ছে দুপক্ষের৷
রাজ্য নির্বাচন কমিশন চায় ভোট হোক জুলাই মাসে৷ ভোটের সম্ভাব্য তারিখ ২, ৬ ও ১০ জুলাই৷ গণনার সম্ভাব্য তারিখ ১৩ জুলাই৷ সূত্রের খবর, সরকার চায় ভোট হোক ২৪, ২৮ জুন ও ১ জুলাই৷ গণনা হোক ৪ জুলাই৷  
বৃহস্পতিবার সকালে এনিয়ে জরুরি আলোচনা মহাকরণে৷ বিধানসভা অধিবেশন শুরু ৫ জুলাই৷ ৭ তারিখ থেকে শুরু রমজান মাস৷ মহাকরণ সূত্রের খবর, তাই সরকার চায় ৫ জুলাইয়ের আগে ভোট শেষ করতে৷
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে ২২ মার্চ পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জেলাবিন্যাসও ঘোষণা করে দেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷সরকার চেয়েছিল, প্রথম দফায় ভোট হোক ১৪জেলায়, দ্বিতীয় দফায় শুধু কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদ, মালদা ও উত্তর দিনাজপুরে৷সমালোচনার মুখে ২৬ মার্চ পঞ্চায়েতমন্ত্রী ঘোষণা করেন, প্রথম দফায় দক্ষিণবঙ্গের ১২টি জেলায় এবং দ্বিতীয় দফায় উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় ভোট হবে৷ ওইদিনই ফের সিদ্ধান্ত বদল করে সরকার জানায়, মুর্শিদাবাদে প্রথম দফায় ভোট হবে না৷ দ্বিতীয় দফায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে ভোট হবে সেখানে৷  অন্যদিকে কমিশনের প্রস্তাব, প্রথম দফায় ভোট হোক কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর  দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমে।দ্বিতীয় দফায়  উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া ও হুগলি এবং তৃতীয় দফায় হাওড়া, পঃ মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান
রাজ্যের স্পর্শকাতর বুথ ও ভোটকেন্দ্রের যে তালিকা আদালতে জমা দিয়েছে কমিশন, মতবিরোধ দেখা দিয়েছে তা নিয়েও৷ পঞ্চায়েতমন্ত্রীর সাফ জবাব, জেলার পুলিশ সুপাররা স্বরাষ্ট্র দফতেরর আওতায়৷ নির্বাচনের দিন ঘোষণনার পর তাঁরা নির্বাচন কমিশনের আওতায় চলে আসেন৷ কিন্তু ভোটের দিন ঘোষণার আগে স্বরাষ্ট্র দফতরেকে এড়িয়ে কীভাবে তাঁদের কাছ থেকে এই তালিকা চাইল কমিশন? এই তালিকা তৈরির কাজ তো  স্বরাষ্ট্র দফতরের৷
এ প্রসঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব তাপস রায় জানিয়েছেন,  রাজ্য সরকার যদি মনে করে, আমরা আইন মেনে কাজ করিনি, তাহলে তারা আমাদের চিঠি দিয়ে জানাক, আমরা উত্তর দেব৷ সব মিলিয়ে বৈঠকের আগেই রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মতবিরোধের সম্ভাবনা সামনে আসায় বৃহস্পতিবারের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে সব মহল৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36717-2013-05-15-13-07-57

কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার না করার অবস্থানে অনড় রাজ্য সরকার৷ মহাকরণ সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পঞ্চায়েত ভোটে ব্যবহার করার কোনও সম্ভাবনা নেই৷ তারা যে কাজ করছিলেন, তাই করবেন৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের এহেন অনড় মনোভাবের প্রেক্ষিতে নানা মহল প্রশ্ন তুলছে,  কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার প্রয়োজন কি একদমই পড়বে না? 
পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রধান বিচারপতি অরুণ কুমার মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, অতি স্পর্শকাতর বুথে দিতে হবে দু'জন করে সশস্ত্র পুলিশ আর দু'জন করে কনস্টেবল৷ স্পর্শকাতর বুথে দু'জন করে সশস্ত্র পুলিশ৷ কম স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একজন করে সশস্ত্র পুলিশ ও একজন করে কনস্টেবল দিতে হবে৷ আর স্বাভাবিক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেবল একজন সশস্ত্র পুলিশ৷ 
রাজ্য নির্বাচন কমিশন আদালতে জানিয়েছে, রাজ্যে অতি স্পর্শকাতর ও স্পর্শকাতর মোট বুথের সংখ্যা ৩২, ৩৮৪ অর্থাত্‍ ৫৬.৮ শতাংশ৷ কম স্পর্শকাতর ও সাধারণ বুথের সংখ্যা ২৪,৬৩১ অর্থাত্‍ ৪৩.২ শতাংশ ৷ 
ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, নির্দেশ মতো পুলিশি ব্যবস্থা করতে গিয়ে যদি দেখা যায়, রাজ্য পুলিশ কম পড়ছে, তাহলে সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী বা ভিন রাজ্যের পুলিশ আনা হবে৷ তবে কোথা থেকে আনা হবে, তা রাজ্যই ঠিক করবে৷ 
স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশ মতো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে গেলে রাজ্য পুলিশের বাইরে ১০০ থেকে ১৫০ কোম্পানি সশস্ত্র পুলিশের প্রয়োজন পড়বে৷ কিন্তু ভিন রাজ্য থেকে চাহিদা মতো পুলিশকর্মী পাওয়া অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে৷ প্রতিবেশী রাজ্যগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি মাওবাদী সমস্যায় জর্জরিত, তাই সেখান থেকে চাহিদামতো পুলিশ কর্মী নাও পাওয়া যেতে পারে৷ বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসম ও ছত্তিসগঢ় থেকে যদি ২০ কোম্পানি করেও সশস্ত্র বাহিনী পাওয়া যায়, তাতেও ঘাটতি মিটবে না৷ সেক্ষেত্রে ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন পড়বে৷ জঙ্গলমহলে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কেন রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যবহার করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র৷ তিনি বলেছেন, জঙ্গলমহলে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করতে সরকার ভয় পাচ্ছে কেন? কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে থাকছে না বলে উল্লসিত তৃণমূলের লোকজন কোচবিহারে তাঁদের পার্টিকর্মীদের ওপর এর মধ্যেই চড়াও হচ্ছেন, হামলা করছেন বলে অভিযোগ জানান তিনি৷  

তবে বিরোধীরা কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সুর চড়ালেও সরকার ভিন রাজ্য থেকে সশস্ত্র পুলিশ এনেই ভোট করানোর ব্যাপারে সর্বতোভাবে চেষ্টা করছে বলেই সূত্রের খবর৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36718-2013-05-15-13-39-27

রাজ্য সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে চিট ফান্ড ইস্যুতে সরব হলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পান্ডে। তাঁর অভিযোগ, দুবছর ধরেই সারদার মত চিটফান্ডের রমরমার বিরুদ্ধে কেন্দ্র রাজ্য সব পক্ষকেই জানিয়ে আসছিলেন তিনি। এমনকি চিটফান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দলও তৈরি করেছিল তাঁর দফতর। কিন্তু সেই দলকে কার্যত কোনও কাজেই লাগায়নি সরকার। 

শুধু সতর্ক করাই নয়, আমানতকারীদের বাঁচাতে এক বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দলও তৈরি করেছিল তাঁর দফতর। কিন্তু সরকারের নির্দেশের অভাবে সেই দল কোনও কাজই শুরু করতে পারেনি। বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সাধন পান্ডে। 

সারদাকাণ্ডের জেরে সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসেছেন অসংখ্য মানুষ। প্রতারকদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে । তাঁদের দেখেই সারদায় টাকা রাখার ভরসা পেয়েছিলেন বলে দাবি করছেন আমানতকারীরা । বিরোধীদের তরফ থেকে এব্যাপারে অনেকদিন আগে থেকেই সরকারকে সতর্ক করার দাবি উঠেছে। সেবি, আরবিআইয়ের মত সংস্থাগুলি এবিষয়ে সতর্ক করেছিল রাজ্যকে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, গোটা ঘটনা তিনি জেনেছিলেন ১৫ এপ্রিলের পর।

চিটফান্ড কাণ্ডে ইতিমধ্যেই তাঁর দলের নেতা মন্ত্রীদের ক্লিনচিট চিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগের সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে মুখরক্ষা করতে চাইছে সরকার। কিন্তু সাধন পান্ডের এই বক্তব্য পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য সরকারকে যে আরও অস্বস্তিতে ফেলে দিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।



এই সময়: সারদা গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৬টি অ্যাকাউন্টে আপাতত টাকা জমা করা যাবে৷ সুদীন্ত সেনের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিল বিধাননগর মহকুমা আদালত৷ এই অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে ৫টি ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের এবং অন্যটি সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার৷ ফলে সারদা কোম্পানির যে এজেন্টরা এখনও পলিসির টাকা জমা দিতে আগ্রহী, তারা ওই ব্যাঙ্কগুলিতে টাকা জমা করতে পারবেন৷

মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ সুদীন্ত সেনকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান কমিশনারেটের গোয়েন্দারা৷ সোমবার রাতে জেরার সময় সুদীন্ত পুলিশকর্তাদের জানান, তিনি অসুস্থ৷ জেরা বন্ধ করে রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর হাসপাতালে৷ চিকিত্সকরা তাঁর নানা রকম শারীরিক পরীক্ষার নির্দেশ দেন৷ এদিন সকালে সেই পরীক্ষা করাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকে এম৷ তবে পরীক্ষা করে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি৷

মঙ্গলবার বিধাননগর আদালতে সুদীন্ত সেনের আইনজীবী সমীর দাস তাঁর আবেদনে জানান, গত ১০ তারিখ থেকে ১৬ তারিখ এবং তার পরে যে টাকা বিভিন্ন আমানত বাবদ আদায় হয়েছে, তা এজেন্টরা জমা করতে পারছেন না৷ এই আবেদনের ভিত্তিতেই আদালত ব্যাঙ্কের ডেবিট ফ্রিজ করলেও জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও রকম বিধিনিষেধ আরোপ করেনি৷ সারদা মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা সারদার সব অ্যাকাউন্টের ডেবিট অর্থাত্ টাকা তোলার ক্ষমতা ফ্রিজ করে দিয়েছিলেন৷ এখনও পর্যন্ত সারদার প্রায় ২৫০টি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গেলেও, অধিকাংশ অ্যাকাউন্টেই কোনও টাকার হদিশ পাওয়া যায়নি৷ ৫০টির মতো অ্যাকাউন্টে জিরো ব্যালান্স মিলেছে৷ একটি অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ টাকার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে৷ তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, জানুয়ারি মাস থেকে সারদা সংস্থায় টাকা জমা পড়ার বিষয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলেও সুদীন্ত সেন পালিয়ে যাওয়া পর্যন্ত টাকা তোলা হয়েছিল৷ ফলে সেই টাকা কী ভাবে জমা করতে হবে, তার নির্দেশ আদালত এদিন দিয়ে দিয়েছে৷

এদিন ভবানী ভবনে অর্থলগ্নী সংস্থাগুলির কাজকর্ম নিয়ে তদন্ত করার জন্য গঠিত সিটের বৈঠক হয়৷ সেখানে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়৷ বৈঠকে মূলত সি আই ডির আধিকারিকরাই হাজির ছিলেন৷


সারদা-কাণ্ডের তদন্তে এ বার রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠল। হাইকোর্টের বিচারপতির কাছে সরাসরি এই অভিযোগ জানিয়েছে ডিরেক্টরেট অফ এনফোর্সমেন্ট। আগামিকালের মধ্যে এ বিষয়ে রাজ্যকে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার, সারদা-কাণ্ডের সিবিআই তদন্ত নিয়ে শুনানি হবে। 

সারদার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যের তরফে আলাদা করে কোনও মামলাই দায়ের করা হয়নি। স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি হলেও তদন্ত হয়েছে শুধুমাত্র আমানত ও সম্পত্তির হিসেব নিয়ে।এই অবস্থায় এ বার রাজ্যের বিরুদ্ধে সরাসরি তদন্তে সহযোগিতা না করার অভিযোগ তুলল কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন ডায়রেক্টরেট অফ এনফোর্সমেন্ট। 

এ দিন আলাদাভাবে বেশ কয়েকটি তাত্‍পর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন বিচারপতিরা। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়ার মানে এই নয় যে রাজ্যের তদন্তকারি সংস্থার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা। এই আর্থিক দুর্নীতির ব্যপ্তি এবং গভীরতার জন্যই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার কথা উঠছে। প্রতিদিন আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এ রাজ্যের বাইরেও একাধিক জায়গায় এই সংস্থা মানুষের টাকা নিয়ে নয়ছয় করেছে। একইসঙ্গে বিচারপতিরা জানতে চান, অন্য কোনও রাজ্য সিবিআইকে ইতিমধ্যেই তদন্তভার দিয়েছে কিনা?

ডিরেক্টরেট অফ এনফোর্সমেন্টের তোলা অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যকে, এবং অন্য রাজ্যে তাদের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে সিবিআইকে বুধবার আদালতের কাছে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।  

বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি। অসম ও ত্রিপুরার পর এ রাজ্যে অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা নয়ছয়ের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সম্ভাবনা ওইদিন খতিয়ে দেখবেন বিচারপতিরা।


দাবি মেনে মোর্চার সঙ্গে সন্ধি মমতার



দাবি মেনে মোর্চার সঙ্গে সন্ধি মমতার
মঙ্গলবার দার্জিলিঙের পথে সহাস্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। -- সঞ্জয় শা
দার্জিলিং: পাহাড়ের পথে পথে সেই উচ্ছ্বাস আর দেখতে পেলেন না মমতা৷ কিন্ত্ত তাতে তাঁর মোর্চার সঙ্গে সন্ধিতে ব্যাঘাত ঘটল না৷ বেআইনি আমানত ব্যবসা, হাইকোর্টে একের পর এক মামলায় জেরবার মুখ্যমন্ত্রী অন্তত পাহাড়ে সুস্থিতি ধরে রাখতে চাইলেন৷ প্রধান সচিব নিয়োগে মোর্চার দাবি নেমে নিয়েছিলেন আগেই৷ মঙ্গলবার দার্জিলিঙে পৌঁছেই বিমল গুরুংদের সঙ্গে বৈঠকে জিটিএ-তে কর্মী নিয়োগ, দন্তর হস্তান্তরের নানা দাবি মেনে, এমনকী মোর্চার নেতা-কর্মীদের উপর থেকে পুরোনো মামলা প্রত্যাহার ককরার আশ্বাস দিয়ে সহযোগিতার বার্তা দিলেন৷ যিনি মাত্র সাড়ে তিন মাস আগে দার্জিলিঙে এসে মোর্চার বেয়াদবিতে বিরক্ত হয়ে নিজেকে 'রাফ অ্যান্ড টাফ' দাবি করেছিলেন, তিনিই এদিন সেই ঘটনাকে চক্রান্ত বলে লঘু করে দিলেন৷

সেই চক্রান্ত কে করেছেন, কেনও করেছেন, তার জবাব স্বাভাবিক কারণেই দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়৷ তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার তিনি দার্জিলিঙে এসে পৌঁছন সন্ধ্যায়৷ বৃষ্টির মধ্যে রিচমন্ড হিলসে পৌঁছে প্রশাসন ও পুলিশকর্তাদের সঙ্গে সামান্য আলাপচারিতার পরই বৈঠকে বসেন মোর্চা নেতাদের সঙ্গে৷ মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং ছাড়াও ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি এবং প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রী৷

সেই বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী রিচমন্ড হিলসের ভিতরে সাংবাদিকদের ডেকে বলেন, 'পুরোনো বিবাদ মিটে গিয়েছে৷ এবার আমরা দার্জিলিঙের উন্নয়নে নতুন করে একসঙ্গে এগোতে চাই৷' ২৯ জানুয়ারি তাঁর সভায় দার্জিলিঙের ম্যালে মোর্চা সমর্থকদের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরও এমন সহাবস্থানের কারণ জানতে চাইলে মমতা সেদিনের ঘটনাকে চক্রান্ত বলে উড়িয়ে দেন৷

এদিনের বৈঠকে মোর্চার পক্ষ থেকে একগুচ্ছ দাবি পেশ করা হয়৷ অধিকাংশ দাবিই মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন বলে মোর্চার দাবি৷ মামলা প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আইনি সমস্যা খতিয়ে দেখার জন্য তিনি সময় চেয়েছেন বলেও মোর্চা নেতৃত্ব জানিয়েছেন৷ এমন একতরফা দরকষাকষিতে মোর্চা নেতাদের খুশি ধরা পড়েছে বিমল গুরুঙের গলায়৷ তিনি বলেন, 'অনেক বিষয় নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে৷ ওঁর সঙ্গে কথা বলতে ভালোই লেগেছে৷ আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারব বলে মনে হচ্ছে৷' দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি সাংবাদিকদের দাবিসনদ দেখিয়ে বলেন, 'আশা করছি, সমস্ত প্রতিশ্রীতি পূরণ হবে৷'

গত ২৯ জানুয়ারি দার্জিলিঙের ম্যালে মোর্চা সমর্থকদের গোর্খাল্যান্ডের স্বপক্ষে স্লোগান ও তার প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রীর নিজেকে 'রাফ অ্যান্ড টাফ' হিসাবে তুলে ধরে হুঁশিয়ারির পর দুই তরফের সম্পর্কে অবনতি হয়৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তৃণমূল নেতারা পাহাড়ে মোর্চার সংগঠন ভাঙতে সক্রিয় হন৷ মোর্চাও পাল্টা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে কালো পতাকা দেখায়, কালিম্পঙে তৃণমূল নেতাদের উপর হামলা করে৷

আচমকা সেই বিরোধের পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় জিটিএ-র প্রধান সচিব পদে রাজ্য সরকার দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনকে সরাতে রাজি হওয়ায়৷ মোর্চা নেতারাও কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পাহাড়ে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে আসেন৷ সেই প্রস্তাব গ্রহণও করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বুধবার দার্জিলিং গোর্খা রঙ্গমঞ্চে জিটিএ-র সভা হবে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে৷ মোর্চার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ২৪ মে ওই বৈঠক হবে দার্জিলিঙে৷

কিন্ত্ত মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ঘিরে সেই উন্মাদনা আর চোখে পড়েনি মঙ্গলবার৷ তাঁর দলের পক্ষ থেকে দার্জিলিং মোড়, সুকনা, শিমুলবাড়িতে খাদা পরানো হয়েছে৷ কার্শিয়াং, সোনাদা কিংবা ঘুমে মোর্চার পক্ষ থেকেও খাদা পরানো হয়েছে৷ কিছু তোরণও ছিল তাঁকে স্বাগত জানাতে৷ ছিল না শুধু আগের মতো পাহাড়ের পথে পথে মানুষের ঢল৷ এক জিএনএলএফ নেতা বলেন, 'পাহাড়ের মানুষ মোর্চার কাছ থেকে সরে যাচ্ছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী সেটা বুঝতেই পারছেন না৷ তিনি যেমন রাজনীতি করছেন, মোর্চাও তেমনই করছে৷'

কলকাতা: গুড়াপকাণ্ডের পর ধনেখালিকাণ্ড৷ পুলিশ লক আপে কাজি নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ সোমবার রায়ের শুরুতেই আদালত জানিয়ে দিল, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে৷ 
মামলার শুনানি পর্বে একাধিকবার সিআইডি তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত৷ কখনও আদালতের প্রশ্নের সদুত্তর দিয়ে উঠতে পারেনি রাজ্য৷ কখনও উত্তর দিলেও, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি আদালত৷ এমনকী সিআইডি তদন্তে চূড়ান্ত অনাস্থা প্রকাশ করে রাজ্যকে তুলোধনাও করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ 
সিআইডি তদন্তের ক্ষেত্রে যে দিকগুলি নিয়ে হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হতে পারেনি, এদিনের রায়ে তাও উল্লেখ করা হয়েছে৷ সিবিআই-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হাইকোর্ট যে প্রশ্নগুলি তুলেছে, তার উত্তর খোঁজার মধ্যে দিয়ে যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্তের দিকে এগোতে৷


আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ধনেখালিকাণ্ডের তদন্তভার গ্রহণ করবে সিবিআই৷ সিআইডি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মামলার কেস ডায়েরি-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকের হাতে তুলে দিতে৷ 
মহাকরণসূত্রে খবর, সম্ভবত হাইকোর্টের রায় মেনে নিতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে না তারা৷ সরকারের একটি অংশ মেনে নিচ্ছে, ধনেখালিকাণ্ডে সিআইডি তদন্তে গাফিলতি ছিল৷  তবে, ধনেখালি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে না গেলেও, ডিভিশন বেঞ্চেও যদি পঞ্চায়েত মামলার রায় সরকারের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে কিন্তু সরকার অবশ্যই সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলে মহাকরণ সূত্রে খবর৷

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36633-2013-05-13-05-51-14


কলকাতা: বৃহস্পতিবার মুখ খুলেছিলেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন৷ শুক্রবার আইনজীবী মারফত্‍ বিবৃতি দিলেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়৷ বিবৃতি দিয়ে তিনি সারদাকাণ্ডে কার্যত নিজের দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল৷ 
নিজের সই করা বিবৃতিতে দেবযানীর দাবি, ২০০৮-এর জানুয়ারিতে গুয়াহাটিতে সারদা ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ পদে যোগ দেন তিনি৷ বেতন পেতেন ১৫ হাজার টাকা৷ কিছুদিন পরই কলকাতায় ফিরে আসেন৷ সারদার শেক্সপিয়র সরণির অফিসে যোগ দেন৷ এরপর ২০০৮-এর জুলাইতে সারদা রিয়েলটির ডিরেক্টর করে দেওয়া হয় দেবযানীকে৷ দেবযানীর বক্তব্য, সুদীপ্ত সেনের সব নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন তিনি৷ দেবযানীর দাবি, সংস্থার প্রশাসনিক কাজ সামলাতেন তিনি৷ আর্থিক লেনদেনে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না৷ বিভিন্ন ট্যুরে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন সুদীপ্ত৷ তবে সুদীপ্তর সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল না৷ তাঁকে নিয়ে কুত্সা রটানো হচ্ছে৷ 
বিবৃতিতে দেবযানীর দাবি, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সারদায় কিছু গোলমাল আছে৷ সেজন্য সুদীপ্তর বিরুদ্ধে সরবও হন তিনি৷ দেবযানীর অভিযোগ, 
সারদার কর্ণধারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় ৪০টির মধ্যে ৩৫টি সংস্থার ডিরেক্টর পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়৷ শেষে সারদার মিডিয়া গোষ্ঠীর ৫টি সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন তিনি৷ তাঁর বেতনও বন্ধ হয়ে যায়৷ তবুও সারদা সাম্রাজ্যের পতনের সময় সুদীপ্তকে বিপদে ফেলে যেতে পারেননি তিনি৷ 
তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানান, ঢাকুরিয়ায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় দুটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে দেবযানীর৷ একটি অ্যাকাউন্টে ৮৫ হাজার ও আরেকটি অ্যাকাউন্টে ২লক্ষ ৭৬হাজার টাকা রয়েছে৷ এদিন, ব্যাঙ্কের নথিও পেশ করা হয়৷
এদিনও বিবৃতিতে দেবযানী আরও দাবি করেন, দিল্লিতে বোর্ড অফ ডিরেক্টরসের মিটিংয়ের কথা বলে তাঁকে ডেকে পাঠান সুদীপ্ত৷ চণ্ডীগড় থেকে দুবার ফিরে আসার চেষ্টাও করেন দেবযানী৷ যদিও সুদীপ্ত তাঁকে বাধা দেন৷ দাবি দেবযানীর৷ 

কিন্তু বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন এক অভিযুক্ত কী করে আইনজীবী মারফত্‍ নিজের সই করা বিবৃতি পেশ করতে পারেন৷ এবিষয়ে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান জানান, বিষয়টি নিয়ে দেবযানীর আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/36567-2013-05-10-16-40-04

সারদার মিডল্যান্ড পার্ক অফিসের পিছনে একটি গ্যারাজ থেকে পুলিশের স্টিকার লাগানো ছটি বাইক উদ্ধার হয়েছে৷ বাইকগুলিতে লালবাতি ও হুটার লাগানো রয়েছে৷ বাইকগুলি উদ্ধার করে সল্টলেকের ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় আনা হয়৷ পুলিশের অনুমান,বাইকগুলি সারদার কর্মীরা ব্যবহার করতেন৷ বাইকে করে রাতে সারদার বিভিন্ন অফিস থেকে টাকা ও নথি মিডল্যান্ড পার্কে নিয়ে আসা হত৷ পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই বাইকগুলিকে কলকাতা পুলিশের স্টিকার ও হুটার লাগানো রয়েছে৷


বিষয়টি কলকাতা পুলিশ জানত কিনা তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা৷ পুলিশ সূত্রে খবর, সারদার বিভিন্ন অফিসে পুলিশের স্টিকার ও হুটার লাগানো আরও বেশ কয়েকটি বাইকের খোঁজ মিলেছে৷  

http://www.abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/36584-2013-05-11-09-35-10

সন্ধ্যারানির গাড়ির বায়নায় মাথায় হাত মহাকরণ কর্তাদের

সন্ধ্যারানির গাড়ির বায়নায় মাথায় হাত মহাকরণ কর্তাদের
চিত্রদীপ চক্রবর্তী

পরিষদীয় সচিব বলছেন, 'লালবাতি লাগানো স্করপিও গাড়ি চাই!'

মহাকরণের কর্তারা বলছেন, 'আব্দার তো কম নয়!'

দেমাকি স্করপিও গাড়ির দাবি যিনি জোর গলায় করছেন, তিনি পুরুলিয়ার মানবাজার এলাকার বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু৷ তিনি রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন দপ্তরের আধিকারিকও বটে৷ তাঁর দপ্তরের পূর্ণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস৷ উপেনবাবুর জন্য স্করপিও বরাদ্দ৷ সেই দেখে সন্ধ্যারানি দেবীর হুকুম, তাঁকেও দিতে হবে ওই গাড়ি৷ অন্য গাড়ি নৈব নৈব চ৷

সন্ধ্যারানি দেবীর 'ভালো' গাড়ি নেই, এমনটা কিন্ত্ত নয়৷ বর্তমানে তিনি চড়েন একটি বাতানুকূল শেভ্রোলে ট্যাভেরায়৷ কিন্ত্ত সেই গাড়িও নাপসন্দ পুরুলিয়ার রাঢ় অঞ্চলের বিধায়কের৷ তিনি নিজেই বলছেন, 'আমার স্করপিওই লাগবে৷ দীর্ঘ দিন ধরে বলে আসছি৷ এখনও পেলাম না৷ এ বার মনে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাতে হবে৷'

এক পরিষদীয় সচিবের এহেন আবদারে চরম সমস্যায় পড়েছেন তাঁর দপ্তরের আধিকারিকরা৷ আপাতত সন্ধ্যারানির দাবি মেটাতে কালঘাম ছুটছে তাঁদের৷ চড়ান্ত বিরক্ত হলেও তাঁদের হাতে বিশেষ উপায় নেই৷ মন্ত্রীদের বিধানসভার কাজকর্ম দেখভাল করার জন্য রাখা পরিষদীয় সচিবের মুখের উপর কথা বলে, এত সাহস কার!

অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গত ৮ মে যে বিভাগীয় নোট পাঠিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে ৩০ এপ্রিল থেকে ওই পরিষদীয় সচিব সরকারি ব্যবহারের জন্য একটি বাতানুকূল গাড়ি পাবেন, এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ সেই নির্দেশের পর সচিবের জন্য একটি ইন্ডিগো বরাদ্দ করা হয়৷ কিন্ত্ত কিছু দিনের মধ্যেই আপত্তি-- স্করপিও চাই! এ বার ইন্ডিগোর বদলে পাঠানো হয় ট্যাভেরা৷ কিন্ত্ত পরিষদীয় সচিবের দপ্তর থেকে ফের দাবি তোলা হয় স্করপিও-র জন্য৷ ১৭ এপ্রিল পরিষদীয় সচিব নিজের প্যাডে চিঠি লিখে তাঁর দাবির কথা জানিয়েছেন!

দপ্তর থেকে কিন্ত্ত নোট দিয়ে জানানো হয়, পরিবহণ দপ্তরের গাড়ি সংক্রান্ত যে ভাড়ার হার রয়েছে, তাতে স্করপিও দেওয়া সম্ভব নয়৷ বড়জোর বাইরে থেকে একটি টয়োটা ইনোভা ভাড়া করা যেতে পারে৷

এই কথা জানাতেই দেদার ক্ষুব্ধ হন সন্ধ্যারানি৷ তিনি সরাসরি জানিয়ে দেন, পুরুলিয়া থেকে যাতায়াত করতে হলে স্করপিও গাড়িই দিতে হবে৷ ফলে দপ্তরের অফিসারদের মাথায় হাত পড়েছে৷ সন্ধ্যারানির জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত গাড়ির ব্যবস্থা করতে গেলে দৈনিক ৪৬৫ টাকা এবং তেলের খরচ দেওয়ার কথা৷ কিন্ত্ত এই টাকায় স্করপিও ভাড়া সম্ভব নয়৷
সন্ধ্যারানি অবশ্য তাঁর অবস্থান থেকে সরছেন না৷ তিনি সাফ জানাচ্ছেন, 'কলকাতা থেকে সপ্তাহে তিন দিন আমি মানবাজার আসি৷ নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকে৷ ফলে স্করপিও গাড়ি চেয়েছি৷ আর কলকাতায় থাকলেও ওরা ২৪ ঘণ্টার জন্য আমাকে গাড়ি দেয় না৷ এমএলএ হস্টেলে গেলে গাড়ি ফেরত নিয়ে নেয়৷ এ বার দেখছি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে হবে৷'

ছোট সংস্থার হাতে প্রতারিতদেরও ভরসা এখন শ্যামল সেন কমিশন

এই সময়: 'ত্রিভুবন অ্যাগ্রো প্রজেক্ট' নামে যে কোনও আর্থিক সংস্থা ভূ-ভারতে রয়েছে, তা ২০১০ -এর জুন পর্যন্ত জানতেন না বিশ্বনাথ সেন৷ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বিঘাখানেক জমি বিক্রি করে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা এসেছিল উত্তর চব্বিশ পরগনার স্বরূপনগরের বাংলানি গ্রামের বিশ্বনাথবাবুর হাতে৷ অকৃতদার মাঝবয়সি মানুষটি ভাবছিলেন, বাস্ত্তজমি বিক্রি করে পাওয়া টাকা কোথায় রাখবেন? এমন সময়েই বিশ্বনাথবাবুর বাড়িতে হাজির হন তাঁর এক জেঠতুতো দাদা৷
বিশ্বনাথবাবুর কথায়, 'মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পে ৫০ হাজার টাকা রাখলে প্রতি মাসে ৬২৫ টাকা সুদ মিলবে বলে জানায় দাদা৷ বলে, ব্যাঙ্ক কিংবা ডাকঘরে সুদের হার প্রতিদিনই কমছে৷ তার চেয়ে ত্রিভুবন অ্যাগ্রো প্রজেক্টে টাকা রাখলে ভালো সুদ পাবি৷' এক দিকে লোভনীয় সুদ, অন্য দিকে দাদার কথা৷ দোলাচলে পড়ে কোনও দিন নাম না শোনা সংস্থাতেই ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে বসেন বিশ্বনাথবাবু৷ প্রথম কয়েক মাস প্রতিশ্রুতি মতোই সুদ পাচ্ছেন দেখে দু-দফায় আরও ৮০ হাজার টাকা মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন তিনি৷ দাদার কাছ থেকেই জানতে পারেন, কলকাতার ক্যানেল স্ট্রিটে বেশ বড়সড় দপ্তর রয়েছে ত্রিভুবনের৷ সব ঠিকঠাকই চলছিল৷ গত জানুয়ারি মাসে প্রথম পলিসির মেয়াদ সম্পূর্ণ হওয়ার পর টাকা তুলতে সংস্থার বসিরহাটের দন্তরে গিয়েই প্রথম ধাক্কা খান বিশ্বনাথ সেন৷ তাঁকে বলা হয়, 'এখন টাকা দেওয়া সম্ভব নয়৷ হেডঅফিস থেকে টাকা আসেনি৷ পরে যোগাযোগ করুন৷'কিছু দিন পর বিশ্বনাথবাবুর অন্য দু'টি পলিসির সুদও বন্ধ হয়ে যায়৷ ফের বসিরহাটে গিয়ে দেখেন, দপ্তরটাই বন্ধ৷ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কলকাতার যে ঠিকানা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, সেখানেও ওই সংস্থার দপ্তর আর নেই৷

মোট এক লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বিশ্বনাথবাবু জমা রেখেছিলেন বাড়ি তৈরি আর বাবা-মায়ের চিকিত্সার কথা ভেবে৷ টাকা উদ্ধারের আশায় মঙ্গলবার নিউটাউনের শ্যামল সেন কমিশনের অভিযোগগ্রহণ কেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন৷ সারদার কেলেঙ্কারি এতই বিপুল যে ত্রিভুবনের মতো বহু ছোট আর্থিক সংস্থার অনিয়মের বিষয়টি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছে৷ যারা সারদার মতোই আকাশছোঁয়া সুদের লোভ দেখিয়ে আমজনতার কাছ থেকে বিপুল অর্থ-সংগ্রহ করে হয় সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ করেছে৷ নয়তো বেপাত্তা হয়েছে সংস্থার কর্তারা৷ কমিশন গঠিত হওয়ায় এমন বহু সংস্থার দ্বারা প্রতারিত অনেকেও এখন প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন অভিযোগ জানাতে৷ এ দিনই যেমন নিউব্যারাকপুর থেকে এসেছিলেন দিলীপ দে, সবিতা বিশ্বাস, শিখা দে, সোমা মহলানবীশেরা৷ তাঁদের অভিযোগ 'ঐকতান' নামে নিউব্যারাকপুরেরই একটি সংস্থার বিরুদ্ধে৷ সারদার মতো সংস্থা যেখানে গত পাঁচ-সাত বছর ধরে বাজার থেকে অর্থ-সংগ্রহ করছে, সেখানে সংস্থাটি কারবার চালাচ্ছিল প্রায় ২০ -২২ বছর ধরে৷ বাজার থেকে তারা কমপক্ষে একশো কোটি টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ৷

৫০ হাজার টাকা রাখলে প্রতি তিন মাস অন্তর আড়াই হাজার টাকা করে সুদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি দিলীপ দে -র৷ এই লোভনীয় সুদের আকর্ষণেই সবিতা বিশ্বাস তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো ৬ লক্ষ টাকা দু-দফায় বিনিয়োগ করেছিলেন ঐকতানেই৷ তাঁর কথায়, 'স্বামী অবসর নেওয়ার পর প্রাপ্য সমস্ত টাকাই এখানে রেখেছিলাম৷' পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর মেয়ের বিয়ের জন্য ২০১২-র জানুয়ারি মাসে টাকা তুলতে যান৷ ঐকতানের কর্তারা তখন বলেন, টাকা এখন পাওয়া যাবে না৷ বরং মেয়ের বিয়েটাই বাতিল করুন৷ সবিতাদেবীর কথায়, 'এই কথা শুনে আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম৷ তার পর ধারদেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছি৷' স্বামী মারা গিয়েছেন ইতিমধ্যেই৷ টাকা ফেরতের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সবিতাদেবী৷ শ্যামল সেন কমিশনই এখন তাঁদের শেষ ভরসা৷

পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে, রায় ডিভিশন বেঞ্চের
পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে, রায় ডিভিশন বেঞ্চের
এই সময়: পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খেল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বেশ খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে রাজ্য সরকার। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, জুন মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন হবে তিন দফায়। রাজ্য সরকার কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে। তার পর জুলাইয়ের ১৫ তারিখের মধ্যে ফল ঘোষণা করতে হবে। সেই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে পর্যবেক্ষকদের তালিকা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তালিকা প্রস্তুত। অনায়াসেই তা দেওয়া সম্ভব হবে।

এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গেও রাজ্য সরকার স্বস্তি পেয়েছে। অতি স্পর্শকাতর ও স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দুজন করে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করার কথা বলেছে আদালত। আদালত বলেছে, অতি স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দুজন সশস্ত্র পুলিশ ও দুজন কনস্টেবল রাখতে হবে। তার চেয়ে কম স্পর্শকাতর বুথে রাখতে হবে দুজন সশস্ত্র পুলিশ ও একজন কনস্টেবল। অল্প স্পর্শকাতর বুথে দুজন সশস্ত্র পুলিশ ও স্পর্শকাতর নয়, এমন বুথে একজন সশস্ত্র পুলিশ রাখতে হবে। রাজ্যের এবং অন্যান্য রাজ্যের পুলিশ দিয়েই নির্বাচন হবে। তার পর প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে পারে। কমিশনের আইনজীবী মেনে নিয়েছেন, ২০০৮ সালে যে প্রক্রিয়ায় ভোট হয়েছিল, এবারেও তা-ই হবে। তিনি বলেছেন, কমিশন চায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। সেটা হলেই তাঁরা সন্তুষ্ট। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও নিরপেক্ষ ভাবে ভোট
হতে পারে, সে কথা স্পষ্টই মেনে নিয়েছেন তিনি। 

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। এই রায়ে আমরা খুশি। নির্বাচন নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র চলছিল। এই রায়ে সে সব ভেস্তে গিয়েছে। আমরা প্রস্তুত। কমিশন যদি সুপ্রিম কোর্টে না যায়, তা হলে আমরা ভোট করতে তৈরি। পর্যবেক্ষকদের তালিকা দিতে বলা হয়েছে তিন দিনের মধ্যেই। সেটা আমরা দিয়ে দেব। আমরা বলেছিলাম দু দফায় ভোট করতে। আদালত বলেছে তিন দফায় ভোট করতে। আমাদের সেটা মেনে নিতে আপত্তি নেই।' যদিও কমিশন সূত্রে খবর, তারা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে না। ডিভিশন বেঞ্চের রায় মেনে নেওয়া হবে।

হাইকোর্টের সূত্রেও সংশয় সমঝোতা নিয়ে
রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন, দু'পক্ষের সম্মতির কথা বলে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের এই রায়ে রাজ্য সরকার খুশি। কমিশন গোড়ায় সন্তুষ্ট বলে জানালেও রাতে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে। হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে বলেও কমিশন সূত্রে খবর।
প্রধান বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন জানিয়ে দিল, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্যে তিন দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে হবে। তিন দিনের মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেই ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করবে রাজ্য সরকার।


কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে যে বিরোধ ছিল, তা মেটাতে এ দিন নতুন সূত্রও দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যে কতগুলি অতি-স্পর্শকাতর, স্পর্শকাতর এবং কম স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে, সোমবারেই তা নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বলেছিল আদালত। এ দিন সেই তালিকা পাওয়ার পরে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, কোন বুথে কত সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করতে হবে। জানিয়ে দেওয়া হল, ভোট কেন্দ্রের বাইরেও পর্যাপ্ত বাহিনী লাগবে। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন, কমিশন যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে (আটশো কোম্পানি), তার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে। কিন্তু এ দিনের রায়ে ডিভিশন বেঞ্চ বাহিনী নিয়ে কার্যত রাজ্যের অবস্থানকেই অগ্রাধিকার দিল। নির্দেশে জানানো হল, ২০০৮ সালে যে ভাবে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছিল, সেই পদ্ধতি এ বারও মানা হবে। বাহিনী কম পড়লে প্রয়োজনে কেন্দ্র বা ভিন রাজ্য থেকে তা আনতে পারবে রাজ্য। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা রইল না। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, "তিন দফায় ভোট হওয়ার ফলে বাহিনীর চাহিদা কমবে। তবে কিছু বাহিনী পাশের রাজ্য থেকে আনতে হবে। সব দিক খতিয়ে দেখে তার পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে।"


বস্তুত, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে প্রথম থেকেই দু'পক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিল। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ যে হিসেব করে দেয়, তাতে এ নিয়ে আর কোনও সমস্যা রইল না বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যে বুথের সংখ্যা ৫৭ হাজার। তাকে চার ভাগে ভাগ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ অতি স্পর্শকাতর, স্পর্শকাতর, কম স্পর্শকাতর এবং সাধারণ। দেখা যাচ্ছে, ৫৮ হাজারের মধ্যে ৩২ হাজার বুথকেই কমিশন অতি-স্পর্শকাতর বলেছে। ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনের বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে সেই সব বুথের জন্য দু'জন করে সশস্ত্র ও সাধারণ কনস্টেবলের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতের নির্দেশ জানার পরে আইনজীবী সমরাদিত্য পালের বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। সেখানে তিনি স্পষ্টতই বুঝিয়ে দেন, রায়ে অসন্তুষ্ট কমিশন। হাইকোর্টের নির্দেশনামায় দু'পক্ষের সম্মতির কথাও বলা আছে। কিন্তু প্রথমে মীরাদেবী, পরে সমরাদিত্যবাবু দু'জনেই জানিয়ে দেন, সম্মতি দেওয়া হয়নি। তবে নির্দেশনামায় সম্মতির কথা বলা থাকায় এর বিরুদ্ধে তাঁরা যে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দেন সমরাদিত্যবাবু। তিনি অবশ্য একই সঙ্গে বলেছেন, "নির্বাচনী পদ্ধতি যেমন চলছে চলুক। আমরা কয়েকটি আইনগত বিষয় নিয়ে পরে আদালতের ব্যাখ্যা চাইব।" কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, ভোটের আগে মানুষের মন থেকে ভয় দূর করতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। এই রায় যাতে পরে দৃষ্টান্ত না হয়, সে জন্য তাই ভোট প্রক্রিয়া চলার পাশাপাশি তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
রায় শোনার পরে প্রাথমিক ভাবে কিন্তু কমিশন জানিয়েছিল, তারা সন্তুষ্ট। আদালতের বাইরে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এ দিন কমিশনের আইনজীবী লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানি জানান, ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দিয়েছে তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট। সরকারি আইনজীবী (জিপি) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "অনেকে বলছিলেন রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন চায় না। কিন্তু প্রমাণ হয়ে গেল রাজ্য নির্বাচন করতে চায়। এই রায়ে আমরা খুশি।"
রাজ্য সরকার যে হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নেবে, তা জানিয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঠিক সময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে বরাবরই রাজ্য সরকার উৎসাহী। দার্জিলিং সফরের মধ্যেই তাঁর হাতে আসে হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি। সন্ধ্যায় তিনি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা নিয়ে বৈঠকে বসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে। প্রাথমিক ভাবে দিন ঠিক হলে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে রাজ্য। অন্য দিকে, আদালতের নির্দেশ নিয়ে অসন্তুষ্ট বোঝানো সত্ত্বেও এ দিন স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে এক দফা কথা বলেন মীরাদেবীও। 
কিন্তু হাইকোর্টের রায় নিয়ে অন্য প্রশ্নও উঠেছে। সদ্য রবিবারেই সুব্রতবাবু জানিয়েছিলেন, জুন থেকে অক্টোবর বর্ষার জন্য রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করা সম্ভব নয়। তাই পুজোর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচন করাতে চায় না রাজ্য। এখন ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে হলে বর্ষার মধ্যেই ভোট হবে। সে নিয়ে রাজ্য কী বলছে? বৃষ্টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বর্ষার জন্য ভোটে যে সমস্যা হবে, তা জানান সুব্রতবাবুও। তবে শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন যে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ার আগেই হচ্ছে, তাতে খুশি সুব্রতবাবু। 
পঞ্চায়েত ভোট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করানোর ব্যাপারে ডিভিশন বেঞ্চ যে সদর্থক মনোভাব নিচ্ছে, সেটা সোমবার তাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ওই দিন সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানায় রাজ্য। তা খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি দু'পক্ষকেই বলেন, "যথাসময়ে ভোট করার জন্য আপনারা হাইকোর্টকে সহায়তা করুন।" জানিয়ে দেওয়া হয়, মঙ্গলবার মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চায়েত মামলার নিষ্পত্তি করতে চায়। এ দিন তা-ই হয়েছে। দু'পক্ষের টানাপোড়েনের মধ্যেও মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই প্রধান বিচারপতি তাঁর নির্দেশ জানান। এ দিন শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, তিনি চান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট হোক। তার পরে ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দেয়, তা দু'পক্ষের সম্মতি নিয়েই দেওয়া। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিভিশন বেঞ্চ দু'পক্ষের মত জানতে চায়। 
ঠিক হয়, তিন দফায় ভোট করতে কত নিরাপত্তা কর্মী লাগবে, তা ঠিক করবে কমিশন। প্রশ্নটা কেন্দ্রীয় বা রাজ্য বাহিনীর নয়। কমিশনের চাহিদা মতো বাহিনী রাজ্য জোগাবে। যদি রাজ্যের বাহিনীতে না কুলোয়, তা হলে অন্য রাজ্য বা কেন্দ্র থেকে বাহিনী এনে সেই চাহিদা মেটানো হবে। দেখা যাচ্ছে, সাংবিধানিক পরিকাঠামোর মধ্যে থেকে বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোনোর যে পরামর্শ সোমবার আদালত দুই বিবদমান পক্ষকে দিয়েছিল, এ দিন তারা নিজেরাই সেই পথে হেঁটেছে। তাতেও মঙ্গলবার দিনের শেষে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েই গেল।


পুরনো খবর: 
http://www.anandabazar.com/15raj1.html

নির্দেশে খুশি রাজ্য, সন্তুষ্ট নয় কমিশন
প্রকাশ্যে খুশির কথা জানাচ্ছে এক পক্ষ। উষ্মা চাপা থাকছে না অন্য পক্ষের। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পরে সরকার ও নির্বাচন কমিশন দু'শিবিরে দু'রকম হাওয়া। 
দার্জিলিঙের পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেন, "হাইকোর্টের রায়ে আমরা খুশি।" এক ধাপ এগিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় মিষ্টিমুখ করেন। তাঁর দফতরের কর্মীদের একাংশ বিকেলে মন্ত্রীকে মিষ্টি খাওয়ান। 
ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের প্রতিলিপি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পৌঁছনোর আগেই বাগডোগরা বিমানবন্দরে মমতা বলেন, "আমরা ঠিক সময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের চেষ্টা করছিলাম। রাজ্যের সদিচ্ছার অভাব আগেও ছিল না, এখনও নেই। উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নির্বাচন প্রক্রিয়া সেরে ফেলব আমরা।" সরকারি সূত্রে খবর, এ দিন সন্ধ্যায় দার্জিলিঙের রিচমন্ড হিলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি পৌঁছলে তিনি সফরসঙ্গী মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে নির্বাচনের সম্ভাব্য দিনক্ষণ নিয়েও কথা হয়। যাতে চলতি সপ্তাহেই ভোটের দিন ঘোষণা করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়। এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, সরকার জুনের মধ্যেই নির্বাচন সারতে চাইছে, প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। 
অন্য দিকে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে হাইকোর্টের নির্দেশে সন্তুষ্ট হতে পারেনি, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা স্পষ্ট হতে থাকে। গোড়ায় ওই নির্দেশ সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে। তিনি বলেন, "নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে পেয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার পরেই জানাতে পারব, কমিশন সন্তুষ্ট কি না।" এর পরেই কমিশনের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল জানান, উভয় পক্ষের সম্মতিতে আদালতের এই নির্দেশ এই বক্তব্যের সঙ্গে তিনি সহমত নন। কারণ, কেউ তাঁর সম্মতি চাননি। তিনিও তা দেননি।
সমরাদিত্যবাবুর মতো এক জন প্রবীণ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী যা বলেছেন, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। উনি বলছেন, প্রধান বিচারপতির কথা শুনতে পাননি। অথচ, নির্দেশের দু'টি অংশ নিয়ে তিনি আপত্তি তোলায় সেগুলি বদলানো হয়। 
অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় (সরকারি কৌঁসুলি)
প্রধান বিচারপতির সামনে মাইক্রোফোন থাকা সত্ত্বেও তিনি মাঝে মাঝেই মুখ সরিয়ে নেন। তখন তিনি কী বলছেন, শোনা যায় না। প্রধান বিচারপতি কখন উভয়ের সম্মতির কথা বলেছেন, তা আমি শুনতে পাইনি।
সমরাদিত্য পাল (কমিশনের আইনজীবী)
রাতে কমিশনের দফতর ছেড়ে যাওয়ার সময় মীরা পাণ্ডেও বলেন, "আমরা আমাদের কৌঁসুলিকে সম্মতি জানানোর জন্য বলিনি।" তা হলে কি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে কমিশন? মীরার জবাব, "আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।" কমিশনের এই প্রতিক্রিয়ার জেরে হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও পঞ্চায়েত ভোট হবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। যদিও ভোট নিয়ে এ দিনই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে তাঁর এক প্রস্ত কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মীরা। ভোট হবে কি না এই প্রশ্নে তাঁর জবাব, "আগে রাজ্য সরকার আমাদের কাছে আসুক।" 
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব তাপস রায়ও আগে জানিয়েছিলেন যে, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ মেনে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভোট প্রক্রিয়া শেষ করার প্রস্তুতি কমিশন নেবে। তিনি বলেন, "আদালতের নির্দেশ মেনে তিন দফার ভোটে কোথায়, কত সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজন, তা ঠিক করতে হবে। স্পর্শকাতর, অতি-স্পর্শকাতর ও সাধারণ বুথে কোথায় কত বাহিনী লাগবে, আদালতই তা বলে দিয়েছে। এখন হিসেব করতে হবে। কত ঘাটতি হবে, তা জানানো হবে রাজ্যকে। তারাই ব্যবস্থা করবে।" তখনও সম্মতি নিয়ে জটিলতা সামনে আসেনি। 
বিচারপতিরা তাঁদের রায়ে সম্মতির কথা বললেও সমস্যা হল কোথায়? 
সমরাদিত্যবাবুর বক্তব্য, "প্রধান বিচারপতির সামনে মাইক্রোফোন থাকা সত্ত্বেও তিনি মাঝে মাঝেই মুখ সরিয়ে নেন। তখন তিনি কী বলছেন, শোনা যায় না। প্রধান বিচারপতি কখন উভয়ের সম্মতির কথা বলেছেন, তা আমি শুনতে পাইনি।" সম্মতির কথাটি নির্দেশের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সমরাদিত্যবাবুর বক্তব্য, এই মামলায় বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার যে রায় দেন, তা যথেষ্ট বাস্তবসম্মত ছিল বলে তিনি মনে করেন। 
সমরাদিত্যবাবুর এই বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে সরকারি কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সমরাদিত্যবাবুর মতো এক জন প্রবীণ ও অভিজ্ঞ আইনজীবী যা বলেছেন, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। উনি বলছেন, প্রধান বিচারপতির কথা শুনতে পাননি। অথচ, নির্দেশের দু'টি অংশ নিয়ে তিনি আপত্তি তোলায় সেগুলি বদলানো হয়।" 
কমিশনের আরও অসন্তোষ, তাদের মূল আবেদনের ফয়সালা না-হওয়ায়। কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইনের ৪২ ধারা (যাতে বলা হয়েছে কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে ভোটের দিন ঘোষণা করবে রাজ্য) অসাংবিধানিক, এই দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। বিচারপতি সমাদ্দারের সিঙ্গল বেঞ্চ এ নিয়ে সরাসরি কিছু না-বললেও রায় দিয়েছিল, ভোটের দিন ঘোষণার এক্তিয়ার কমিশনেরই। ফলে মনে করা হচ্ছিল, কমিশনের দাবি মেনে নিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ওই রায় ন্যায্য না অন্যায্য, তার নিষ্পত্তি করেনি। ৪২ ধারার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও তারা নীরব। ফলে মামলার মূল প্রশ্নটা অমীমাংসিতই রইল বলে কমিশনের মত। এই ধোঁয়াশা কাটাতে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন, নাকি ফের বিচারপতি সমাদ্দারের বেঞ্চে আর্জি জানানো হবে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কমিশন-কর্তারা। হাইকোর্ট সূত্রে বলা হচ্ছে, এ নিয়ে কমিশনকে সিঙ্গল বেঞ্চেই সওয়াল করতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
http://www.anandabazar.com/15raj2.html

No comments: